ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ অন্যতম। নামাজের মধ্যে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল নামাজ রয়েছে।
রমজান মাসে রাতের বেলায় আদায় করা তারাবির নামাজ একটি বিশেষ ইবাদত।
কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, তারাবির নামাজ কি সুন্নত, নাকি নফল? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
তারাবির নামাজের পরিচিতি
তারাবির নামাজ হলো রমজান মাসে এশার নামাজের পর আদায় করা বিশেষ নামাজ, যা সাধারণত ২০ রাকাত হয়ে থাকে। এটি জামাতে পড়া সুন্নাত এবং একা পড়াও বৈধ।
এই নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের পাশাপাশি রমজানের বরকতও পেয়ে থাকে।
তারাবির নামাজের হুকুম
১. সুন্নতে মুআক্কাদা
বেশিরভাগ ইসলামি ফিকহ বিশেষজ্ঞ ও মাজহাব অনুযায়ী, তারাবির নামাজ সুন্নতে মুআক্কাদা। অর্থাৎ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে নিয়মিত আদায় করেছেন এবং উম্মতকে আদায়ের তাগিদ দিয়েছেন।
২. হানাফি মাজহাবের মতামত
হানাফি মাজহাব অনুযায়ী, তারাবি সুন্নতে মুআক্কাদা, যা নিয়মিত আদায় করা উচিত। এটি ফরজ না হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত, যা রাসুল (সা.) নিজে করেছেন এবং সাহাবাদের মাধ্যমে প্রচলিত হয়েছে।
৩. শাফেয়ি, মালিকি ও হাম্বলি মাজহাবের দৃষ্টিভঙ্গি
এই তিন মাজহাবের অনুসারীরাও তারাবিকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলে মনে করেন। তাঁদের মতে, এটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা তিনি স্বয়ং আমল করেছেন এবং সাহাবাদেরও করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
৪. নফল নামাজ হিসেবে মতামত
কিছু আলেম মনে করেন, তারাবির নামাজ সুন্নত হলেও এটি নফল ইবাদতের পর্যায়ে পড়ে। অর্থাৎ কেউ না পড়লে গুনাহগার হবে না, তবে এটি পড়লে বিপুল সওয়াব পাওয়া যাবে।
তারাবির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
১. হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের নিয়তে রমজানে কিয়াম (তারাবি) আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, মুসলিম)
2. সাহাবারা নিয়মিত তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করতেন।
3. এই নামাজের মাধ্যমে কোরআন তিলাওয়াত শোনার সুযোগ হয়।
তারাবির নামাজ সুন্নতে মুআক্কাদা, যা রাসুল (সা.) নিয়মিত আদায় করেছেন এবং উম্মতকে আদায়ের জন্য উৎসাহিত করেছেন। এটি নফল নয়, বরং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত।
সুতরাং বলা যায় তারাবির নামাজ সুন্নত।
তাই রমজানের বরকত অর্জন এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তারাবির নামাজ নিয়মিত আদায় করা উচিত।