এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর বিষয় বাংলা এর ষষ্ঠ অধ্যায়, সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি সম্পর্কে।
১ম পরিচ্ছেদ
কবিতা
কবিতা পড়ি ১
বুঝে লিখি
‘মাঝি’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।
উত্তর: মাঝি’ কবিতাটিতে একটি শিশুর সরল মনের ইচ্ছের কথা প্রকাশ পেয়েছে। শিশুর বাড়ির কাছেই রয়েছে একটি নদী।
সেই নদীর ওপারে সারি সারি করে নৌকা বাঁধা থাকে বাঁশের খোঁটায়। কৃষকেরা লাঙল কাঁধে করে নদী পার হয়ে যান, জেলে নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরেন। রাখাল ছেলে গরু-মহিষ সাঁতরে নিয়ে নদীর ওপারে যায়। এসব দেখে শিশুটিরও ইচ্ছা করে নদীর এই পারে যেতে। তার ইচ্ছা হয়, সে যখন বড়ো হবে, তখন সে এই খেয়াঘাটের একজন মাঝি হবে। কেননা, তাহলেই সে নদীর অন্য পারে যেতে পারবে। নদীর অপর পারের প্রকৃতি তার মনে কৌতূহল জাগায়। সে শুনেছে, নদীর একধারে একটি জলার মতো আছে, সেখানে বর্ষা শেষে চখাচখীর সমাগম ঘটে। পাশেই শরবনে বাসা বেঁধেছে মানিকজোড় পাখি। রয়েছে কাদাখোঁচা পাখির পায়ের চিহ্ন। শিশুটি ছাদে দাঁড়িয়ে প্রায়ই তন্ময় হয়ে সেখানকার কাশবনের জোছনা দেখে। সে মনে মনে ভাবে, যখন সে খেয়াঘাটের মাঝি হবে, নদীর ঘাটে থাকা স্নানরত শিশুরা তাকে অবাক হয়ে দেখবে। সন্ধ্যা হলে সে ঘরে ফিরে আসবে, বাবার মতো বিদেশে কাজ করতে যাবে না। মায়ের কাছে শিশুটি আবেদন জানায়, সে বড়ো হয়ে খেয়াঘাটের মাঝি হবে।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘মাঝি’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
উত্তর: ‘মাঝি’ কবিতার সঙ্গে আমার জীবনের মিল হলো ছোটোবেলায় আমি একজন ফেরিওয়ালা হতে চাইতাম। ফেরিওয়ালা বিচিত্র ধরনের জিনিস বিক্রি করেন। যা দেখে আমার মনে হতো, তাঁদের কোনো আশ্চর্য ক্ষমতা আছে। ফেরিওয়ালা হতে পারলে আমারও তা থাকবে। এই ধরনের বিচিত্র ইচ্ছার পাশাপাশি ‘মাঝি’ কবিতায় যে প্রাকৃতিক পরিবেশের বিবরণ দেওয়া হয়েছে, আমাদের বাড়ির পরিবেশের সঙ্গে মিল রয়েছে। আমাদের বাড়ি থেকে অদূরেই রয়েছে একটি নদী। নদীকে ঘিরে সেখানকার মানুষের জীবন আবর্তিত হয়। ‘মাঝি’ কবিতায় সেসব পেশার মানুষের কথা বলা হয়েছে, তাঁরা সবাই আমার চারপাশেও রয়েছেন। চাষি, রাখাল, জেলে সবাই আছেন এখানে। নদীর পারে কাশবন, পাখির আনাগোনা, আর ছেলেমেয়েদের নদীর পানিতে ঝাঁপ দেওয়া আমার খুব পরিচিত একটি দৃশ্য। ‘মাঝি’ কবিতার সঙ্কো আমার চারপাশ ও লিখিত বিষয়গুলোতে আমি মিল খুঁজে পেয়েছি।
মিল-শব্দ খুঁজি
উত্তর:
শব্দ | মিল-শব্দ |
১. ছেলে | খেলে, গেলে, জেলে, ঠেলে, তেলে, পেলে, ফেলে, বেলে, মেলে, রেলে, হেলে |
২. মেয়ে | খেয়ে, গেয়ে, চেয়ে, ছেয়ে, নেয়ে, ধেয়ে, পেয়ে, বেয়ে, যেয়ে |
৩. ঘর | কর, চর, জ্বর, ডর, নর, দর, ধর, পর, বর, ভর, মর, শর, সর |
৪. যত | কত, ক্ষত, গত, তত, থতমতো, নত, মত, যত, শত, হত |
৫. তখন | কখন, যখন, এখন, মাখন |
৬. পার | কার, ক্ষার, চার, ছারখার, তার, দ্বার, ধার, পার, বার, বারবার, ভার, মার, যার, সার |
৭. আঁধার | বাধার, সাধার, দাদার, কাঁদার, কাদার, চাঁদার |
৮. জাল | কাল, খাল, গাল, চাল, ছাল, ডাল, তাল, খাল, পাল, ফাল, শাল, সাল, হাল |
৯. বাঁশ | আঁশ, কাশ, ঘাস, চাস, চাষ, ঠাশ, তাশ, দাস, নাস, পাশ, ফাঁস, মাস, লাশ, শাঁস, হাস |
