এই পোস্টে আমরা জানব ৭ম শ্রেনীর, বিষয় গণিত এর প্রথম অধ্যায় (৮ – ১৩ পৃষ্ঠা), ০ ও ১ এর সূচক এবং সূচকের কারিকুরি সম্পর্কে।
০ ও ১ এর সূচক এবং সূচকের কারিকুরি
আমরা এখানে, ০ ও ১ এর সূচক এর বিস্তারিত জানব, প্রথামিক ভাবে ০ এর সূচক যা ই হোক না কেন সংখ্যার মান ০ ই থাকবে আবার ১ এর সূচক যা ই হোক না কে সংখ্যার মান কিন্তু ১ ই থাকবে।যেমনঃ ০১ = ০, ০২ = ০ ….. এবং ১১ = ১, ১২ = ১, ………। আর সূচকের কারিকুরিতে আমরা সূচকের গুণ এর বিস্তারিত জানব।
০ ও ১ এর সূচক
শিখনঃ তোমার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তোমাদের শ্রেণিতে ৫ দিন ধরে ক্যান্ডি বিতরণ করবে। প্রত্যাক শিক্ষার্থী প্রত্যক দিন নিন্মোক্ত শর্তে ক্যান্ডি পাবে।
১ম দিনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ক্যান্ডি প্রাপ্তির সংখ্যা = নিজ নিজ রোল নাম্বারের শেষ অঙ্ক
২ দিন প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ক্যান্ডি প্রাপ্তির সংখ্যা = ১ম দিনে প্রাপ্ত ক্যান্ডি×নিজ নিজ রোল নাম্বারের শেষ অঙ্ক
৩য় দিন প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ক্যান্ডি প্রাপ্তির সংখ্যা = ২য় দিনে প্রাপ্ত ক্যান্ডি×নিজ নিজ রোল নাম্বারের শেষ অঙ্ক
ক্যান্ডি প্রাপ্তির সংখ্যা উপরের নিয়ম মাফিক চলমান হলে, নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
(ক) তোমার রোল নম্বর ৩৪ হলে, তুমি প্রত্যেক দিন যে ক্যান্ডি পাবে তা ছক আকারে দেখাও।
(খ) তোমার রোল ১০ হলে তুমি কোন ক্যান্ডি পাবে না তার ব্যখ্যা দাও।
(গ) তোমার রোল ৫১ হলে তোমার প্রতিদিনের ক্যান্ডি প্রাপ্তির সংখ্যা সমান হবে, সত্যতা যাচাই কর।
সমাধানঃ
(ক)
প্রদত্ত শর্ত অনুসারে আমার ক্যান্ডি প্রাপ্তির ছক নিচে দেওয়া হলোঃ
রোল | রোলের শেষ অঙ্ক | দিন | প্রাপ্ত ক্যান্ডির সংখ্যা |
৩৪ | ৪ | ১ম দিন | ৪ টি |
২য় দিন | ৪×৪ টি = ১৬ টি | ||
৩য় দিন | ১৬×৪ টি = ৬৪ টি | ||
৪র্থ দিন | ৬৪×৪ টি = ২৫৬ টি | ||
৫ম দিন | ২৫৬×৪ টি = ১০২৪ টি |
(খ)
আমার রোল ১০ হলে আমার ক্যান্ডি প্রাপ্তির তালিকা নিন্মরূপঃ
রোল | রোলের শেষ অঙ্ক | দিন | প্রাপ্ত ক্যান্ডির সংখ্যা |
১০ | ০ | ১ম দিন | ০ টি |
২য় দিন | ০×০ টি = ০ টি | ||
৩য় দিন | ০×০ টি = ০ টি | ||
৪র্থ দিন | ০×০ টি = ০ টি | ||
৫ম দিন | ০×০ টি = ০ টি |
অর্থাৎ, প্রদত্ত শর্ত অনুসারে আমি প্রতিদিন ০ টি ক্যান্ডি পাব।
তাহলে, বলা যায় আমি কোন ক্যান্ডি পাব না।
(গ)
আমার রোল ১০ হলে আমার ক্যান্ডি প্রাপ্তির তালিকা নিন্মরূপঃ
রোল | রোলের শেষ অঙ্ক | দিন | প্রাপ্ত ক্যান্ডির সংখ্যা |
৫১ | ১ | ১ম দিন | ১ টি |
২য় দিন | ১×১ টি = ১ টি | ||
৩য় দিন | ১×১ টি = ১ টি | ||
৪র্থ দিন | ১×১ টি = ১ টি | ||
৫ম দিন | ১×১ টি = ১ টি |
অর্থাৎ আমি প্রত্যেক দিন ১ টি করে ক্যান্ডি পাব।
সুতরাং, আমার রোল ৫১ হলে আমার প্রতিদিনের ক্যান্ডি প্রাপ্তির সংখ্যা সমান [যাচাই করা হলো]
সূচক নিয়ে কারিকুরি
শিখনঃ একটি মহাকাশ যানের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৪ মিটার হলে ৪১, ৪২,….৪৭ সেকেন্ডে যানটির অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণাকার ও অতিক্রান্ত দূরত্বের সূচকীয় আকার নির্ণয় কর।
সমাধানঃ
