আমাদের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি – সমাধান | ২য় অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী – বিজ্ঞান

আমাদের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ২য় অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী - বিজ্ঞান

এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিষয় এর ২য় অধ্যায়, আমাদের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে।

বিজ্ঞান অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান। আর বিজ্ঞানের এই আবিষ্কারের আবিষ্কারকে মানুষের প্রায়োগিক কাজে লাগানোর উপায়কে প্রযুক্তি বলে।

প্রথম ও দ্বিতীয় সেশন

সত্যিকারের বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন কোন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়? 
চাইলেই কি যে কেউ বিজ্ঞানী হতে পারে?
অনুসন্ধানী মন, পরিশ্রমী, স্বার্থপর হয় না।

হ্যা হতে পারবে। যদি বৈজ্ঞানিক মন থাকে ।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে আধুনিক ল্যাবরেটরি বা যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হয়?বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে সবসময়ই অনেক আধুনিক ল্যবরেটরি বা যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না। যেমন: মাদাম কুরি পদার্থ বিজ্ঞান এবং রসায়নে দুইবার নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন কিন্তু তার ল্যবরেটরিটা ছিল একেবারেই সাদামাটা। অরেকজন বিজ্ঞানী ছিলেন হরিপদ কাপালী। উন্নতমানের যন্ত্রপাতি না থাকা সত্ত্বেও ভালো জাতের ধান উদ্ভাবনে অবদান রাখেন।

সত্যিকারের বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন কোন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়? 

সত্যিকারের বিজ্ঞানীদের অনুসন্ধানী মন থাকে, তাঁরা পরিশ্রমী হয়, স্বার্থপর হয় না।

চাইলেই কি যে কেউ বিজ্ঞানী হতে পারে?

চাইলেই কি যে কেউ বিজ্ঞানী হতে পারবে, যদি বৈজ্ঞানিক মন থাকে।

পাশের বন্ধুর সাথে আলাপ করে আমার চিন্তা টকে রাখা হলো: 

স্যার আইজাক নিউটন ও হরিপদ কাপালীর  বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রক্রিয়ার মধ্যে মিল কী কী?তারা প্রত্যেকেই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ধাপসমূহ মেনেছে। যেমন:১. একটি সমস্যা বা প্রশ্ন ঠিক করা যার সমাধান বা উত্তর বের করতে হবে।২. এ সম্পর্কে যা কিছু গবেষণা হয়েছে তা জেনে নেয়া।৩. প্রশ্নটির একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দাঁড় করানো। ৪. সম্ভাব্য ব্যাখ্যাটি সত্যি কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা।৫. পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া।৬. সবাইকে ধারণাটি জানিয়ে দেওয়া।

বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালী এই ধাপে যা করেছেন তা নিম্মে দেওয়া হলঃ 

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ধাপসমূহবিজ্ঞানী হরিপদ কাপালী এই ধাপে যা করেছেন
১. একটি সমস্যা বা প্রশ্ন ঠিক করা যার সমাধান বা উত্তর বের করতে হবে।ধান ক্ষেতের কিছু ধান গাছ তুলনামূলক ভাবে বড়। কেন বড় হয় এবং ফলন বেশি হয়?
২. এ সম্পর্কে যা কিছু গবেষণা হয়েছে তা জেনে নেয়া।বিভিন্ন ধানের গবেষণা সম্পর্কে ধারণা রেখেছে।
৩. প্রশ্নটির একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দাঁড় করানো।এই ধানটি বেশি বড় এবং ফলন বেশি দিবে।
৪. সম্ভাব্য ব্যাখ্যাটি সত্যি কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা।যে ধান গুলো ভালো সেগুলো অন্য ধানের সাথে না মিশিয়ে আলাদা করে ফেললেন। বীজগুলো আলাদা করে সেগুলো আবার নতুন করে লাগালেন। এর ফলে সেগুলো বেশ বড় এবং উচ্চ ফলনশীল। 
৫. পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া।আসলেই এই ধানের জাতটি উচ্চ ফলনশীল।
৬. সবাইকে ধারণাটি জানিয়ে দেওয়া।বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালীর এই আবিষ্কারের কথা সবাই জানার পরি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধানগুলোকে নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছিল।

👉 আকাশ কত বড়? | বিজ্ঞান – ১ম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

তৃতীয় সেশন

বিজ্ঞানের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি আমাদের প্রয়োজন মেটাই?

১। ট্রাক্টর, সেচ পাম্প বা ফলস মাড়াইয়ের মতো আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি মানুষ ব্যবহার করছে এর ফলে অল্প সময়ে অধিক খাদ্য উৎপাদন করে মানুষের বাড়তি খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে।

২। রাসায়নিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বেশি পরিমাণ উৎপাদন করা যায়।

৩। চিকিৎসা প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজেই রোগ নির্ণয় করা যায়।

আমাদের পছন্দের প্রযুক্তি।জীবন রক্ষার জন্য ঔষধ তৈরি
বিজ্ঞানের কোন ক্ষেত্রের জ্ঞান এখানে কাজে লাগানো হয়েছে?জৈব রসায়নের জ্ঞান

👉 আমাদের যারা প্রতিবেশী | বিজ্ঞান অনুশীলন – ৪র্থ অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

প্রযুক্তি কি কাজে ব্যবহৃত হয়ঃ

প্রযুক্তির নামকী কাজে ব্যবহৃত হয়?
১. টেলিভিশনছবি, বিডিও দেখা, শব্দ শোনা, খেলাধুলা, বিনোদনইত্যাদি।
২. ফ্যানঘর ঠান্ডা রাখতে ব্যবহৃত হয়।
৩. লাইটঘর আলোকিত করতে ব্যবহৃত হয়।
৪. মোবাইল ফোনদূরের মানুষের সাথে কথা বলতে ব্যবহৃত হয়।
৫. রেফ্রিজারেটরখাবার সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
৬. ইন্টারনেটবিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষের সাথে সংযোক্ত থাকা যায়।