১০. জলা | কলা, গলা, চলা, ছলাকলা, ডলা, তলা, দলা, নলা, ফলা, বলা, মলা, শলা |
১১. দিন | ঋণ, চিন, জিন, টিন, তিন, তাধিন ধিন, নিন, পিন, বীণ, বিলীন, হীন |
১২. আসে | কাশে, ঘাসে, চাষে, তাসে, দাসে, নাশে, পাশে, বাঁশে, ভাসে, মাসে, লাশে, শাঁসে, হাসে |
কবিতা পড়ি ২
বুঝে লিখি
‘ময়নামতীর চর’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।
উত্তর: ময়নামতীর চর’ কবিতায় ময়নামতীর চরকে ঘিরে যে প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আলোচ্য কবিতায় এই চরকে ঘিরে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর প্রাত্যহিক জীবনের ব্যস্ততার চিত্র ফুটে উঠেছে। একটি মৃতপ্রায় নদীর চরে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সহাবস্থান। সেখানে জেগে ওঠা চরে কৃষক যেমন জমিতে চাষ করেন, তেমনি কুমিরের মতো ভয়ংকর প্রাণীরা রোদ পোহায়। গাঙচিল মাছ ধরে, মাঠে গরু চরে বেড়ায়। নদীর বুক চিরে জেগে ওঠা এই নতুন চরে কেউ কেউ আবার কলাই আর আখ চাষ করেন। আখের খামার বুনো শূকরের কবল থেকে রক্ষা করতে রাত জেগে তাঁরা পাহারা দেন। বস্তুত, ময়নামতীর চর মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর জীবন ও জীবিকার সলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবুও তাদের মধ্যে কোনো কলহ নেই। রয়েছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘ময়নামতীর চর’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
উত্তর: ময়নামতীর চর’ কবিতাটিতে বর্ণিত প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কর্মপ্রণালির সঙ্গে আমাদের গ্রামীণ জীবনের সাদৃশ্য খুঁজে পাই। ময়নামতীর চর’ কবিতায় বর্ণিত দৃশ্যের মতো আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে একটি নদী বয়ে গেছে। আগে এটি একটি খরস্রোতা নদীয়া থাকলেও বর্তমানে এই নদী তার নাব্যতা হারিয়েছে। নদীর কিছু কিছু অংশে চর জেগে উঠেছে। বর্ষাকাল ছাড়া এই নদীতে পানি থাকে না খুব একটা। নদীর কিনারে কৃষকেরা ধান চাষ করেন, জেগে ওঠা চরে অন্যান্য ফসল চাষ করা হয়। ফসল চাষের পাশাপাশি তা একটি গো-চারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নদীর চরে তরমুজ, শীতকালীন সবলি ও গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য সবজি চাষ করা হয়। চাষ করা ফসল বন্য প্রাণী ও ইদুরের উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে ঠকঠকির ব্যবহার করা হয়। ঠকঠকি হলো এক ধরনের ঘণ্টা, যা দূর থেকে সুতার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ‘ময়নামতীর চর’ কবিতায় বর্ণিত প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে আমাদের এলাকার শান্ত নদীর চারপাশের মিল খুঁজে পাই আমি।
কবিতা পড়ি ৩
বুঝে লিখি
‘নোলক’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।
