এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর বিষয় জীবন ও জীবিকা এর চতুর্থ অধ্যায়, আর্থিক ভাবনা সম্পর্কে।
রানুর গল্পটি পড়। গল্পে কত ধরনের লেনদেন রয়েছে ছকে তার তালিকা তৈরি করো। কোন কোন লেনদেনে অর্থের ব্যবহার হয়েছে তা বের করো
উত্তর: ছক ৪.১ লেনদেন
ক্রমিক নং | লেনদেনের বিবরণ | লেনদেনটিতে অর্থের ব্যবহার হলে ‘হ্যাঁ’ এবং অর্থের ব্যবহার না হলে ‘না’ লেখো। |
১ | মায়ের থেকে টিফিনের জন্য প্রাপ্ত টাকা। | হ্যাঁ |
২ | ঝালমুড়ি, জলপাই, আম-মাখা, সিভারা ইত্যাদি ক্রয়। | হ্যাঁ |
৩ | রাতুলের জন্য জন্মদিনের উপহার রং পেন্সিল ক্রয়। | হ্যাঁ |
৪ | রাতুলকে রং পেন্সিল উপহার দেওয়া। | না |
৫ | জন্মদিনের জন্য কেক ক্রয়। | হ্যাঁ |
৬ | মোমবাতি ও ফল ক্রয়। | হ্যাঁ |
৭ | বন্ধুদের থেকে জন্মদিনে উপহার পাওয়া। | না |
৮ | ট্রেন, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইডে চড়া। | হ্যাঁ |
৯ | বেলুন ও খেলনা ক্রয়। | হ্যাঁ |
১০ | শপিংমলে গিয়ে নতুন জামা ক্রয়। | হ্যাঁ |
তোমরা নিশ্চয়ই, প্রথম অধ্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, আর্থিক ডায়েরিতে প্রতি মাসের আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত লিপিবদ্ধ করছ। শিক্ষকের নির্দেশনা মেনে, গত এক সপ্তাহের আর্থিক ডায়েরি রেকর্ড অনুযায়ী নিচের ছকটি পূরণ করো।
উত্তর: ছক ৪.২ : এক সপ্তাহের পারিবারিক লেনদেনের বিবরণ।
লেনদেনের তারিখ | লেনদেনকারী | লেনদেনকৃত দ্রব্য বা সেবার বিবরণ | ক্রয় বা বিক্রয় | দ্রব্য বা সেবার পরিমাণ | প্রদত্ত/প্রাপ্ত মূল্য (টাকা) |
১৫.০২.২০২৪ | নিজে | খাতা | ক্রয় | ২টি | ৪০ |
১৬.০২.২০২৪ | বাবা | মাছ ও সবজি | ক্রয় | ২ কেজি | ৩০০ |
১৭.০২.২০২৪ | ছোট বোন | রং পেন্সিল | ক্রয় | ২ প্যাকেট | ৭০ |
১৮.০২.২০২৪ | নিজে | ফুল | বিক্রয় | ১০ টি | ৫০ |
১৯.০২.২০২৪ | মা | বিস্কুট | ক্রয় | ২ প্যাকেট | ৬০ |
২০.০২.২০২৪ | দাদা | ঔষধ | ক্রয় | ১ প্যাকেট | ২০ |
২১.০২.২০২৪ | নিজে | পতাকা | ক্রয় | ১ টি | ৫০ |
অভিভাবকের মতামত: | |||||
শিক্ষকের মন্তব্য: |
দলগত কাজ:
১। গল্পে বর্ণিত লেনদেনগুলোর তালিকা তৈরি করো।
উত্তর: গল্পে বর্ণিত লেনদেনগুলোর তালিকা তৈরি করা হলো-
ক্রমিক নং | লেনদেনের বিবরণ |
১ | বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রিকশার পরিবর্তে বাসে করে যাত্রা করা। |
২ | প্রজেক্টের জন্য একটি দোকান থেকে ৭০০ টাকার জিনিস ক্রয়। |
৩ | আরেকটি দোকান থেকে প্রজেক্টের জন্য বাকি জিনিস ক্রয় করা। |
২। প্রতিটি লেনদেনের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: উল্লিখিত লেনদেনগুলোর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হলো-
ক্রমিক নং | লেনদেনগুলোর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা |
১ | রিকশার পরিবর্তে তারা বাসে যাত্রা করেছিল। এতে করে তাদের কম ভাড়া খরচ হয়েছে। রিকশায় গেলে তাদের বেশি টাকা ভাড়া খরচ হতো। আবার, বাসে যাওয়ায় সময় কম লেগেছিল। কারণ রিকশা থেকে বাস বেশি দ্রুত চলে। তাই তারা বাসে রওনা দেয়। এটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক। |
