এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর বিষয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা এর চতুর্থ অধ্যায়, কৈশোরের আনন্দযাত্রা সম্পর্কে।
আমার যত্নে আমার কাজ
উত্তর:
‘আমার যত্নে আমার কাজ’ |
i. নিজেকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করব। ii. নিয়মিত বা সময়মতো খাবার খাব এবং সুষম খাবার খেতে চেষ্টা করব। iii. অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড পরিহার করব। iv. প্রতিদিন শরীরচর্চা করব এবং খেলাধুলায় অংশ নেব। v. গ্রীষ্মকালে দীর্ঘসময় রোদে কাজ করা এবং খেলাধুলা থেকে বিরত থাকব। vi. মনকে প্রফুল্ল রাখতে পরিবার, প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সাথে মিশব এবং হাসিমুখে কথা বলব। |
আমার কৈশোরের অভিজ্ঞতা
উত্তর:
আমার কৈশোরের অভিজ্ঞতা | |
আনন্দময় অভিজ্ঞতা | বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আমি একবার দৌড় খেলা, হাই জাম্প ও গোলক নিক্ষেপ খেলায় যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও প্রথম হই। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমার নাম পরপর তিনবার ঘোষণা করে পুরস্কার নিতে ডাকলে সকলেই অবাক হয়। সবাইকে অবাক করে তিনটি পুরস্কার গ্রহণ করে আমি অনেক আনন্দ পেয়েছি। |
উপজেলা পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে “গণতন্ত্র নয়, উন্নয়নই জাতির কাম্য” বিষয়ের পক্ষে বিতর্ক করি, যেখানে আমি দলনেতা ছিলাম। সেখানে আমাদের দল জয়ী হয়। বিদ্যালয় থেকে উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করে পুরস্কার নিয়ে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত হই। | |
চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা | বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার বন্ধু সাইকেল নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে খাদে পড়ে যায় এবং তার হাতের হাড় ভেঙে যায়। আশেপাশে আমি ছাড়া আর অন্য কেউ ছিল না। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আমি দুইটি কাঠি দিয়ে তার ভাঙা স্থানের দুই দিকে বেঁধে দেই। এরপর বাসায় খবর পাঠাই এবং স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই, যা অনেক চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা ছিল। |
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের সাথে আমাদের ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। আমি যখন ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছিলাম তখন জেতার জন্য শেষ তিন বলে এগারো রান দরকার ছিল। আমি প্রথম বলে ছয়, দ্বিতীয় বলে দুই ও তৃতীয় বলে চার রান নিয়ে দলকে জয়ী করি। |
আমার ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ
উত্তর:
শারীরিক ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ | শারীরিক গঠনের পরিবর্তন হওয়া। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা। অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগা। শারীরিক শান্তির শিকার হওয়া। বীর্যপাত অথবা মাসিক হওয়া। |
মানসিক ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ | ভয়। বিভ্রান্তি। দ্বিধা। উদ্বিগ্ন ও বিষন্নতা। মানসিক চাপ। অস্বস্তিবোধ করা। আবেগপ্রবণ হওয়া। |
সামাজিক ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ | যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হওয়া। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে চাপ সৃষ্টি করা। চাপ প্রয়োগ করে মাদকদ্রব্য গ্রহণে বাধ্য করা। |
আমার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমি এখন যা করছি
উত্তর:
চ্যালেঞ্জ | আমার পদক্ষেপ | আমার পদক্ষেপ কি ইতিবাচক/ নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে? |
শারীরিক পরিবর্তন | ব্যয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে শারীরিক যত্ন ও পরিচর্যা করছি। | ইতিবাচক |
প্রযুক্তিগত হয়রানি | প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করছি এবং কোনো তথ্য ও ছবি শেয়ার করছি না। | ইতিবাচক |
সমবয়সীদের কাছ থেকে চাপ | সময়বয়সী বা বয়সে বড় যারা নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে তাদের সাথে নিরিবিলি কোথাও যাওয়া থেকে বিরত থাকছি। | ইতিবাচক |
আবেগ অনুভূতির পরিবর্তন | অন্যদের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে না পারায় সবসময় ঘরে অবস্থান করছি। | নেতিবাচক |
আমার নিরাপদ থাকা: চ্যালেঞ্জের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলার কৌশল
উত্তর:
আমার নিরাপদ থাকা: চ্যালেজের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলার কৌশল |
আমার শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন বিষয়ক সঠিক তথ্য জেনে শরীর ও মনের যত্ন এবং পরিচর্যা করব |
বয়ঃসন্ধিকালীন বিভিন্ন পরিবর্তনগুলোকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে কোনো বিষয়ে মানসিক চাপ হলে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত কারো সাথে শেয়ার করে সহযোগিতা চাইব। |
শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে ভয় বা লজ্জা না পেয়ে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কারো সহযোগিতা চাইব। |