উত্তর: নোলক’ কবিতায় মা ও মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা মায়ের নোলক রূপকের মাধ্যমে ফুঠে উঠেছে। কবি এ দেশের হারানো ঐতিহ্য খুঁজতে বের হয়ে প্রাকৃতিক সম্পদের ঐশ্বর্য খুঁজে পেয়েছেন। প্রথমেই এসেছে এদেশের নদীর কথা। নদী তার সমৃদ্রির উদাহরণ দিয়েছে বোয়াল মাছের প্রাচুর্যকে সামনে এনে। নদীর মনোহর প্রকৃতি ও সমৃদ্ধতার মাঝেও সেই ঐতিহ্য খুঁজে না পেয়ে কবি যখন বনের দিকে গেলেন, তখন তাঁর সঙ্গে দেখা হলো সবুজ টিয়ের। বাংলার পাখপাখালির রূপ অদ্বিতীয় হলেও সেখানেও তিনি তাঁর মায়ের গয়না খুঁজে পাননি। আবার যখন পাহাড়ের কাছে গেলেন। তখন পাহাড়ও তার ভান্ডার থেকে কিছু সামগ্রী কবিকে দিতে চাইল। কিন্তু সেখানেও মায়ের সোনার নোলক খুঁজে না পেয়ে কবির মনে এক ধরনের জেদ সঞ্চারিত হলো, জন্ম নিল মায়ের গয়না ছাড়া ঘরে না ফেরার প্রত্যয়।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘নোলক’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
উত্তর: নোলক’ কবিতাটির প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে আমার চারপাশের অনেক মিল খুঁজে পাই। ‘নোলক’ কবিতায় কবি যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছেন, তা নৈসর্গিক। তিতাস নদীর বোয়াল মাছ, সাদা পালকের বক, বনের হরিৎ টিয়ে, বুনোফুল আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পাহাড়ের রূপ ফুটে উঠেছে ‘নোলক’ কবিতায়। ঠিক তেমনই আমার গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা মধুমতী নদী। যার স্নিগ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অকল্পনীয়। নদীর দুপারে ফসলের খেত। স্বচ্ছ জলে মাছের বিচরণ। বালুময় নদীতট রোদের আলোয় করে ঝিকমিক। দিনজুড়ে হাঁসেরা সেই নদীতে জলকেলি করে; যা অনিন্দ্য সুন্দর করে তোলে আমার গ্রামের পরিবেশকে।
‘নোলক’ কবিতার তিতাস নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ আর আমার গ্রামের পাশে বয়ে চলা মধুমতী নদী যেন অপার সৌন্দর্যের প্রতীক।
কবিতার বৈশিষ্ট্য খুঁজি
উত্তর:
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
১ | লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | √ | |
২ | পড়ার সময়ে কি তাল রক্ষা করতে হয়? | √ | |
৩ | লাইনগুলোতে শব্দসংখ্যা কি সমান? | √ | |
৪ | সুর করে গাওয়া হয় কি? | √ | |
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৬ | এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৭ | এখানে কোনো কাহিনি পাওয়া যায়? | √ | |
৮ | এখানে কোনো চরিত্র আছে কি? | √ | |
৯ | এখানে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কি না? | √ | |
১০ | এটি একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করা কি না? | √ | |
১১ | এর মধ্যে কোনো সংলাপ আছে কি না? | √ | |
১২ | এটি অভিনয় করা যায় কি না? | √ |
কবিতা লিখি
নমুনা উত্তর: এখানে নমুনা হিসেবে প্রখ্যাত কবি সুফিয়া কামালের লেখা ‘সাম্য’ কবিতাটি দেওয়া হলো-
সাম্য
সুফিয়া কামাল
শতেকের সাথে শতেক হস্ত
মিলায়ে একত্রিত
সব দেশে সব কালে কালে সবে
হয়েছে সমুন্নত।
বিপুলা পৃথিবী, প্রসারিত পথ,
যাত্রীরা সেই পথে,
চলে কর্মের আহ্বানে কোন
অনন্ত কাল হতে।
মানব জীবন! শ্রেষ্ঠ, কঠোর
কর্মে সে মহীমান,
সংগ্রামে আর সাহসে প্রজ্ঞা
আলোকে দীপ্তিমান।
পায়ের তলার মাটিতে, আকাশে,
সমুখে, সিন্ধু জলে
বিজয় কেতন উড়াতে মানুষ
চলিয়াছে দলে দলে।
২য় পরিচ্ছেদ
ছড়া
বুঝে লিখি
‘ঢাকাই ছড়া’ নামের ছড়াটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।