চতুর্থ সেশন

প্রযুক্তির নামকী কাজে ব্যবহৃত হয়?
১. এক্সরেরোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
২. রেডিও থেরাপিক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
৩. আলট্রাসনোগ্রাফিএর মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সহজ হয়।
৪. ই-শিক্ষাঅনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা।
৫. ই-স্বাস্থ্যঅনলাইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ।
৬. ই-ব্যাংকিংঅনলাইনের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
৭. স্যাটেলাইটআবহাওয়া, যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
৮. নিউক্লিয়ারবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়।

👉 চলো নৌকা বানাই – সমাধান | বিজ্ঞান – অনুশীলন বই | ৫ম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী 

প্রযুক্তিগুলোকে শ্রেণীবদ্ধ করা হলোঃ

প্রযুক্তির নামপ্রযুক্তিটির বিভিন্ন ব্যবহারপ্রযুক্তিটি ব্যবহারের ফলাফল ভালো নাকি খারাপ হচ্ছে?
কেন আমরা ভালো বা খারাপ বলছি?
১. স্মার্ট ফোনকথাবলা, ছবি দেখা, ভিডিও দেখা, গেইম খেলা ইত্যাদি।খারাপ হচ্ছেএকজন মানুষ বিনা কারণে সেটি ব্যবহার করে নিজের সময় নষ্ট করছে। তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীরা অতিরিক্ত মাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়ালেখার মনোযোগ নষ্ট করছে।
২. নিউক্লিয়ারবিদ্যুৎ তৈরি এবং ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহৃত হয়।খারাপ হচ্ছেনিউক্লিয়ার বোমায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
৩. পলিথিন ব্যাগব্যাগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়খারাপ হচ্ছেপলিথিন ব্যাগ অপচনশীল ফলে এগুলো পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটায়।
৪. ই-শিক্ষাপড়ালেখার কাজে ব্যবহার হয়ভালো হচ্ছেঘরে বসেই পড়ালেখা করা যায়।
৫. ই-ব্যাকিংলেনদেন করা যায়ভালো হচ্ছে ঘরে বসেই ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করা যায়।
৬. ই-স্বাস্থ্যস্বাস্থ্য সেবা গ্রহণভালো হচ্ছেঘরে বসেই বিশ্বের ভালো ভালো ডাক্তারের স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবা গ্রহণ করা যায়।

👉 পিকনিক পিকনিক | বিজ্ঞান – ৩য় অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

পঞ্চম সেশন

ভালো উদ্দেশ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে আমরা কী করতে পারি?অপ্রয়োজনীয় প্রযুক্তির ব্যবহার, কিংবা প্রযুক্তির অপব্যবহার কমাতে আমাদের কী করার আছে?
১. কোম্পানি এবং সরকারের নৈতিকতা কোড বাস্তবায়ন, কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং গোপনীয়তা, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া এমন প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রযুক্তির নৈতিক ব্যবহারকে সমর্থন করা।১. প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ব্যবহার সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করা। প্রযুক্তির অপব্যবহারের পরিণতি এবং দায়িত্বশীলভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব | সম্পর্কে মানুষকে শেখানো উচিত।
২. প্রযুক্তির সম্ভাব্য সুবিধা এবং কীভাবে এটি বৃহত্তর পর্যায়ে ভালোর জন্য ব্যবহার | করা যেতে পারে সে সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করা।২. প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করর জন্য বিভিন্ন কোম্পানি এবং সংস্থাগুলির শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করা উচিত।
৩. কোম্পানি এবং সরকার নতুন প্রযুক্তি তৈরি করতে গবেষণা এবং উন্নয়নে বিনিয়োগ করা। যা সামাজিক সমস্যাগুলি মোকাবেলা করতে পারে। যেমন: চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটানো।৩. পিতা-মাতা, স্কুল এবং সম্প্রদায়ের উচিত শিশু এবং যুবকদের নৈতিকভাবে এবং দায়িত্বের সাথে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা।
৪. সরকারের উচিত অপ্রয়োজনী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কঠিন আইন তৈরি করা যা প্রযুক্তির অপব্যবহারকে সীমাবদ্ধ করে।

প্রশ্নঃ তোমাদের দলের পরিকল্পনা কী ছিল?

উত্তরঃ ব্যানার, পোস্টার, সেমিনার বা আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অন্যকাসে ছাত্র-ছাত্রী সহ এলাকার মানুষকে প্রযুক্তির ভালো ব্যবহার এবং অপব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করানো । 

প্রশ্নঃ কাজটা করতে গিয়ে তোমার অভিজ্ঞতা কেমন হলো? নতুন কী শিখলে বা জানলে?

উত্তরঃ ক্রুসের সহপাঠী এবং শিক্ষকদের সাথে কাজ করায় প্রযুক্তি সম্পর্কে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। চিকিৎসা, কৃষি, ইলেক্ট্রনিক্স ইত্যাদি প্রযুক্তির বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে ধারনা পাইছি।

প্রশ্নঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে এমন কোনো প্রশ্ন মাথায় আছে যার উত্তর এখনো মেলে নি? নিচে লিখে ফেলো তোমার প্রশ্ন, যাতে হারিয়ে না যা! পরে নিশ্চয়ই কখনো না কখনো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর তুমি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবে।

উত্তরঃ ১. নিউক্লিয়ার বোমা কীভাবে কাজ করে? যার ফলে বিদ্যুৎ তৈরি হয় আবার এই বোমাকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ মুহুতেই চলে যায়।

Leave a Comment