আমাশয় বা ডিসেন্ট্রি হলো অন্ত্রের একটি সংক্রমণজনিত রোগ, যা সাধারণত ডায়রিয়া, পেটের ব্যথা এবং অন্যান্য অস্বস্তির সাথে যুক্ত হয়।
এই অবস্থায় সঠিক খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি রোগীর দ্রুত সুস্থতার জন্য সহায়ক হতে পারে। নিচে আমাশয় রোগীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা দেওয়া হলো।
আমাশয় রোগীর খাবার তালিকা
১. তরল খাবার
- পানি: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন যাতে শরীরের জলশূন্যতা প্রতিরোধ করা যায়।
- নারকেল জল: এটি শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- সবজি স্যুপ: যেমন গাজরের স্যুপ বা টমেটোর স্যুপ।
২. শাকসবজি
- সেদ্ধ সবজি: গাজর, কুমড়ো, এবং ফুলকপি সেদ্ধ করে খেতে পারেন।
- বটতরু (Bottle Gourd): এটি হালকা এবং সহজে হজম হয়।
৩. শস্য ও দানা
- খিচুড়ি: এটি সহজে হজম হয় এবং পুষ্টি সরবরাহ করে।
- সেদ্ধ ভাত: সাদা ভাত বা ব্রাউন রাইস খেতে পারেন।
৪. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
- সেদ্ধ ডাল: মুসুর ডাল বা মটর ডাল সেদ্ধ করে খেতে পারেন।
- সেদ্ধ মুরগির মাংস: এটি প্রোটিনের ভালো উৎস।
৫. ফল
- পাকা কলা: এটি সহজে হজম হয় এবং পটাশিয়ামের ভালো উৎস।
- পাকা আপেল: এটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং হজমে সহায়ক।
৬. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
- দই: এটি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে এবং পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারী।
- ছানা: এটি সহজে হজম হয় এবং প্রোটিন সরবরাহ করে।
৭. অন্যান্য
- পুডিং বা সেমোলিনা (Rava) পুডিং: এটি হালকা এবং সহজে হজম হয়।
- ভাপা আলু: এটি শক্তি দেয় এবং সহজে হজম হয়।
খাবার থেকে এড়ানোর বিষয়সমূহ
আমাশয় রোগীদের কিছু খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে:
- তেল ও মশলাযুক্ত খাবার: যেমন ভাজা ও ঝাল খাবার।
- দুগ্ধজাত খাবার: বিশেষ করে দুধ, কারণ কিছু রোগী দুধ হজম করতে পারে না।
- কাঁচা সবজি ও ফল: যেমন সালাদ, যা পাচনতন্ত্রকে উত্তেজিত করতে পারে।
- অ্যালকোহল ও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: এগুলি অন্ত্রে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
আমাশয় রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরের তালিকা অনুসরণ করলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
তবে, যদি সমস্যা গুরুতর হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।