উত্তর: কবি অন্নদাশঙ্কর রায় রচিত ‘ঢাকাই ছড়া’ ছড়াটি আমাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগায়। ছড়াটিতে কবি বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন। বহতা পদ্মার বিশালতা আর আঁকাবাঁকা জলের রেখা কবিমনকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। কবি প্রাণ জুড়ানো সুমধুর বাংলা ভাষার গুণগান গেয়েছেন। স্বাধীনতাকামী বাঙালির আত্মদানে পাওয়া এই বাংলা নিয়ে তিনি গর্ব করেছেন।
বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন কবি। তিনি সিন্দুর সাথে পদ্মার বিশালতার তুলনা করেছেন। আকাশপথে দেখা পদ্মার সৌন্দর্য তাঁর হড়ায় ব্যক্ত করেছেন। গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে ভরপুর আমাদের বাংলা ভাষা খুবই শ্রুতিমধুর অনুভূত হয়েছে কবির কাছে। পাকিস্তানিদের শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস শেষে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদে ধ্বংস-বিষান্ত দেশের পুনরুদ্ধারে কবি নবীনদের আহ্বান জানিয়েছেন। কবি আশা ব্যক্ত করেছেন নতুন প্রজন্মের হাত ধরে বাংলার ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হবে।
খেয়াল করি
১. মিল-শব্দগুলো নিচে লেখো:
উত্তর:
ক্রম | শব্দ | মিল-শব্দ |
১ | ব্যাপার | পদ্মাপার |
২ | পাড়ি | রকমারি |
৩ | ছাড়া | তাড়া |
৪ | চাই | ঠাই |
৫ | নদী | অবদি |
৬ | রেখা | দেখা |
৭ | শহর | বহর |
৮ | এসে | দেশে |
৯ | আশা | ভাষা |
১০ | দর্শনে | হর্ষণে |
১১ | দিকে | লিখে |
১২ | বাজার | পাঁজার |
২. পরিবর্তিত শব্দগুলো নিচে লেখো। একইসঙ্গে শব্দগুলোর প্রমিত রূপ পাশে দেখাও। একটি করে দেখানো হলো
উত্তর:
কবিতায় ব্যবহৃত শব্দ | শব্দের প্রমিত রূপ |
আমায় | আমাকে |
পেলেম | পেলাম |
বিমানেতে | বিমানে |
গেলেম | গেলাম |
সম | সমান |
নাও | নৌকা |
বাদে | পরে |
মোদের | আমাদের |
লিখা | লেখা |
৩. ‘ঢাকাই ছড়া’ ছড়াটি পাঠের সময় কোথায় কোথায় তাল পড়ছে দাগ দিয়ে দেখাও। প্রথম চার লাইন করে দেখানো হলো।
নমুনা উত্তর:
বলছি শোনো /কী ব্যাপার
/ডাকল আমায় /পদ্মাপার
/আধা ঘণ্টা /আকাশ পাড়ি
/তারই জন্যে /কী ঝকমারি।
/অবশেষে /পেলেম হড়া
/বিমানেতে /ওঠার তাড়া।
/পেয়ে গেলেম /যেমন চাই
/বাতায়নের /ধারেই ঠাঁই।
এই কি সেই /পদ্মা নদী
/সিন্ধুসম /যার অবধি?
/আঁকাবাঁকা /জলের রেখা
/পালতোলা নাও /যায় যে দেখা।
ছড়ার বৈশিষ্ট্য খুঁজি
ছড়ার কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো
উত্তর:
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
১ | লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | √ | |
২ | পড়ার সময়ে কি তাল রক্ষা করতে হয়? | √ | |
৩ | লাইনগুলোতে শব্দসংখ্যা কি সমান? | √ | |
৪ | সুর করে গাওয়া হয় কি? | √ | |
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৬ | এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৭ | এখানে কোনো কাহিনি পাওয়া যায়? | √ | |
৮ | এখানে কোনো চরিত্র আছে কি? | √ | |
৯ | এখানে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কি না? | √ | |
১০ | এটি একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করা কি না? | √ | |
১১ | এর মধ্যে কোনো সংলাপ আছে কি না? | √ | |
১২ | এটি অভিনয় করা যায় কি না? | √ |
৩য় পরিচ্ছেদ
গান
বুঝে লিখি