সময় ব্যবধান (সেকেন্ডে) | গতিবেগ (মিটার, প্রতি সেকেন্ডে) | অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণাকার (মিটার) | অতিক্রান্ত দুরত্ব (সূচকীয় আকারে-মিটারে ) |
৪১ | ৪ | ৪১×৪ = ৪×৪ | ৪২ |
৪২ | ৪ | ৪২×৪ = ৪×৪×৪ | ৪৩ |
৪৩ | ৪ | ৪৩×৪ = ৪×৪×৪×৪ | ৪৪ |
৪৪ | ৪ | ৪৪×৪ = ৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৫ |
৪৫ | ৪ | ৪৫×৪ = ৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৬ |
৪৬ | ৪ | ৪৬×৪ = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৭ |
৪৭ | ৪ | ৪৭×৪ = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৮ |
শিখনঃ মহাকাশ যানটির গতিবেগ সময় ব্যবধান ৪১, ৪২, ……, ৪৮ এর জন্য মিটার প্রতি ৪৫, ৪৮, ৪৩, ৪১০, ৪৪, ৪২, ৪৯ ও ৪ হলে অতিক্রান্ত দুরত্বের গুণাকার ও অতিক্রান্ত দুরত্বের সূচকীয় আকারে প্রকাশ কর।
সমাধানঃ
সময় ব্যবধান (সেকেন্ডে) | গতিবেগ (মিটার, প্রতি সেকেন্ডে) | অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণাকার (মিটার) | অতিক্রান্ত দুরত্ব (সূচকীয় আকারে-মিটারে ) |
৪১ | ৪৫ | ৪১×৪৫ = (৪)×(৪×৪×৪×৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৬ |
৪২ | ৪৮ | ৪২×৪৮ = (৪×৪)×(৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪১০ |
৪৩ | ৪৩ | ৪৩×৪৩ = (৪×৪×৪)×(৪×৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৬ |
৪৪ | ৪১০ | ৪৪×৪১০ = (৪×৪×৪×৪)×(৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪১৪ |
৪৫ | ৪৪ | ৪৫×৪৪ = (৪×৪×৪×৪×৪)×(৪×৪×৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৯ |
৪৬ | ৪২ | ৪৬×৪২ = (৪×৪×৪×৪×৪×৪)×(৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৮ |
৪৭ | ৪৯ | ৪৭×৪৯ = (৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪)×(৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪) = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪১৬ |
৪৮ | ৪ | ৪৮×৪ = (৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪)×৪ = ৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪×৪ | ৪৯ |
শিখনঃ একটি সংখ্যা ধরে নিচের ছকটি পূর্ণ কর
সমাধানঃ
একটি সংখ্যা ১২ ধরে প্রদত্ত ছকটি পূর্ণ করা হলোঃ
গৃহীত সংখ্যা | গুণ | গুণের ১ম পদ | ১ম পদের গুণাকার কাঠামো | গুণের ২য় পদ | ২য় পদের গুণাকার কাঠামো | গুণফল | গুণফলের সূচকীয় কাঠামো |
১২ | ১২২×১২৪ | ১২২ | ১২×১২ | ১২৪ | ১২×১২×১২×১২ | ১২×১২×১২×১২×১২×১২ | ১২৬ |
১২১×১২৪ | ১২১ | ১২ | ১২৪ | ১২×১২×১২×১২ | ১২×১২×১২×১২×১২ | ১২৫ | |
১২৩×১২১ | ১২৩ | ১২×১২×১২ | ১২১ | ১২ | ১২×১২×১২×১২ | ১২৪ | |
১২২×১২১ | ১২২ | ১২×১২ | ১২১ | ১২ | ১২×১২×১২ | ১২৩ | |
১২৩×১২৩ | ১২৩ | ১২×১২×১২ | ১২৩ | ১২×১২×১২ | ১২×১২×১২×১২×১২×১২ | ১২৬ |
শিখনঃ সুচকের কারিকুরি হতে শিখন ফল হলে নিচের ছকটি পূরণ কর।
সমাধানঃ
পূর্বে আমরা একটি সংখ্যা ১২ ধরেছি, সেই হিসেব ছক ২.৪ পূরণ করা হলোঃ
ক্রমিক | ছক ২.৩ হতে প্রাপ্ত তথ্য | ছক ২.৪ হতে প্রাপ্ত তথ্য | ||||
গুণ | গুণ করার ধাপ | গুণফল | গুণ | গুণ করার ধাপ | গুণফল | |
১ | ১০২×১০৪ | ১০২+৪ | ১০৬ | ১২২×১২৪ | ১২২+৪ | ১২৬ |
২ | ১০৩×১০৩ | ১০৩+৩ | ১০৬ | ১২১×১২৪ | ১২১+৪ | ১২৫ |
৩ | ১০৪×১০১ | ১০৪+১ | ১০৫ | ১২৩×১২১ | ১২৩+১ | ১২৪ |
