এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর বিষয় জীবন ও জীবিকা এর ষষ্ঠ অধ্যায়, দশে মিলে করি কাজ সম্পর্কে।
পল্লবী ও তার দলের কৃতিত্ব’ গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর
উত্তর:
পল্লবীরা খেলার জায়গা উদ্ধারে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিল? | পল্লবীরা খেলার জায়গা উদ্ধারে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল- > সবাই একসাথে আলোচনা করেছিল। > কেন বাউন্ডারি দেওয়া হচ্ছে? কে দিচ্ছে? লাভ কী এতে? এসব প্রশ্ন বিশ্লেষণ করেছিল। > সবার মতামত ও বুদ্ধি আদান প্রদান করেছিল। > সবার পরামর্শ অনুযায়ী আগে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কয়েকজনকে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। > আগের ঘটনা থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে কমিশনারকে জানিয়েছিল। > কমিশনারের সাথে বিপক্ষ দলের তর্ক বিতর্ক হলে আশেপাশের গণ্য মান্য ব্যক্তিদের ডেকেছিল। > সালিশে ডাকা হলে কি প্রশ্ন হতে পারে, কি উত্তর দিবে তা ভেবে রেখেছিল। > যুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে সালিশে জয়ী হয়েছিল এবং জায়গা ফিরে পেয়েছিল। |
পল্লবী ও তার দলের কী কী দক্ষতা সমস্যাটির সমাধানে ভূমিকা রেখেছে? | পল্লবী ও তার দলের যে দক্ষতাগুলো সমস্যাটির সমাধানে ভূমিকা রেখেছে- > সমস্যা অনুধাবনের দক্ষতা। > সমস্যার পিছনে কারণ খোঁজার দক্ষতা। > যুক্তির মাধ্যমে সকলের আলোচনা এবং পরামর্শ দেওয়ার দক্ষতা। > তথ্য সংগ্রহ করা। > ভবিষ্যতে কী হতে পারে ভেবে আগে থেকে প্রস্তুত থাকা। > অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর দক্ষতা। > যুক্তি দিয়ে নিজেদের অধিকার আদায় করার দক্ষতা। |
সমস্যা-১’ ও ‘সমস্যা-২’ এর সমাধান
উত্তর:
সমস্যা-১ | সমস্যা-২ |
> শিপ্রা ও তার মায়ের সাথে কথা বলে উভয়পক্ষের মতামত শুনবো। > শিপ্রাকে মায়ের চিন্তা করার যৌক্তিকতা বুঝাবো। তাকে মায়ের কথামতো চলার এবং সম্মান করার উপদেশ দিবো। > মাকে বুঝাবো যে রাগে শিপ্রার স্কুলে যাওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। > পড়াশোনা বন্ধ করলে কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে তা নিয়ে আলোচনা করব। > শিপ্রার উদাসীন আচরণ পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করব। > মাকে বুঝাবো, যে শিপ্রার সাহায্য প্রয়োজন। তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে তাকে সাহায্য করার পরামর্শ দিবো। | > সজীবের বাবা-মাকে শান্তনা দিবো। তাদের ধৈর্য্য ধরতে বলব। তাদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনবো। > সজীবের সাথে ধৈর্য্য সহকারে কথা বলবো। ওকে বুঝাবো যে ও আগে থেকে অনেক বদলে গেছে এবং তা ওর জীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। > তাকে মনে করিয়ে দিবো সে এক সময় খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। এখন মোবাইল, টিভি, গেইমের প্রতি আসন্তি তার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। পড়ালেখায় অমনযোগী করছে। > তার জীবনযাপনে যে বিশৃঙ্খলা এসেছে তাতে তার যে ক্ষতি হতে পারে তা সম্পর্কে সতর্ক করব। প্রয়োজনে মোবাইল গেইমমস-এ আসন্ত কারো খারাপ পরিণতির কথা তাকে জানাবো। মোবাইল আসক্তির ভয়াবহ পরিণতি আলোচনা করব। > তার পরিবার তার জন্য চিন্তিত। তাদের মানসিক পরিস্থিতি সজীবকে বুঝাবো যেন সে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে। > প্রতিবেশী হিসেবে তাকে মাঠে খেলতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাবো। একসাথে খেলাধুলা করলে সে আসক্তি থেকে দূরে থাকবে পারবে। তার শরীর ও মন ভালো থাকবে। |