কাজী নজরুল ইসলামের লেখা গানটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।
উত্তর: মোরা ঝঞ্চার মতো উদ্দাম’ গানটিতে কাজী নজরুল ইসলাম নবীন কিশোর-তরুণদের প্রাণ-চাঞ্চল্যের গুণগান গেয়েছেন। তিনি নিজেকেও নবীন প্রাণের দলে ভেবেছেন। তিনি তুলে ধরেছেন কিশোর-তরুণেরা ঝড়ের মতো উদ্দাম, ঝরনার মতো চঞ্চল। ভয়হীন বিধাতা ও প্রকৃতির মতো পরিপূর্ণ। তারা বিশাল আকাশের মতো বাধাহীন, মরু যাযাবর বেদুইনদের মতো ভ্রমণপিপাসু। তারা আইনের উর্ধ্বে, কোনো শাসন তাদের বেঁধে রাখতে পারে না। তারা স্বাধীন ও মুক্ত। সিন্ধু নদের জোয়ারের মতো উত্তাল, ঝরনার মতো উদ্দাম, মাঠের মতো প্রাণখোলা, পাহাড়ের মতো অটল, পাখির মতো স্বাধীনচেতা, হাসি গানে উচ্ছ্বসিত। তারা বনভূমির মতো ঘন সবুল, সাগরের মতো অস্ফুট মধুর ধ্বনি এবং বাধাহীন স্রোতের মতো মুক্তমনা। কবি তরুণদের জয়গান গাওয়ার পাশাপাশি জাতীয় জীবনের উন্নয়নে প্রাণোজ্বল, নির্ভীক ও আপসহীন মানসিকতা প্রত্যাশা করেছেন।
গানের বৈশিষ্ট্য খুঁজি
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
১ | লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | √ | |
২ | পড়ার সময়ে কি তাল রক্ষা করতে হয়? | √ | |
৩ | লাইনগুলোতে শব্দসংখ্যা কি সমান? | √ | |
৪ | সুর করে গাওয়া হয় কি? | √ | |
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৬ | এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৭ | এখানে কোনো কাহিনি পাওয়া যায়? | √ | |
৮ | এখানে কোনো চরিত্র আছে কি? | √ | |
৯ | এখানে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কি না? | √ | |
১০ | এটি একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করা কি না? | √ | |
১১ | এর মধ্যে কোনো সংলাপ আছে কি না? | √ | |
১২ | এটি অভিনয় করা যায় কি না? | √ |
৪র্থ পরিচ্ছেদ
গল্প
গল্প পড়ি ১
বলি ও লিখি
‘তোলপাড়’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: সাবু তার মা জৈতুন বিবিকে একদিন বিকেলে হন্তদন্ত হয়ে খবর দেয় যে, ঢাকা শহরে পাঞ্জাবি মিলিটারিরা সব মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলছে। ২৫ মার্চ রাতে এই হত্যাকান্ড শুরু করেছে। জীবিত মানুষ দেখলেই গুলি করছে। সাবুদের গ্রামের নাম গাবতলি, যা শহর থেকে ৫০ মাইল দূরে, এই গ্রামের পাশ দিয়ে জেলা বোর্ডের সড়ক চলে গেছে। শহর ছেড়ে পালানো হাজার হাজার মানুষ হেঁটে চলেছে কুমিল্লা, নোয়াখালী; ময়মনসিংহসহ নানা গন্তব্যে। তীব্র রোদে এত পথ হেঁটে পাড়ি দেওয়ায় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সাবুর মা নিজেদের কথা না ভেবে ক্লান্ত মানুষগুলোর জন্য মুড়ি ভেজে পাঠিয়েছেন সাবুকে দিয়ে। মুড়ি খাওয়া শেষ হলে সাবু তাদের পানি এগিয়ে দিয়েছে। একজন বৃদ্ধ নারী সাবুর কাজে খুশি হয়ে তাকে কিছু পয়সা দিতে চাইলেন, কিন্তু সাবু কিছুতেই তা নিতে রাজি হয়নি। বৃদ্ধমহিলা সাবুকে তাঁর ঠিকানা দিলেন, শহরে গেলে সাবু যেন তাঁর বাড়িতে যায়- এই বলে নিজে ভিড়ের মাঝে মিশে গেলেন। সেই ভিড়ে ধনী-গরিব সব মানুষই আছে। একদিন সত্তর বছরের একজন বৃদ্ধ তার তিন পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে গাবতলি গ্রাম পাড়ি দিলেন। বৃদ্ধের তিন ছেলেকেই পাকিস্তানি আর্মি মেরে ফেলেছে। সাবু ও