প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করব এবং ব্যক্তিগত কোনো তথ্য ও ছবি শেয়ার করব না। |
মন খারাপ, রাগ, হতাশা বা অন্য কোনো কারণে অন্যের প্রতি ক্ষতিকর আচরণ বা আত্মহত্যার চিন্তা হলে অবশ্যই নিকটস্থ কাউকে জানাবো। |
কখনো সমবয়সী, সহপাঠী এবং বড় ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে কেউ নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করতে চাপ প্রয়োগ করলে সেই স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাব। |
মাদক থেকে নিজেকে ও বন্ধুকে রক্ষা করা
উত্তর:
আমার কিছু সমবয়সী বন্ধু আমাকে মাদক সেবনে চাপ দিচ্ছে। নিজেকে মাদক থেকে বিরত রাখতে আমি কী করব? | আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে মাদক থেকে বিরত রাখতে আমি কী করব? |
i. মাদক সেবন আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এই বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করব। ii. আমার পরিবারের লোকজন আমাকে মাদক থেকে দূরে থাকতে বলেছেন এমনটি বলব। iii. যেসব স্থানে তারা মাদক সেবন করে সেসব স্থানে যাব না। iv. প্রয়োজন হলে তাদের সাথে মেলামেশা বন্ধ করে দেব। | i. মাদক সেবনের কুফলগুলো জানাব। ii. এটি একটি অপরাধ সেটা বোঝানোর চেষ্টা করব। iii. মাদক সেবন করার পর তার যেসব পরিবর্তন ঘটেছে সেগুলো তাকে জানানোর চেষ্টা করব। iv. এর ফলে তার ভবিষ্যৎ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা বোঝানোর চেষ্টা করব। v. তার পিতামাতাকে এ বিষয়ে জানিয়ে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। |
বাল্যবিবাহের ক্ষতি ও সমস্যা এবং বন্ধু বা বান্ধবীর বাল্যবিবাহ যেভাবে রোধ করব
উত্তর:
শারীরিক | মানসিক | সামাজিক |
i. অপরিণত গর্ভধারণ হতে পারে। ii. গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হতে পারে। iii. শরীরে পানি আসে। iv. অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগে। v. চোখে ঝাপসা দেখে। vi. বিভিন্ন শারীরিক রোগ দেখা দেয়। vii. গর্ভপাত ঘটে। viii. মা ও সন্তানের মৃত্যু হতে পারে। | i. মানসিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ii. ভয়, বিভ্রান্তি ও দ্বিধা কাজ করে। iii. পারিবারিক সহিংসতা ও নির্যাতন বৃদ্ধি পায়। iv. মানসিক চাপ, অস্থিরতা ও অসহায়ত্ব বোধ করে। | i. বিষণ্ণতা ও হতাশা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে মাদক সেবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। ii. মেয়েরা বাল্যবিবাহের জন্য লজ্জায় বন্ধু- বান্ধবীদের সাথে যোগাযোগ করতে চায় না। iii. শিক্ষার হার হ্রাস ও নিরক্ষরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনেতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে না। iv. দরিদ্রতা বৃদ্ধি পায়। |
বন্ধু বা বান্ধবীর বাল্যবিবাহ যেভাবে রোধ করব
উত্তর: প্রথমে আমরা আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানাব। এরপর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত আকারে বিষয়টি জানাব এবং বাল্যবিবাহ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করব। এরপর নির্দিষ্ট দিনে স্কুলের বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হব।
কৈশোরের আনন্দময় অভিজ্ঞতায় দেয়াল পত্রিকা তৈরি
ভায়েরি/জার্নালে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিপিবদ্ধকরণ
১. গত এক মাসে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী কী কী কাজ করেছি?
২. কাজগুলো করতে কেমন লেগেছে?
৩. কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি কি? হয়ে থাকলে কীভাবে তা মোকাবিলা করেছি?
৪. শিক্ষক বা পরিবারের কাছে কি আমার কোনো সাহায্য দরকার? সেগুলো কী?
উত্তর:
০২-০২-২০২৩
- সুদ্ধাস্থ্যের চর্চা করার জন্য গত মাসে আমি বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা করেছিলাম। যেমন- সময়মতো খাবার খাওয়া, বেশি বেশি পানি পান করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, বিকেলে নিয়মিত খেলাধুলা করা। আমি গত একমাসে নিয়মিত বেশি বেশি পানি পান করেছি, প্রতিদিন গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকেছি, সময়মতো খাবার খেয়েছি। কিন্তু প্রতিদিন খেলাধুলা করতে পারিনি।
- পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো করতে গিয়ে আমি অনেক উপভোগ করেছি।
- তবে কাজগুলো করতে গিয়ে আমি কিছু অসুবিধারও সম্মুখীন হয়েছি। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিজ্ঞাতা বজায় রাখতে অনেক সময় খেলাধুলা শেষে ঘাম শরীরেই গোসল করেছি। আবার কখনো বিদ্যালয় থেকে ফিরেই ঘাম না শুকিয়েই গোসল করেছি। এ কারণে একদিন হালকা সর্দি লেগে গিয়েছিলো। তবে পরিবারের সহায়তায় আমি মাত্র দুই দিনেই সুস্থ হয়ে উঠতে পেরেছিলাম।
- এই কাজে আমার মা আমাকে অনেক সহায়তা করেছে। আমার জামা-কাপড়গুলো প্রতিদিন ধুয়ে দিয়েছেন যাতে আমি পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে পারি। আরেকটি কথা যেটি না বললেই নয়, মা সবসময় চেষ্টা করেছেন আমাকে সময়মতো স্বাস্থ্যকর খাবার রান্না করে দেওয়ার। এছাড়াও আমার শ্রেণিশিক্ষক আমার পরিকল্পনা শুনে আমাকে সেগুলো সঠিকভাবে পালন করার জন্য দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।