দলগত কাজ
সমস্যা ১ ও সমস্যা ২ এর জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের রিহার্সেল হিসেবে কয়েকটি কথোপকথনের দৃশ্য সাজাও। দলে ভাগ হয়ে শিপ্রা ও সজীবের সঙ্গে কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিপ্ট বানাও এবং তা ভূমিকাভিনয় করে দেখাও।
সমস্যা-১: শিপ্রা ও তার মায়ের সঙ্গে কথোপকথন
মায়ের সাথে আলোচনা | আগ্রহ নিয়ে উভয়ের কথা শোনা; পড়াশোনা বন্ধ করে দিলে তার প্রভাব কী হতে পারে নিয়ে আলোচনা করা; শিপ্রার আচরণ কীভাবে পরিবর্তন করা যায়; মা কীভাবে শিপ্রাকে সহযোগিতা করতে পারেন ইত্যাদি।। শিপ্রার বন্ধু: আসসালামু আলাইকুম আন্টি, ভালো আছেন? শিপ্রার মা : ওয়া আলাইকুমুস সালাম। হ্যাঁ ভালো আছি। এসো, বসো। শিপ্রার বন্ধু: আন্টি শিপ্রা কয়েকদিন যাবৎ স্কুলে আসছে না তাই ওর খোঁজ নিতে এসেছি। শিপ্রার মা: বাবা, শিপ্রা আর স্কুলে যাবে না। আমার কোনো কথা সে শুনে না। আমাকে না বলেই অনুষ্ঠানে চলে গিয়েছে। ও কোথায় ভেবে আমি সেদিন খুবই চিন্তিত ছিলাম। এটা নিয়ে কিছু বলতে গেলে ঝগড়া করলো। ওর বাবা নেই। ওর এই খামখেয়ালীতে বড় কোনো বিপদে পড়লে আমি একা কিভাবে সামলাবো? তাই এভাবে শিপ্রার স্কুলে যেতে হবে না। বাসায়ই থাকুক। শিপ্রার বন্ধু: দুঃখিত আন্টি, ওর বলে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এজন্য পড়ালেখা বন্ধ করলে ওর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। বর্তমানে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ওকে পড়তে দিন আন্টি। শিপ্রার মা: আমিতো চাই ও ভালো থাকুক। কিন্তু ও আমার কথামতো চলছে না, কোথায় যাচ্ছে জানাচ্ছে না। এভাবে ও বাইরে থাকলে আমি দুশ্চিন্তায় থাকি। শিপ্রার বন্ধু: এবার ওকে মাফ করে দিন। আমরা ওর সাথে কথা বলবো। আর ও সবকিছুতেই কিছুটা উদাসীন থাকে। আপনার একটু সহায়তা পেলে ও ঠিক হয়ে যাবে। শিপ্রার মা: ঠিক আছে। তোমরা যখন বলছো, আমি এবার ওকে যেতে দিলাম। কিন্তু ওকে একটু বুঝিয়ে বলো। শিপ্রার বন্ধু: ধন্যবাদ আন্টি। আমরা ওকে বুঝাবো। ও আর এমন করবে না। |
শিপ্রার সাথে আলাপ | শিপ্রার বন্ধু: কেমন আছো শিপ্রা? শিপ্রা : এইতো, ভালো আছি। তোমরা কেমন আছো? শিপ্রার বন্ধু: ভালো নেই। তুমি স্কুলে আসো না। আমরা সবাই তোমাকে নিয়ে ভাবি। কেন এমন করছো? শিপ্রা: : মা আমাকে স্কুলে যেতে দিবে না বলেছে। শিপ্রার বন্ধু: তুমিও তো আন্টিকে না জানিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়ে ভুল করেছো। দেখো, আন্টির তুমি ছাড়া কে আছে? তাই তো তিনি তোমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। তুমি তাকে বলে গেলেই এসব সমস্যা হতো না। শিপ্রা: হ্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছি। আমার জানানো উচিত ছিলো। কিন্তু মা আমাকে অনেক বকেছে। শিপ্রার বন্ধু: তিনি তোমার মা। ভুল করলে বকা দিতেই পারেন। তার সাথে তোমার ঝগড়া করা উচিত হয়নি। তাকে সম্মান করা উচিত। তিনি একা তোমাকে মানুষ করছেন। পড়ালেখা বন্ধ করার কথার তোমার ভাবাও উচিত হয়নি। তিনি তো রাগ করে বলেছেন। শিপ্রা : না। আমিও চাই না পড়াশোনা বন্ধ করতে। আসলেই আমি শুধু শুধু রাগ করেছিলাম। শিপ্রার বন্ধু: এখন আন্টির কাছে গিয়ে মাফ চাও। বলো আর এমন হবে না। তিনি অবশ্যই তোমাকে আবার স্কুলে যেতে অনুমতি দিবেন। শিপ্রা: ধন্যবাদ আমাকে বোঝানোর জন্য। আমি তাই করবো। শিপ্রার বন্ধু: চলো, তোমার মায়ের কাছে যাই শিপ্রা: হ্যাঁ, চলো। |