২ | পণ্যের গুণগত মান যাচাই করে রফিকের চাচা কিছু জিনিস ক্রয় করেছিলেন। গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে তিনি দাম নির্ধারণ করেন, যা সম্পূর্ণ যৌক্তিক। |
৩ | রফিকের চাচা আরেকটি দোকান থেকে বাকি জিনিস কেনেন। কয়েকটি দোকান যাচাই করার পর তিনি বাজার দর সম্পর্কে ধারণা পান। ফলে প্রজেক্টের বাকি জিনিস স্বল্পমূল্যে আরেকটি দোকান থেকে কেনেন। এটি তার লেনদেনের যৌক্তিকতার প্রমাণ দেয়। কারণ তিনি বাজার দর থেকে বেশি মূল্যে পণ্য ক্রয় করেননি। |
৩। নিজের জীবনে অনুসরণ করার মতো কোনো শিক্ষা কি গল্পতে আছে? থাকলে তা কী?
উত্তর: নিজের জীবনে অনুসরণ করার মতো অনেক শিক্ষা এই গল্পে আছে। লেনদেন করার ক্ষেত্রে শিক্ষণীয় বিষয়গুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে। যাতায়াতে স্বল্প ব্যয় ও কম সময় প্রয়োজন এমন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। যেমন: রিকশার পরিবর্তে বাসে যাতায়াত করা। এতে করে অযথা অর্থ ব্যয় হবে না। আবার, সময়ও সাশ্রয় হবে। কোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে তার গুণগত মান যাচাই করতে হবে। ভালোমন্দ যাচাই করে ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয় করা উচিত। ন্যায্য মূল্যে পণ্য কেনার জন্য বাজারে প্রচলিত দাম জানতে হবে। সাথে পণ্যের মানও দেখতে হবে। এভাবে লেনদেন করলে অনেক অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কেনা থেকে বিরত থাকাও যৌক্তিক ক্রয়ের অন্তর্ভুক্ত। যেমন: রফিকের একটি স্কুল ব্যাগ আছে। তাই তার চাচা নতুন স্কুল ব্যাগ’ কিনে দিতে রাজি হয়নি। কারণ তা কিনলে অপচয় হতো। এভাবে যৌক্তিক লেনদেনের বিষয়গুলো গল্পে ফুটে উঠেছে।
দৃশ্যপট-১
কেনাকাটার সময় দোকানীর কথায় প্রভাবিত হওয়া উচিত কি না? উত্তর যদি ‘না’ হয়, তাহলে কেন প্রভাবিত হওয়া যাবে না?
নমুনা উত্তর: কেনাকাটার সময় দোকানীর কথায় প্রভাবিত হওয়া উচিত না। কারণ নিজের কী প্রয়োজন এবং কতটুকু প্রয়োজন তা দোকানী জানে না। কিছু কেনার সময় নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে হবে। দোকানীর কথায় প্রভাবিত হয়ে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা যাবে না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কিনলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর ফলে অপচয় হবে। তাই এ ধরনের আর্থিক লেনদেন করা যাবে না। অর্থাৎ, অপচয় থেকে বিরত থাকতে দোকানীর কথায় প্রভাবিত হওয়া উচিত না।
দৃশ্যপট-২
দেবাশিস কেনাকাটার ক্ষেত্রে কোন যুক্তিকে বিবেচনায় নিয়েছে।
উত্তর: কোনো পণ্যের মূল্য বেশি হলেই তা ভালো হবে এমন ভাবা সঠিক নয়। দেবাশিস-এই যুক্তি বিবেচনায় নিয়ে কেনাকাটা করেছে। অনেক সময় বেশি মূল্যের পণ্যও খারাপ মানের হয়ে থাকে। আবার, মোটামুটি মানের পণ্য খুব কম মূল্যে পাওয়া যায়। দেবাশিস বিভিন্ন দামের রং পেন্সিল ও রঙিন কাগজ দেখেছে। কিন্তু বেশি মূল্যের পণ্য ভালো হবে সে এমনটা চিন্তা করেনি। বরং সে যাচাই করে মোটামুটি মানের রং পেন্সিল কিনেছে। এছাড়াও সাধারণ মানের রঙিন কাগজ কিনেছে। এভাবে সে যৌক্তিকভাবে কেনাকাটা করেছে।
দৃশ্যপট-৩
কী করলে শফিককে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো না?