গ্রামের অন্যরা বিভিন্নভাবে সাহায্য করে সেই পরিবারটিকে নদীর ধারে পৌঁছে দিল। বৃদ্ধ অশ্রুসিস্থ নয়নে বলেন, তারাই তাঁর ছেলে। একজন ধর্মভীরু মানুষ হিসেবে তিনি ভেবেছিলেন পাকিস্তান হলে মুসলমানদের ভালো হবে, কিন্তু তাঁর কণ্ঠে এখন কেবল দীর্ঘশ্বাস। দেশের হাজারো মানুষের এই দুঃখগাথা সাবুর মনে একধরনের ক্রোধের কান্ম দেয়, পাকিস্তানি আর্মির প্রতি ঘৃণা ও আক্রোশ তৈরি হয় তার মনে। যারা তার দেশের মানুষকে মানুষ মনে করে না, সেইসব জানোয়ারকে মোকাবিলা করার জন্য তার কিশোর মনে শুরু হয় এক আশ্চর্য তোলপাড়।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘তোলপাড়’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
উত্তর: তোলপাড়’ গল্পের সাবুর মতো আমাদের বাড়ির পাশ দিয়েও একটি বড়ো সড়ক চলে গেছে। আমাদের গ্রামেও কেউ বিপদে পড়লে সবাই মিলে তাকে সাহায্য করে। কারো বাড়িতে খাবার না থাকলে আমাদের রান্না করা খাবারের কিছু অংশ তাদের দিয়ে আসি। তোলপাড় গল্পে একজন প্রৌঢ় নারীকে সাবু পানি খাইয়েছিল। আমাদের বাড়ির পাশেই একজন বৃদ্ধা থাকেন। তাঁকে আমি প্রায়ই বাজার থেকে জিনিসপত্র এনে দিই। গ্রামের অন্য একজন নারী তাঁকে রান্নার কাজে সহায়তা করেন। এভাবে আমরা তাঁর খেয়াল রাখি।
গল্প পড়ি ২
বলি ও লিখি
‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: আকাশে তখন বিদ্যুতের ঝলকানি, মাঝে মাঝে মেঘের গর্জন, আষাঢ়ের এমন এক বৃষ্টিমুখর দিনে বড়ো ভাইয়ের সঙ্গে মৌরী বিলে মাছ ধরতে গিয়ে আবু বিশাল এক বোয়াল মাছ ধরেছিল। বর্ষাকালে মৌরী বিলে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। আবুর বড়ো ভাই সাজেদ তার বন্ধুদের নিয়ে মাছ ধরতে যায়। কিন্তু আবু ছোটো হওয়ার কারণে তাকে কখনো সঙ্গে নেয় না। সেদিন সাজেদ ও তার বন্ধুরা মাছ ধরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। আবু তাদের সরেগ যাওয়ার জন্য নৌকার পাটাতনের নিচে গিয়ে শুয়ে পড়ল। মাছ ধরতে যাচ্ছে সাজেদ, তার বন্ধু বিপুল ও বায়েজিদ আর নৌকা বাওয়ার জন্য কিষান তিনু। তারা সঙ্গে নিয়েছে হারিকেন, কয়েক ধরনের জাল ও রাতের খাবার। সন্ধ্যার আগেই তারা রওনা হয়ে গেল মৌরী বিলের উদ্দেশে। একটু পরেই শুরু হলো বৃষ্টি। বৃষ্টিতে হারিকেন প্রায় নিভে গেলে, পাটাতনের নিচে রাখা কেরোসিনের বোতল আনতে গিয়ে তারা আবিষ্কার করল আবু সেখানে ঘুমিয়ে আছে। আবুকে জাগিয়ে কিছুক্ষণ নিন্দামন্দ ও উপহাস করে, তিনুর জিম্মায় নৌকাতে আবুকে রেখে সাজেদ তার বন্ধুদের নিয়ে চলে গেল মাছ ধরতে। টিনের আংটা দিয়ে বড়শি বানিয়ে নিয়ে গিয়েছিল আবু, সজো টোপ হিসেবে তেলাপোকা। দুটো বড়শিতে তেলাপোকার টোপ গেঁথে পানিতে ফেলে দিয়ে আবু নৌকায় বসে রইল। আবু শুনেছিল বোয়াল মাছ তেলাপোকা ভালোবাসে। হঠাৎ আবুর বড়শির শলা নিচের দিকে চলে গেল, টান পড়ল ছিপের রশিতে। তিনুর সাহায্যে আবু হিল ধরে রাখল, একটু পরে একটি মাছ ধরল তারা। বিজলির আলোয় দেখতে পেল, একটি বোয়াল মাছ, যার সাইজ অনেকটা আবুরই মতন। এদিকে সাজেদরা কোনো বড়ো মাছ ধরতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে এলো। এসে বোয়াল মাছ দেখে তারা অবাক হয়ে গেল। এত বড়ো বোয়াল কে ধরল জানতে চাইলে আবু বলল সে ধরেছে।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