একসঙ্গে উভয়ের সাথে কথোপকথন | শিপ্রার বন্ধু: আন্টি, শিপ্রা আপনাকে কিছু বলতে চায়। শিপ্রা: মা, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি আর তোমাকে না জানিয়ে কোথাও যাবো না। আর এতো রাত করে বাসায় আসাও আমার ঠিক হয়নি। শিপ্রার মা: আমি তোমাকে কোথাও যেতে মানা করিনি। বন্ধুদের সাথে খেলবে, অনুষ্ঠানে যাবে। সব ঠিক আছে। কিন্তু বলে গেলে আমি দুশ্চিন্তা করতাম না। তাছাড়া এত রাত পর্যন্ত বাসার বাইরে থাকা তোমার উচিত হয়নি। তুমি ছাড়া আমার আর কে আছে? শিপ্রা: হ্যাঁ মা, আমি ভুল করেছি। আবার তোমার সাথে রাগও করেছি। এরপর থেকে আমি খেয়াল রাখবো। আর এমন হবে না। শিপ্রার বন্ধু: হ্যা আন্টি, ও অনুতপ্ত। ওকে মাফ করে দিন। শিপ্রার মা: ঠিক আছে, আমিও চাই তুমি স্কুলে যাও। আমাকে তোমার বন্ধু ভাবতে পারো। আমি চাই তুমি কোনো সমস্যায় পড়লে যেন সবার আগে আমাকে জানাও। শিপ্রা: হ্যাঁ মা, আমি তোমাকেই জানাবো। শিপ্রার বন্ধু: আন্টি, আপনি আমাদের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা অবশ্যই শিপ্রার তথ্য দিয়ে আপনাকে সাহায্য করবো। শিপ্রার মা: ধন্যবাদ। |
সমস্যা-২: সজীব ও তার পরিবারের সঙ্গে কথোপকথন
মায়ের সাথে আলোচনা | স্বপন : আসসালামু আলাইকুম আন্টি। সজীবের মা: ওয়া আলাইকুমুস সালাম। কেমন আছো স্বপন? স্বপন : জি আন্টি ভালো। আপনি কেমন আছেন? সজীবের মা: ঠিক আছি। কিন্তু সজীবকে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি। স্বপন : আমি ব্যাপারটা জানতে পেরেছি। সজীবের ব্যাপারটি শুনে খুবই মন খারাপ হলো। সজীবের মা: সজীব আজকাল টিভি, মোবাইল ফোন, গেমস নিয়ে পড়ে থাকে। পড়াশুনায় ভীষণ অমনযোগী হয়ে পড়েছে। আমাদের সাথে একেবারেই কথা বলে না। অকারণে সবার সাথে দুর্ব্যবহার করে। খাওয়া গোসল নিয়মিত করে না। সজীবকে নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। স্বপন : জি আন্টি। বিষয়টা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতোই। সজীবের মা: আমরা তো সজীবকে বিভিন্নভাবে বোঝানের চেষ্টা করেছি। কোন পরিবর্তন হয়নি। বরং দিনের পর দিন। সজীবের অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে। তুমি কি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারো?’ স্বপন : আমি বুঝতে পেরেছি আন্টি। সজীবের মুতো মেধাবী ছেলে এমন হয়ে যাবে আমরাও মানতে পারছি না। আমি সজীবের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলব। সজীব কেন এমন করছে? ওর সমস্যাগুলো কি আমি জেনে নিবো। আর সজীবকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। সঙ্গীবের মা: আচ্ছা বাবা। তোমরা সজীবকে স্কুলে একটু দেখে রেখো। স্বপন : অবশ্যই আন্টি। আমি তাহলে সজীবের সাথে কথা বলে আসি। সজীবের মা: আচ্ছা যাও। |
বাবার সাথে আলোচনা | স্বপন : আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল। সজীবের বাবা: ওয়া আলাইকুমুস সালাম। কেমন আছো স্বপন? স্বপন : আমি ভালো আছি আঙ্কেল। সজীবের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। সজীবের বাবা: যাও বাবা। আমরা সবাই সজীবকে নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন। আমি নানাভাবে সজীবকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। আজকাল স্কুল থেকেও সজীবের নামে অভিযোগ আসছে। স্বপন : আঙ্কেল ভেঙ্গে পড়বেন না। আমরা সবাই সজীবের পাশে থাকবো। ওকে বোঝানোর চেষ্টা করব। সজীবের বাবা: আজকাল সজীবের আচরণে আমরা খুবই ব্যথিত। তোমার আন্টি এ নিয়ে কান্নাকাটি করে। তোমরা সজীবের বন্ধু। তুমি সজীবের সাথে এ ব্যাপারে একটু কথা বলে দেখবে? স্বপন : আমি অবশ্যই সঙ্গীবের সাথে কথা বলবো। সজীবের ব্যাপারে এরপর স্কুল থেকে যেন অভিযোগ না আসে সেদিক খেয়াল রাখবো। সজীবকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো। সজীবের বাবা: আচ্ছা বাবা। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। স্বপন : আচ্ছা আঙ্কেল। |