উত্তর: শফিক ভালোমন্দ যাচাই করে ব্যাট কিনলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতো না। কম দামে পণ্য কিনে সবসময় লাভবান হওয়া যায় না। এক্ষেত্রে পণ্যের মান ও গুণ যাচাই করতে হয়। অনেক সময় কম মূল্যের পণ্যের মান খারাপ হয়ে থাকে। এর ফলে তা বেশিদিন ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু একটু বেশি দাম দিয়ে ভালোমানের পণ্য কিনলে তা অনেকদিন ব্যবহার করা যায়। এভাবে শফিক আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পেত।
দৃশ্যপট-৪
আসলাম সাহেবের আচরণ কেনাকাটার ক্ষেত্রে সঠিক নয় কেন?
উত্তর: আসলাম সাহেব লেনদেনের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করেছেন। এর ফলে তিনি অতিরিক্ত দামে অনেক লবণ কিনেছেন। কিন্তু আর্থিক লেনদেনের সময় তাড়াহুড়ো করা উচিত না। এতে করে আর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকে। আর্থিক লেনদেনের সময় যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। লবণের ঘাটতির কথা শুনেই বেশি দামে ১০ কেজি লবণ কেনা সঠিক হয়নি। তাড়াহুড়ো না করে এরকম হুজুগ সত্যি কি না তা যাচাই করা উচিত। তাই আর্থিক লেনদেনের সময় তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়।
দৃশ্যপট-৫
আগামী বৈশাখি মেলায় তুমি যদি একটি খেলনার দোকান দাও তাহলে খেলনাগুলোর বিক্রয়মূল্য নির্ধারণে কী ধরনের কৌশল গ্রহণ করবে তা লেখো।
উত্তর: আমি খেলনাগুলোর বিক্রয়মূল্য নির্ধারণে ন্যায্য দাম রাখার কৌশল গ্রহণ করব। প্রতিটি জিনিসের গুণ ও মান অনুযায়ী একটি দাম রয়েছে। এটিই হলো ন্যায্য, সঠিক বা প্রকৃত দাম। এই দামের চেয়ে অতিরিক্ত দাম রাখা উচিত নয়। অতিরিক্ত দাম হলে তা মানুষ কিনবে না। এর ফলে পণ্যের বিক্রয় কমে যাবে। অনেক পণ্য অবিক্রিত থেকে যাবে। ফলে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে। তাই খেলনাগুলোর ন্যায্য বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এই কৌশল গ্রহণ করলে সব খেলনা বিক্রয় করা সম্ভব হবে। ফলে খেলনা বিক্রয় করে লাভ করা যাবে।
ছক ৪.৩ : পারিবারিক লেনদেনের যৌক্তিকতা
উত্তর:
ক্রমিক নং | লেনদেনের বিবরণ | ভুল মনে হবার কারণ | কী করা উচিত ছিল |
১ | বাবা দোকান থেকে বেশি দাম দিয়ে জুতা কিনলেন। | জুতা ব্যবহার করার দুইদিন পর জুতার ফিতা ছিঁড়ে যায়। | দাম বেশি বলেই জুতা ভালো হবে তা ভাবা উচিত হয়নি। জুতার মান যাচাই করে কেনা উচিত ছিল। |
২ | ছোট বোনের জন্য একটি পুতুল ক্রয়। | অতিরিক্ত দাম দিয়ে পুতুল কেনা হয়েছিল। | বাজার দর যাচাই করে পুতুল কেনা উচিত ছিল। হয়েছিল। কয়েকটি দোকানে গিয়ে বিভিন্ন পুতুল দেখে দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেত। |
৩ | অফিস থেকে ফেরার পথে বাবা তাড়াতাড়ি করে ফল ক্রয় করল। | দোকানদারকে ৬০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা প্রদান। | আর্থিক লেনদেন করার সময় তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। এতে করে ভুল হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। |