উত্তর: আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের মতো আমাদের বাড়ির পেছনেও একটি বিল রয়েছে। বর্ষার শেষে পানি কমে গেলে সেখানে নানা ধরনের মাছ ধরা পড়ে। বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরতে হয়। পানি বেশি থাকলে রাতের বেলায় বড়শিতে টোপ দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় সকালে গিয়ে মাছ নিয়ে আসা যায়। আবার ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের আবুর মতো ছোটোবেলায় আমার ওপরেও কেউ ভরসা করতে চাইত না। ধীরে ধীরে তাদের ধারণার পরিবর্তন হয়েছে।
গল্পের বৈশিষ্ট্য খুঁজি
উত্তর:
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
১ | লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | √ | |
২ | পড়ার সময়ে কি তাল রক্ষা করতে হয়? | √ | |
৩ | লাইনগুলোতে শব্দসংখ্যা কি সমান? | √ | |
৪ | সুর করে গাওয়া হয় কি? | √ | |
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৬ | এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা? | √ | |
৭ | এখানে কোনো কাহিনি পাওয়া যায়? | √ | |
৮ | এখানে কোনো চরিত্র আছে কি? | √ | |
৯ | এখানে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কি না? | √ | |
১০ | এটি একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করা কি না? | √ | |
১১ | এর মধ্যে কোনো সংলাপ আছে কি না? | √ | |
১২ | এটি অভিনয় করা যায় কি না? | √ |
গল্প লিখি
নিচের ফাঁকা জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। গল্পটির একটি নাম দাও।
উত্তর:
কাজির বিচার
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
রামকানাই ভালো মানুষ- নেষাত গোবেচারা। কিন্তু কুটারাম লোকটি বেজায় ফন্দিবাজ। দুইজনের দেখাশোনা, আলাপ-সালাপ হলো। কুটারাম বললে, ‘ভাই দুজনেই বোঝা বয়ে কামকা কষ্ট পাই কেন? এই নাও, আমার পুঁটলিটাও তোমায় দিই- এখন তুমি সব বয়ে নাও। ফিরবার সময় আমি বইব।’ রামকানাই ভালো মানুষের মতো দুজনের বোঝা ঘাড়ে বয়ে চলল।
গ্রামের কাছে এসে তাদের খুব খিদে পেয়েছে। রামকানাই বলল, ‘এখন খাওয়া যাক কী বলো?’ ঝুটারাম বলল, ‘বেশ তো, এক কাজ করো, খাবারের হাঁড়ি দুটোই খুলে কাজ নেই, মিছামিছি দুটোই নষ্ট হবে কেন? এখন তোমারটা থেকে খাওয়া যাক। ফিরবার সময় আমার খাবারটা খাওয়া যাবে। রামকানাই তা-ই করল। কুটারাম বলল, ‘ভাই তোমার বাড়ি কে কে আছে?’ রামকানাই তার বাবা, মা, ভাই, বোন, স্ত্রী ছেলেপিলে সকলের কথা বলতে লাগল তার মেয়ে কত বড়ো হয়েছে- তার ছেলে কী করে- সব কথা বলল। রামকানাই যত কথা বলে, কুটারাম ততই আরও প্রশ্ন করে, আর গপাগপ ভাত মুখে দেয়। রামকানাই গল্পেই মত্ত, তার যখন ছুঁশ হলো- ততক্ষণে খাবার প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
কুটারাম খাওয়াদাওয়া শেষ করে গম্ভীরভাবে ধুয়ে বলল, ‘ভাই একটি কথা। তুমি যে আমায় খাওয়ালে, সে এমন বিশ্রী রান্না যে কী বলব! তুমি এমন খারাপ লোক, তা আমি জানতাম না। নেহাত তুমি বন্ধু লোক, তোমায় আর বেশি কী বলব, কিন্তু এরপর আর তোমার সজো আমার ভাব রাখা চলে না। আমি চললাম।’ এই বলে সে ভরা হাঁড়ি কাঁধে নিয়ে হনহন করে চলে গেল। সন্ধ্যার সময় পেটে খিদে নিয়ে এতখানি পথে হেঁটে কী করে সে বাড়ি ফিরবে- তা ভেবে কাঁদতে লাগল।