সজীবের সাথে আলোচনা | স্বপন: হ্যালো সজীব। কেমন আছো? সজীব : ভালো। তুমি কেমন আছো? স্বপন : আমি ভালো আছি। তোমাকে নিয়ে আন্টির দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তোমার এমন আচরণে তোমার পরিবার ও আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। কি হয়েছে তোমার? বন্ধু হিসেবে আমাকে তোমার সমস্যা খুলে বলতে পারো। সজীব : আজকাল আমার পড়াশুনা করতে ইচ্ছে করে না। মেজাজ অনেক খিটখিটে থাকে। আব্বু-আম্মুর কথাও সহ্য করতে পারি না। কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। স্বপন : তোমার পরিবার অবশ্যই তোমার ভালো চায়। তোমার দুর্ব্যবহারে তারা কষ্ট পায়। তাছাড়া তুমি নাকি টিভি, মোবাইল ফোন, গেমস নিয়ে ব্যস্ত থাকো? সজীব: আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আমি এসব থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাইছি। কিন্তু পারছি না। স্বপন: তুমি মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলে। কিন্তু ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস-এ আসত্তির ফলে তুমি পড়াশনায় অমনোযোগী হয়ে গিয়েছে। স্কুলের শিক্ষকগণ তোমার নামে অভিযোগ করছে। এগুলো কি ঠিক? সজীব: আমার আসলে কিছুই ভালো লাগে না। স্বপন : তুমি এসবের প্রতি অতিরিক্ত আসন্ত হয়ে পড়েছো। যে কারণে তুমি অন্যসব বিষয়ে উদাসীন থাকো। নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া- করছো না। তুমি এভাবে চললে অসুস্থ হয়ে পড়বে। সজীব : আমি কিভাবে মুক্তি পেতে পারি? তুমি কি আমাকে কোনো পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে পারো? আমি স্বাভাবিক জীবন- যাপন করতে চাই। স্বপন: অবশ্যই বন্ধু। তুমি মোবাইল ফোন, টেলিভিশন থেকে দূরে থাকবে। বাসার সবার সাথে কথা বলবে। নিয়মিত খাওয়া করবে। বাসায় একা না থেকে আমাদের সাথে খেলাধুলা বা গল্প করবে। পরিবারের সকলের কাছাকাছি থাকবে। সজীব: ধন্যবাদ স্বপন। আমি তোমার পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করবো। স্বপন: তোমাকেও ধন্যবাদ। আজকে আসি। আবার এসে দেখা করে যাবো। |
ছয়টি ধাপে কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় তা চিত্রের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করি।
উত্তর: উপরের চিত্রটি সমস্যা সমাধানের জনপ্রিয় পদ্ধতি সলিউশন ফুয়েন্সির ৬টি ধাপকে ইঙ্গিত করে। সংক্ষেপে একে ‘সিক্স ভি’ বলে। এই ছয়টি ‘D’ উক্ত ছবির আলোকে সংক্ষেপে দেওয়া হলো:
প্রজেক্ট ওয়ার্কের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত:
উত্তর:
ভূমিকা: আমরা প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার মুখোমুখি হই। আমাদের আশেপাশের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে।
আমরা দলগত ভাবে যে কোন সমস্যা অতি সহজেই সমাধান করতে পারি।
প্রজেক্ট: বিদ্যালয় বা পরিবার বা নিজেদের বিল্ডিং বা পাড়া, এলাকার কোন একটি সমস্যা খুঁজে তা সমাধান করা।
প্রজেক্টের উদ্দেশ্য: আলোচ্য প্রজেক্টের উদ্দেশ্যগুলো হলো-
i. দলগতভাবে সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধান করা।
