বিকাশ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সহজ এবং সুবিধাজনক। বিশেষ করে যারা জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) পাননি, তাদের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খোলা একটি কার্যকরী উপায়।
নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো কিভাবে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে যা লাগবে
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট এবং তথ্যের প্রয়োজন:
- বৈধ জন্ম নিবন্ধন সনদ: আপনার জন্ম নিবন্ধনের একটি কপি থাকতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে আপনার পরিচয় সঠিক এবং বৈধ।
- মোবাইল নম্বর: একটি সচল মোবাইল নম্বর যা আপনার নামে নিবন্ধিত। এই নম্বরটি আপনার বিকাশ একাউন্টের সাথে যুক্ত হবে এবং লেনদেনের সময় OTP (One Time Password) পাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে।
- ছবি: পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি। এই ছবিগুলি আপনার পরিচয় নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হবে।
- ন্যূনতম ডিপোজিট: একাউন্ট খোলার জন্য ন্যূনতম ৫০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে।
- জন্ম তারিখ ও নাম: সঠিকভাবে আপনার নাম এবং জন্ম তারিখ উল্লেখ করতে হবে, যা আপনার জন্ম নিবন্ধনে উল্লেখিত তথ্যের সাথে মিলে যেতে হবে।
- অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম: বিকাশের অফিসিয়াল অ্যাপে বা দোকানে দেওয়া অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া
বিকাশ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:
১. অ্যাপ ডাউনলোড করুন
প্রথমে আপনার স্মার্টফোনে বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং ইনস্টল করুন। আপনি Google Play Store বা Apple App Store থেকে এটি পেতে পারেন।
২. রেজিস্ট্রেশন শুরু করুন
অ্যাপটি খুলে ‘রেজিস্টার’ অপশনে ক্লিক করুন। এখানে আপনাকে নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
৩. জন্ম নিবন্ধন তথ্য প্রদান করুন
আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য, যেমন নাম, জন্ম তারিখ এবং জন্ম নিবন্ধন নম্বর সঠিকভাবে পূরণ করুন।
৪. মোবাইল নম্বর প্রদান করুন
একটি বৈধ মোবাইল নম্বর প্রদান করুন যা আপনার নামে নিবন্ধিত। এই নম্বরে একটি OTP পাঠানো হবে।
৫. OTP যাচাই করুন
আপনার মোবাইলে আসা OTP কোডটি প্রবেশ করান। এটি আপনার মোবাইল নম্বরের সত্যতা যাচাই করবে।
৬. সত্যতা যাচাই
আপনার তথ্য যাচাই করার জন্য বিকাশ কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করতে পারে। তারা আপনার জমা দেওয়া ডকুমেন্টগুলি যাচাই করবে।
৭. একাউন্ট সক্রিয়করণ
সবকিছু সঠিক থাকলে, আপনার বিকাশ একাউন্ট সক্রিয় করা হবে এবং আপনি লেনদেন শুরু করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা
বিকাশ একাউন্ট খুললে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পাওয়া যায়:
- সহজ লেনদেন: বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, গ্রহণ করা এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেন করা সহজ এবং দ্রুত। আপনি যে কোনো সময় এবং যে কোনো স্থানে লেনদেন করতে পারেন।
- অ্যাক্সেসযোগ্যতা: জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া যারা ব্যাংকিং সেবা পান না, তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষের জন্য উপকারী।
- স্টুডেন্ট একাউন্ট: ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন, যেমন কম ফি এবং বোনাস অফার।
- নিরাপত্তা: বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন করা নিরাপদ এবং সহজ। প্রতিটি লেনদেনে OTP এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়।
- অনলাইন শপিং ও বিল পরিশোধ: বিকাশ ব্যবহার করে আপনি অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারেন এবং বিভিন্ন বিল পরিশোধ করতে পারেন, যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট ইত্যাদি।
- অর্থনৈতিক সেবা: বিকাশ বিভিন্ন অর্থনৈতিক সেবা প্রদান করে, যেমন ঋণ, সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সুযোগ।
এভাবে, জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া এবং এর সুবিধাগুলি সম্পর্কে জানালাম। এটি একটি সহজ ও কার্যকরী উপায় যা আপনাকে ডিজিটাল অর্থনীতির অংশ হতে সাহায্য করবে। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরো তথ্য প্রয়োজন হয়, তাহলে বিকাশের হেল্পলাইন বা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করতে পারেন।