এমন সময় কাজির পেয়াদা সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। সে রামকানাইকে বললে, ‘কাঁদো কেন?’ রামকানাই তাকে সব কথা বলল। পেয়াদ বলল, ‘এই কথা। চলো দেখি কাজি সাহেবের কাছে। তিনি এর বিচার করেন।’ কাজির কাছে হাজির হতেই হুজুর বললেন, ‘কী চাও?’ রামকানাই তাঁকেও সব শোনাল। কাজি শুনে বললেন, ‘হা হা হা হা হা। এমন মজা তো কখনো শুনিনি! আরে, তোকে দিয়ে জিনিস বইয়ে, আবার তোরই ভাত খেতে গেল? তোর আক্কেল ছিল কোথায়? হা হা হা- বোলাও কুটারামকো।’ পেয়াদা ছুটল- তিন মিনিটের মধ্যে ঝুটারামের ঝুঁটি ধরে কাজির সামনে দাঁড় করাল।
কাজি বললেন, ‘আরে দাঁড়াও দাঁড়াও। মোড়লকে ডাকো, শেঠজিকে ডাকো, কোটাল বদ্যি গুরুমশাই ঢাক পিটিয়ে সবাইকে ডাকো, এমন মজার কথাটা সবাই এসে শুনে যাক।’ দেখতে দেখতে ঘর ভরিয়ে ভিড় জমিয়ে লোকের দল হাজির হলো। তখন কাজি বললেন, ‘বাবা কুটারাম, এবার তুমি বলো দেখি, তোমাতে আর এতে কী হয়েছিল। ফুটারাম ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললে, ‘দোহাই হুজুর, আমি কিছুই জানি না। ঐ হতভাগা আমায় ভুলিয়ে খানিকটা খাবার খাইয়েছিল- সেই থেকে আমার মাথা ঘুরছে আর গা কেমন করছে।’ এই কথা শুনে রেগে চিৎকার করে কাজি বললেন, ‘পাজি, আমার মজার গল্পটা মাটি করলি। খাবার খেলি আর মাথা ঘুরল, এ কি একটা কথা হলো? পেয়াদা, দেখো তো ওর কাছে কী আছে। সব কেড়ে রাখো। ব্যাটার গল্পের মধ্যে যদি একটু রস থাকে। ওসব ঐ রামকানাইকে দিয়ে দে। ও যা বলছে সত্যি হোক, মিথ্যা হোক, তার মধ্যে মজা আছে। আরে- হা-হা-হা-হা-হা-হা।
যাচাই করি
তোমার লেখা গল্প থেকে নিচের বিষয়গুলো খুঁজে বের করো এবং লেখো:
১. কাহিনী (মূল কাহিনী): রামকানাই ও কুটারাম একদিন ভারি বোঝা কাঁধে করে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। কুটারাম অনেক চালাক, সে রামকানাইকে বলল যে, দুজনেরই বোকা বয়ে কি দরকার, এখন রামকানাই বয়ে নিক, সে যাওয়ার সময় সব বোঝা বয়ে নিয়ে যাবে। রামকানাই তা-ই করল। খাবার সময় কুটারাম বলল যে এখন যেকোনো একজনের খাবার তারা দুই জন মিলে খাবে, পরে ফেরার সময় তার খাবারটা ভাগ করে খাবে। কুটারাম রামকানাইয়ের খাবার খেয়ে শেষ করে বলল, রামকানাইয়ের খাবার ভালো নয়, এই বলে সে রামকানাইকে ফেলে চলে গেল। এদিকে রামকানাই কাঁদতে লাগল। তখন কাজির পেয়াদা তাকে দেখে কাজির কাছে নিয়ে গেল। কাজি রামাকানাইয়ের গল্পে খুব আনন্দ পেলেন। পেয়াদা দিয়ে কুটারামকে ধরিয়ে আনলেন। কুটারামের মুখে কাহিনি কাজির ভালো না লাগায় কাজি কুটারামের সব জিনিস কেড়ে নিলেন। ঝুটারাম তার কর্মের জন্য শাস্তি পেল।
২. চরিত্র (কয়েকটি চরিত্রের নাম): রামাকানাই, কুটারাম, কাজির পেয়াদা, কাজি।
৩. সংলাপ (যদি থাকে, তার দু-একটি নমুনা): তখন কাজি বললেন, ‘বাবা কুটারাম, এবার তুমি বলো দেখি, তোমাতে আর এতে কী হয়েছিল?
কুটারাম ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললে ‘দোহাই হুজুর, আমি কিছুই জানি না। ঐ হতভাগা আমায় ভুলিয়ে খানিকটা খাবার খাইয়েছিল-
সেই থেকে আমার মাথা ঘুরছে আর গা কেমন করছে।
এই অধ্যায়ের পরবর্তী অংশের সমাধান পেতে নিচের নিংকে ক্লিক করুন:
👉 সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি – ( শেষ অংশ) সমাধান | বাংলা – ৬ষ্ঠ অধ্যায় | সপ্তম শ্রেণী