৪ | বড় শপিং মল থেকে মায়ের জন্য অতিরিক্ত দামে শাড়ি ক্রয়। | ন্যায্য দাম থেকে অতিরিক্ত দামে শাড়ি ক্রয়। | আরও কয়েকটি দোকান যাচাই করে ন্যায্য মূল্যে মূল্যে শাড়ি ক্রয় করা প্রয়োজন ছিল। |
৫ | কম দামে এক বক্স রং পেন্সিল ক্রয়। | রং পেন্সিলের মান খারাপ ছিল। | কমদামে রং পেন্সিল কেনার ক্ষেত্রে ভালোমন্দ যাচাই করা উচিত ছিল। |
৬ | উৎসবের জন্য তিনটি পোশাক ক্রয়। | তিনটি পোশাকের কোনো প্রয়োজন ছিল না। এতে অপচয় হয়েছে। | উৎসবের জন্য একটি পোশাক কেনাই যথেষ্ট ছিল। |
৭ | দোকানীর কথায় পোশাক ক্রয়। | কাপড়ের মান ভালো ছিল না। | দোকানীর কথায় প্রভাবিত না হয়ে কাপড়ের মান দেখে কেনা উচিত ছিল। |
অভিভাবকের স্বাক্ষর: | |||
শিক্ষকের মন্তব্য: |
রাজুর চায়ের দোকান
প্রশ্ন ১। কেন রাজুর বাবা অর্ধেক দামে কনডেন্স মিল্ক কিনতে রাজি হলো না?
উত্তর: রাজুর বাবা অর্ধেক দামে কনডেন্স মিল্ক কিনতে রাজি হয়নি। কারণ, কনডেন্স মিল্কগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। মেয়াদোত্তীর্ণ দুধ দিয়ে চা বানানো ঠিক নয়। এসব কনডেন্স মিল্ক দিয়ে বানানো চা বিক্রি করলে বেশি লাভ হবে। কিন্তু এতে মানুষের সাথে প্রতারণা করা হবে। তাই রাজুর বাবা অর্ধেক দামে কনডেন্স মিল্ক কিনতে রাজি হলো না
প্রশ্ন-২। অতিরিক্ত তিনটি পাউরুটির দাম দেওয়ার যৌক্তিকতা কতটুকু?
উত্তর: রাজু গুণে দেখল আজ সরবরাহকারী তিনটি পাউরুটি বেশি দিয়ে গেছে। বিষয়টি সে বাবাকে জানালো। ঘাবা বললেন পরের দিন সরবরাহকারীকে তিনটি পাউরুটির দাম দিয়ে দেবেন। অতিরিক্ত তিনটি পাউরুটির দাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক। কারণ এটি আর্থিক লেনদেনের নৈতিকতা। তাছাড়া, নৈতিকতা মেনে ব্যবসায় করলে সুনাম বৃদ্ধি পায়। ফলে বিক্রয় ও লাভ বাড়ে।
প্রশ্ন-৩। নিজের জীবনে অনুসরণ করার মতো কোনো শিক্ষা কি গল্পতে আছে? থাকলে তা কী?
উত্তর: নিজের জীবনে অনুসরণ করার মতো অনেক শিক্ষা গল্পটিতে আছে। যেমন: অধিক লাভের সম্ভাবনা থাকলেও কোনো অবস্থাতেই মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। গল্পের আরেকটি শিক্ষা হলো অতিরিক্ত লাভের আশায় প্রতারণা করা যাবে। না। কারণ লোক ঠকালে সাময়িক লাভ হতে পারে। কিন্তু এতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হয়। ফলে ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস কমে যায়। এতে ভবিষ্যতের লাভের সম্ভাবনা নষ্ট হয়। গল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হচ্ছে কারো দুর্বলতার সুযোগ না নেওয়া। কেউ ভুল করলে, ভুলের সুযোগ নিয়ে তাকে ঠকানো যাবে না। বরং দ্রুত তা সংশোধন করে দিতে হবে। অর্থাৎ, গল্পের শিক্ষা হলো আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নৈতিকতা অনুসরণ করা। তবে শুধু আর্থিক লেনদেনে নয়, জীবনের সবক্ষেত্রেই নৈতিকতার অনুসরণ প্রয়োজন।
১। এনাম সাহেবের সিদ্ধান্তকে কি তুমি সমর্থন করো? যদি হ্যাঁ হয় তাহলে কেন?