ii. দলগতভাবে সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে দলগত মনোভাব গড়ে তোলা।
iii. শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন
আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো খুঁজি। উপরে উল্লেখিত বিষয় অনুযায়ী আমরা নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করি-
i. বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানি না থাকা।
ii . অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন শ্রেণিকক্ষ
iii. বিদ্যালয়ে ক্যান্টিন না থাকা
iv. এলাকায় প্রচলিত কোন কুসংস্কার
নির্বাচিত প্রজেক্টের বিষয়: বিদ্যালয়ের অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন শ্রেণিকক্ষ সমস্যার সমাধান।
প্রজেক্ট বাস্তবায়নের পদক্ষেপ: এক্ষেত্রে আমরা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নিই। সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সলিউশন ফুয়েন্সি একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। আমরা সলিউশন ফ্লুয়েন্সি (Solution Fluency) পদ্ধতি অনুসরণ করে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করবো।
i. সংজ্ঞায়ন: সমস্যাটি কি প্রথমেই আমরা খুঁজে বের করেছি। আমরা আমাদের বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্নতার সমস্যাটি চিহ্নিত করেছি।
ii. আবিষ্কার করা: শ্রেণিকক্ষ অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন কেন থাকে আমরা তার মূল কারণ খোঁজার চেষ্টা করি। তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারি যে শ্রেণিকক্ষে বিন নেই। পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়মিত ক্লাসরুম পরিষ্কার করে না। এছাড়া সবাই যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে। তাই ক্লাসরুম অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে।
iii. স্বপ্ন দেখা: এ পর্যায়ে এসে আমরা সমস্যাটি কিভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। সবাই মিলে আলোচনা করে কিছু উপায় বের করলাম। যথা:
- পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে অবহিত করা;
- শ্রেণিকক্ষের জন্য কিছু বিন কেনা;
- শিক্ষককে জানানো;
- নিজেরা পরিষ্কার করা;
iv, নকশা করা: আমরা সম্ভাব্য সমাধানগুলো যাচাই বাছাই করে কিছু বিন কেনার সিদ্ধান্ত নিই। কারণ পরিচ্ছন্নতাকর্মী সবসময় পরিষ্কার করতে পারবে না। আর বিন না থাকলে এখানে সেখানে ময়লা ফেললে ক্লাসরুম অপরিষ্কারই থেকে যাবে।
v. উন্মুক্ত করা: সকল পরিকল্পনা শেষ করে আমরা সেটা শ্রেণি শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষককে জানাই। শিক্ষক পুরো বিষয়ের খুটিনাটি যাচাই করলেন। কোথাও কোন ঘাটতি আছে কিনা দেখলেন। বিন কিনতে মোট কত খরচ হবে? অর্থের যোগান কোথায় থেকে হবে? পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে নিজ কাজের প্রতি কিভাবে সচেতন করা যাবে? এসব বিষয় নিয়ে সবার সাথে আলোচনা করলেন।
vi. আলোচনা-সমালোচনা করা: এ পর্যায়ে আমরা বর্তমান পরিকল্পনার সাথে পূর্বে ক্লাসের ডিসপ্লে বোর্ড বানানোর অভিজ্ঞতার তুলনা করে নিলাম। আমরা আগের সমস্যায় নেওয়া পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন কৌশলের সাথে বর্তমানের পরিকল্পনার আলোচনা করেছিলাম।