৪ | ১০২×১০১ | ১০২+১ | ১০ | ১২২×১২১ | ১২২+১ | ১২৩ |
৫ | ১০১×১০৩ | ১০১+৩ | ১০৪ | ১২৩×১২৩ | ১২৩+৩ | ১২৬ |
কাজঃ
১) সূচকের গুণের নিয়মের সাহয্যে গুণফল নির্ণয় করো। (গুণফল ০ অথবা ১ হলে, ভিত্তিতে ০ অথবা ১ থাকবে সূচকের মান সম্পর্কে যা শিখেছো সেই অনুযায়ী গুণফল লিখবে)
সমাধানঃ
ক্রমিক | সূচকের গুণ | গুণফল (সূচকীয় আকারে) |
১ | ৭৪×৭৭ | ৭৪+৭ = ৭১১ |
২ | ০৮×০২ | ০৮+২ = ০১০ |
৩ | ১২৪×১১৮ | ১২৪+১৮ = ১৪২ |
৪ | ১২১২×১২১২ | ১২১২+১২ = ১২২৪ |
৫ | ৭১২৮×৭১৭২ | ৭১২৮+৭২ = ৭১১০০ |
৬ | ২১২১×২১১৪×২১৫×২১২ | ২১২১+১৪+৫+২ = ২১৪২ |
২) সূচকের গুণের নিয়মের সাহায্যে খাতায় ছক ২.২ এর অনুরূপ ছক অঙ্কন করে তা পূরণ করো।
সমাধানঃ
সূচকের গুণের নিয়মের সাহায্যে ছক ২.২ এর অনুরূপ ছক অঙ্কন করা হলোঃ
সময় ব্যবধান (সেকেন্ডে) | গতিবেগ (মিটার, প্রতি সেকেন্ডে) | অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণাকার (মিটার) | অতিক্রান্ত দুরত্ব (সূচকীয় আকারে-মিটারে ) |
৫১ | ৫৫ | ৫১×৫৫ = (৫)×(৫×৫×৫×৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫৬ |
৫২ | ৫৮ | ৫২×৫৮ = (৫×৫)×(৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫১০ |
৫৩ | ৫৩ | ৫৩×৫৩ = (৫×৫×৫)×(৫×৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫৬ |
৫৪ | ৫১০ | ৫৪×৫১০ = (৫×৫×৫×৫)×(৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫১৪ |
৫৫ | ৫৪ | ৫৫×৫৪ = (৫×৫×৫×৫×৫)×(৫×৫×৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫৯ |
৫৬ | ৫২ | ৫৬×৫২ = (৫×৫×৫×৫×৫×৫)×(৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫৮ |
৫৭ | ৫৯ | ৫৭×৫৯ = (৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫)×(৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫) = ৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫১৬ |
৫৮ | ৫ | ৫৮×৫ = (৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫)×৫ = ৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫×৫ | ৫৯ |
৩) হাসান দুটি সূচকীয় আকারের সংখ্যা গুণ করতে গিয়ে আটকে গিয়েছে। সেই সংখ্যা দুটি হল ৫২ এবং ১২২ । সে সংখ্যা দুটিকে ছকের মত করে দুইবার গুণাকারে লিখলো। দেখো তো সে ঠিক লিখেছে কীনা?
৫২×১২২ = ৫২+২ = ৫৪ = ৬২৫ | ১২২×৫২ = ১২২+২ = ১২৪ = ২০৭৩৬ |
যদি হাসানের করা দুটি গুণ প্রক্রিয়ার কোনটি ঠিক হয় তবে সেই প্রক্রিয়ায় তুমি ২৩ এবং ৫৪ এর গুণফল নির্ণয় করো। যদি হাসানের করা গুণ প্রক্রিয়া ভুল হয়, তবে তুমি হাসানের ভুলটি চিহ্নিত করে সঠিক গুণফল নির্ণয় করো এবং পরবর্তীতে সঠিকভাবে ২৩ এবং ৫৪ এর গুণফল নির্ণয় করো।
সমাধানঃ
না, হাসান ঠিক লিখে নাই।
কারনঃ দুইটি সূচকীয় আকারের সংখ্যার গুণের ক্ষেত্রে, সংখ্যাদ্বয়ের সূচকের যোগ এর মাধ্যমে গুণফল নির্ণয় করতে হলে সংখ্যাদ্বয়ের বেজ বা ভিত্তি একই হতে হবে।
এখানে, দুইটি সংখ্যা ভিত্তি ৫ ও ১২ একই নয়। তাহলে সূচক ২ ও ২ যোগ করা যাবে না।
সঠিক গুণঃ ৫২×১২২ = (৫×১২)২ = ৬০২ = ৩৬০০
আবার,
২৩×৫৪ = ২৩×৫৩×৫ = (২×৫)৩×৫ = ১০৩×৫ = ১০০০×৫ = ৫০০০
পরবর্তী পৃষ্ঠার সমাধান পেতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন 👇
👉 সূচকের ভাগ (১৪-২২ পৃষ্ঠা) – সমাধান | ১ম অধ্যায় | গণিত | সপ্তম শ্রেণী