ভূমিকাভিনয়ের জন্য সম্ভাব্য দৃশ্যপট ও সংলাপ
চরিত্র- ৪টি (এনাম, রাসেল, দোকানদার, সেলসম্যান)
দৃশ্যপট-১: এনাম ও রাসেল কথা বলছে।
এনাম : বন্ধু। আমার অনেক দিনের শখ একটা স্মার্টফোন কিনব। হাজার বিশেক টাকাও জমালাম। তুমি কি জানো কোথায় ভালো স্মার্টফোন পাওয়া যায়?
রাসেল : আরে বন্ধু, কী যে বলো। বিশ হাজার টাকা দিয়ে তো তুমি ২টা ফোন কিনতে পারবা। চলো, তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাই। সেখানে তুমি কম দামে অনেক ভালো ভালো স্মার্টফোন পাবা।
এনাম : সত্যি। তাহলে চলো যাই।
দৃশ্যপট-২: চোরাই মার্কেটে এনাম, রাসেল ও দোকানদার কথা বলছে।
দোকানদার : আসেন ভাই। আসেন। কম দামে ভালো ভালো ফোন আছে। পানির দামে স্মার্টফোন নিয়া যান।
রাসেল : বন্ধু, তোমাকে এই জায়গার কথাই বলছিলাম। দেখো, কোনটা পছন্দ হয়।
দোকানদার : হ্যাঁ ভাই। দেখেন। কোনটা দিব?
এনাম : (একটা স্মার্টফোন হাতে নিয়ে ) এই ফোনটা তো দেখতে সুন্দর। ফিচারগুলোও ভালো। দাম কত?
দোকানদার : এমনে তো ১৫,৫০০ টাকায় বিক্রি করি। আপনি রাসেল ভাইয়ের সাথে আসলেন, তাই আপনার জন্য ১২,০০০ টাকা রাখব।
এনাম : অবাক হয়ে) মাত্র ১২,০০০ টাকা! অনলাইনে সাম দেখলাম ১৯,৫০০ টাকা। এখানে এত কম!
দোকানদার : ভাই! অনলাইনের ওরা তো ডাকাত। আমাদের খরচ কম। বেচা-বিক্রি বেশি। লাভ কম করলেও সমস্যা হবে না।
এনাম : মোবাইলের গ্যারান্টি/ওয়ারেন্টি কত বছর?
দোকানদার : আরে ভাই। আমি বলতেছি। ৪/৫ বছর ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারবেন। কিছুই হবে না।
এনাম : তা তো বুঝলাম। গ্যারান্টি/ওয়ারেন্টি কার্ড কই? কার্ডটা দেখি।
দোকানদার : ইয়ে। মানে ভাই। মোবাইলের বক্স আর ওয়ারেন্টি কার্ডটা এখন দিতে পারতেছি না। আপনি ফোন নিয়ে যান। কোনো সমস্যা হবে না
এনাম : (রাসেলকে) বন্ধু। আমার মনে হচ্ছে এটা চোরাই ফোন। এখান থেকে ফোন কিনব না। চলো, বের হয়ে যাই।
রাসেল : তোমার যা ইচ্ছা। চলো।
দোকানদার : (এনাম ও রাসেলকে উদ্দেশ্য করে, ওরা বেরিয়ে যাওয়ার সময়) ভাই। ভালো ফোনটা নিলেন না। পানির দরে দিতে চাইছিলাম। ঠকে গেলেন।
(এনাম ও রাসেল কিছু না বলে বেরিয়ে গেল)
দৃশ্যপট-৩: এনাম সাহেব একটি মোবাইল শো-রুমে দোকানদারের সাথে কথা বলছে
সেলসম্যান: ওয়েলকাম, স্যার। কী লাগবে বলুন?
এনাম : X ব্র্যান্ডের Y মডেলের মোবাইলটা থাকলে দেখান
সেলসম্যান: আছে স্যার। এই নিন।
এনাম : ফোনের ওয়ারেন্টি কার্ড ও বক্স আছে?’