প্রজেক্ট বাস্তবায়ন: সবকিছু যাচাই-বাছাই করে প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনীয় ফান্ড সরবরাহ করেন। তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে তার কাজ ঠিক ভাবে করার নির্দেশ দেন। আমরা কয়েকজন মিলে শিক্ষকের সাথে বাজার থেকে বিন কিনে আনি। বিনগুলো ক্লাসের সঠিক স্থানে বসিয়ে দিই। এখন সবাই বিনে ময়লা ফেলে। যার ফলে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার ও পরিছন্ন থাকে। এভাবেই আমরা সমস্যাটির সমাধান করি।
স্বমূল্যায়ন
১. কার্যকর যোগাযোগ ও সমস্যা সমাধানের কোন কোন দক্ষতা তোমার মধ্যে আছে এবং কোন কোন দক্ষতার উন্নয়ন প্রয়োজন তার একটি তালিকা প্রস্তুত করো।
উত্তর:
কার্যকর যোগাযোগের যে দক্ষতা আমার আছে | সমস্যা সমাধানের সেসব দক্ষতা আমার আছে | আমার যেসব দক্ষতার উন্নয়ন প্রয়োজন |
কার্যকর যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন দক্ষতার প্রয়োজন। যেমন: বিশ্লেষণধর্মী চিন্তন, সহযোগীধর্মী চিন্তন, প্রতিফলিত চিন্তা, দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা, মূল্যায়ন প্রভৃতি। সমস্যা বিশ্লেষণ করা, সকলের সাথে আলোচনা করার দক্ষতা আমার আছে। আগের অভিজ্ঞতার প্রতিফলনে নতুন সমস্যা সমাধানে কাজে লাগাতে পারি। দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনাও করতে পারি। তবে এই দক্ষতা উন্নয়নে আরও উন্নতি করার সুযোগ আছে। | সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সলিউশন ফ্লুয়েন্সি নামক পদ্ধতিটি বেশ জনিপ্রয়। এখানে ৬টি ধাপ সঠিকভাবে মেনে সমস্যা সমাধান। করলে তা কার্যকর হয়। যে যে দক্ষতা গুলো আমার আছে তা হচ্ছে- • সমস্যাকে সংজ্ঞায়িত করার দক্ষতা। • সমস্যার পিছনের কারণ ও জড়িত পক্ষ আবিষ্কারের দক্ষতা। • সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য উপায় ভাবতে পারা। • নকশা করে উপযুক্ত উপায় বাছাই করা। | দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার কৌশল উন্নয়নে আমার কাজ করতে হবে। কিভাবে নিজের পক্ষের যুক্তি রাখা যায়, অন্যদের থেকে বিপরীত মন্তব্য মোকাবিলা করা যায়, শান্তিপূর্ণ আলোচনা করা যায় তা জানা প্রয়োজন। এছাড়াও সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া মূল্যায়নের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনায় ঘাটতি যাচাইয়ের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতা ও বর্তমান সমস্যার সমন্বয় করার ক্ষেত্রে আরও উন্নয়ন করা প্রয়োজন। |
■ এই অধ্যায়ের যেসব বিষয় আমাকে আরও ভালোভাবে জানতে হবে তা লিখি-
উত্তর: স্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষ হতে হবে। সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে উভয়পক্ষের মন্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে যাবো। যুক্তি ও বিবেক দিয়ে দ্বন্দ্ব মেটাতে চেষ্টা করবো। এছাড়াও দক্ষতাগুলোর মাধ্যমে সমস্যা সমাধান কার্যকর হয়েছে কী না? কোনো ঘাটতি আছে কী না? ভাও মূল্যায়ন করা জানতে হবে।
■ যে কাজগুলোর নিয়মিত চর্চা আমাকে চালিয়ে যেতে হবে সেগুলো লিখি-
উত্তর: দক্ষতাগুলো নিয়মিত চর্চা না করলে তা ভবিষ্যতে প্রয়োজনে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যাবে না। নিম্নে যে কাজগুলো নিয়মিত চর্চা করতে হবে তা দেওয়া হলো:
• বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা; দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা;
• সহযোগীধর্মী চিন্তা;
• সমস্যার কারণ খোজা; প্রতিফলিত চিন্তা;
• কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে সমাধান বের করা;
• সমস্যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা