সেন্টমার্টিন দ্বীপ, বাংলাদেশের এক অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান, বর্তমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক অদ্ভুত সংকটের মুখোমুখি। আনুষ্ঠানিকভাবে সেখানে ভ্রমণের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে দ্বীপের বাসিন্দা ছাড়া অন্য কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারছেন না। নভেম্বর মাসে পর্যটকদের জন্য দ্বীপটি খোলার ঘোষণা থাকলেও, বাস্তবে সব ধরনের ভ্রমণ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা এবং পর্যটন ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, কারণ তারা দেখছেন যে দ্বীপের পর্যটন খাত ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। সেন্টমার্টিনের এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও প্রশাসনিক কড়াকড়ির ফলে সেখানে গুজব এবং অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যা দ্বীপবাসীর জীবনযাত্রাকেও প্রভাবিত করছে।
চলুন সেন্টমার্টিন ভ্রমণ নিয়ে বিস্তারিত আরো আলোচনা করা যাক।
সেন্টমার্টিনের ভ্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি
সেন্টমার্টিন দ্বীপ, বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, বর্তমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধের সম্মুখীন। আনুষ্ঠানিকভাবে সেখানে ভ্রমণের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে দ্বীপের বাসিন্দা ছাড়া অন্য কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারছেন না। নভেম্বর মাসে পর্যটকদের জন্য দ্বীপটি খোলার ঘোষণা থাকলেও, বাস্তবে সব ধরনের ভ্রমণ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, তাদের আত্মীয়-স্বজনরাও দ্বীপে প্রবেশ করতে পারছেন না, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সেন্টমার্টিনে প্রশাসনিক কড়াকড়ি ও প্রতিবন্ধকতা
সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে কোনো বাধা থাকার কথা নয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। নভেম্বরের ৪ তারিখে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেন্টমার্টিন যেতে হলে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হয়েছে এবং কোস্টগার্ডকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি প্রদান করতে হয়েছে।এটি স্পষ্ট যে, সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে এক ধরনের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, পর্যটন উদ্দেশ্যে এখন কোনো অনুমতি দেয়া হচ্ছে না; শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে যারা যাচ্ছেন তাদের জন্য অনুমতি রয়েছে।
সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের সমস্যা
বর্তমানে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ চলাচল শুরু হয়নি এবং স্পিডবোটও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও কিছু ট্রলার চলাচল করছে, তাও লিখিত অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাচ্ছে না। টেকনাফ থেকে সার্ভিস বোট বা ট্রলার ব্যবহার করে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।ট্রলার মালিকরা জানান, সেন্টমার্টিনের অধিবাসী না হলে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না এবং কোস্টগার্ড নিয়মিতভাবে যাত্রীদের এনআইডি যাচাই করছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক পর্যটক হতাশ হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
সেন্টমার্টিনের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া
সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা এই কড়াকড়ির কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আগে কখনো ছিল না এবং এতে গুজব সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. জসিম বলেন, “দ্বীপের দশ হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা এবং পরিবেশ দুটোই সমান গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সেন্টমার্টিনে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
বর্তমানে দ্বীপে পর্যটন চালু করার বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দৈনিক দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘোষণার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা নিয়মিত বিক্ষোভ করছে।সেন্টমার্টিনের বর্তমান পরিস্থিতি একটি সংকটজনক অবস্থায় রয়েছে, যেখানে পর্যটন ব্যবসায়ীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এবং স্থানীয় জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা যাতে সেন্টমার্টিন আবারো তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।