এই পোস্টে আমরা জানব ল্যাপটপ ও ডেস্কটপের মধ্যে পার্থক্য কি কি বিদ্যমান সে সম্পর্কে।
ল্যাপটপ ও ডেস্কটপের মধ্যে পার্থক্য
আমাদের অনেকের মধ্যেই একটি ভুল ধারনা আছে যে ডেস্কটপ কম্পিউটার দিয়ে যে কাজ করা যায় ল্যাপটপ দিয়ে হয়ত সেই সমস্ত কাজ করা যায়না। এই ভুল ধারনার কারণ হচ্ছে দুটির মধ্যে আকারের পার্থক্য ডেস্কটপ সাইজে অনেক বড় ও যন্ত্রপাতিও বেশি। কিন্তু ল্যাপটপ সাইজে অনেক ছোট এবং অতিরিক্ত কোন যন্ত্রপাতি ছাড়াও এটি ব্যবহার করা যায়।
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সকল ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতির মধ্যে ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে এই ন্যনো টেকনোলজির উন্নতির ফলে বড় সাইজের যন্ত্রপাতিকে ছোট করা সম্ভব হচ্ছে এবং কাজের শক্তিও হাজার গুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
একটি ডেস্কটপ কম্পিউটারে যে সকল যন্ত্রপাতি থাকে ল্যাপটপেও সেই সমস্ত যন্ত্রপাতি থাকে কিন্তু সেগুলো সাইজে অনেক ছোট হয়।
ডেস্কটপ কম্পিউটারের কিবোর্ড, মাউস, মনিটর, র্যাম, প্রসেসর, হার্ডডিস্ক, মাদারবোর্ড, ইউএসবিপোর্ট আছে এবং ল্যাপটপ কম্পিউটারের মধ্যওে এই একই জিনিস রয়েছে।
ডেস্কটপ কম্পিউটার দিয়ে যেই সমস্ত কাজ করা যায় ল্যাপটপ দিয়েও সেই সমস্ত কাজেই করা যায়। তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে দুইটির মধ্যে পার্থক্য কি?
ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের মধ্যে পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে, একেকটির একেক রকম সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে।
ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো মূল্যের দিক দিয়ে সাধারণত ল্যাপটপের দাম একটু বেশি হয়ে থাকে।
কম্পিউটারের গতি বা কার্যক্ষমতা নির্ভর করে তার প্রসেসর ও র্যামের উপর। ভাল প্রসেসর ও র্যামের ল্যাপটপ কিনতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু একই কনফিগারেশন এর একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার ক্রয় করলে ল্যাপটপের মূল্যের অর্ধেক টাকা দিয়েই ক্রয় করা সম্ভব।
আমরা কোন ধরনের কাজ করব এবং কতক্ষন সময় ধরে কম্পিউটার চালু রাখব সেটার উপর নির্ভর করে ল্যাপটপ ভাল হবে না ডেস্কটপ।
যারা শিক্ষার জন্য কম্পিউটার ক্রয় করতে চান তাদের জন্য সবচেয়ে ল্যাপটপ কম্পিউটার অনেক সুবিধা জনক কারণ যারা শিক্ষার জন্য কম্পিউটার ক্রয় করে তাদের বেশির ভাগ মানুষেই ষ্টুডেন্ট। শিক্ষা অবস্থায় কম্পিউটার এর উপর বেশি প্রেসার পড়ে না।
কিন্তু যারা প্রফেশনাল কাজ করার জন্য কম্পিউটার ক্রয় করতে চান বিশেষ করে গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং এর কাজের জন্য তাদের জন্য ডেস্কটপ কম্পিউটারেই অনেক সুবিধা জন্যক। কারণ ডেস্কটপ কম্পিউটার অনেক লংটাইম চালু রাখলেও কোন সমস্যা হয় না। অনেক কোম্পানি আছে যারা মাসের পর মাস বছরের পর বছর কম্পিউটার অন করে রেখেছে একবারও বন্ধ করেনি।
ডেস্কটপ কম্পিউটার সাইজে বড় হওয়ার কারণে খুব সহজে ঠান্ডা হতে পারে এবং ভিতরে বড় ও শক্তিশালী কুলিং ফ্যান ব্যবহার করা যায়।
ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের মধ্যে পার্থক্য:
১। কম্পিউটারের যে কোন কাজে পারফরম্যান্স এর দিক থেকে ল্যাপটপের তুলনায় ডেক্সটপে দ্বিগুণ পরিমাণ পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।
২। ডেক্সটপে যেকোনো ধরনের ভারী কাজ করতে পারবেন। পক্ষান্তরে ল্যাপটপে যেকোনো ভারী কাজ করা যায় না করলে ল্যাপটপ স্লো বা হ্যাং করতে পারে।
৩। ডেক্সটপের বড় সমস্যা হল বিদ্যুৎ ছাড়া ব্যবহার করা সম্ভব না। পক্ষান্তরে ল্যাপটপের বড় সুবিধা হল বিদ্যুৎ ছাড়া ব্যবহার করা যায়
৪। ডেক্সটপ যেকোনো জায়গায় বহন করা অনেক কষ্টকর। পক্ষান্তরে ল্যাপটপ যেকোনো জায়গায় খুব সহজেই বহন করা যায়।
৫। ডেক্সটপে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করলেও কোন ধরনের গরম হয় না তাই এর কাজের পারফরম্যান্স অনেক ভালো থাকে । পক্ষান্তরে ল্যাপটপে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করলেও একটু গরম হয়। তাই এর কাজের পারফরম্যান্স একটু কমে যায়।
৬। ল্যাপটপের তুলনায় ডেক্সটপে কম খরচে ভাল কনফিগারেশন পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে এটি ডেক্সটপের তুলনায় ব্যয়বহুল। ভাল কনফিগারেশন পাওয়ার জন্য খরচ বেশি লাগে।
৭। ডেক্সটপে এর বিভিন্ন এক্সেসরিজ সমূহ খুব সহজেই পরিবর্তন করানো যায় যেমন: মাদারবোর্ড, প্রসেসর, র্যাম, হার্ডডিস্ক, মনিটর, ইত্যাদি। পক্ষান্তরে ল্যাপটপে এর বিভিন্ন এক্সেসরিজ সমূহ খুব সহজেই পরিবর্তন করানো যায় না। যেমন: মাদারবোর্ড, প্রসেসর, মনিটর, ইত্যাদি।
ল্যাপটপ ব্যবহারের কিছু সুবিধা
১. সাইজে ছোট হওয়ায় খুব সহজে স্থানান্তর করা যায়।
২. বিল্ট ইন ব্যাটারী থাকায় বিদ্যুৎ ছাড়াও অনেক সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
৩. অতিরিক্ত কোন মাউস, কিবোর্ডের প্রয়োজন পড়ে না।
৪. যেকোন যায়গায় খুব সহযেই ব্যবহার করা যায়।
৫. ভিডিও কলে কথা বলার জন্য অতিরিক্ত কোন ক্যমেরা, স্পিকার, মাইক্রোফোনের প্রয়োজন হয় না।