সেলসম্যান: অবশ্যই আছে স্যার। এই যে।
এনাম : (ওয়ারেন্টি কার্ড ও বক্স যাচাই-বাছাই করে) দাম কত?
সেলসম্যান: ১৮,৯৯৯ টাকা। অনলাইনে দাম আছে ১৯,৫০০ টাকা। শো-রুম থেকে নিলে ৫০০ টাকা ছাড় দিচ্ছে কোম্পানি।
এনাম : ঠিক আছে। প্যাকেট করুন।
নমুনা উত্তর : হ্যাঁ, এনাম সাহেবের সিদ্ধান্তকে আমি সমর্থন করি। কারণ, তিনি আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নৈতিকতা অনুসরণ করেছেন। এনাম সাহেব একটি স্মার্টফোন কিনতে চান। তার বন্ধু রাসেল তাকে চোরাই ফোনের দোকানে নিয়ে গেল। যেখানে কম দামে মোবাইল বিক্রি হচ্ছে। তিনি দেখলেন ফোনগুলোর ওয়ারেন্টি কার্ড ও আসল বক্স নেই। তাই তিনি ফোন না কিনেই চলে গেলেন। পরদিন প্রকৃত দামে মোবাইলটি কিনলেন। কম দামে মোবাইল কেনার সুযোগ পেয়েও তিনি বেশি দামে কিনলেন। এক্ষেত্রে তিনি আর্থিক লেনদেনের নৈতিকতা অনুসরণ করেছেন।
২। বাসের ভাড়া প্রদান নিয়ে স্কুলের বড় ভাইয়ারা যা করেছে তা কি তুমি সমর্থন করো? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।
ভূমিকাভিনয়ের জন্য সম্ভাব্য দৃশ্যপট ও সংলাপ
চরিত্র- ৬টি (সেলিম, করিম, ৩ জন বড় ভাই, কন্ডাকটর ও চালক)
দৃশ্যপট: একটি পাবলিক বাস। অনেক ভিড়। কন্ডাকটর ভাড়া তুলছে।
কন্ডাকটর : ভাড়াটা দিয়েন ভাইয়ারা। আপুরা ভাড়াটা দিয়েন। ভাড়াটা দিয়েন।
করিম : (২০ টাকা দিয়ে) দুইজন। স্টুডেন্ট ভাড়া রাখেন।
কন্ডাকটর : আইডি কার্ডটা দেখান।
সেলিম: স্কুল ড্রেস পরে আছি। আবার আইডি কার্ড।
কন্ডাকটর: আচ্ছা। মাথা ঠিক নাই, ভাই। এই নেন ১০ টাকা। এখন ঠিক আছে?
সেলিম: হুম। ঠিক আছে।
কন্ডাকটর : ভাই ভাড়াটা দিয়েন। আপু ভাড়াটা দিয়েন।
১ম বড় ভাই: দোস্ত! কালকের ম্যাচটা দেখছিস?
২য় বড় ভাই: হ্যাঁ দোস্ত। শেষ গোলটা সেই ছিল।
কন্ডাকটর : ভাড়া দিয়েন ভাইয়ারা
৩য় বড় ভাই: পরে নেন। পিছন থেকে ভাড়া তুলে আনেন।
কন্ডাকটর : আচ্ছা। ভাড়াটা যার যার বাকি আছে দিয়ে দেন। ভাই ভাড়াটা দিয়েন। আপু ভাড়াটা দিয়েন
চালক : (বাসের গতি কমিয়ে) কদমতলা কারা নামবেন। (স্কুলের বড় ৩ ভাইসহ বাসের অনেকেই নেমে গেল)
সেলিম: (করিমকে উদ্দেশ্য করে) ভাইয়া। স্কুলের বড় ভাইয়ারা তো ভাড়া না দিয়েই নেমে গেল। দেখেছ?
করিম : হুম আমিও তাই দেখলাম। যদি বড় ভাইয়ারা ইচ্ছে করে ভাড়া না দিয়ে নেমে যায়, তাহলে এটা তারা ঠিক করেনি। কারণ, এটা আর্থিক লেনদেনে নৈতিকতার বিপরীত।
উত্তর: স্কুলের বড় ভাইয়ারা যা করেছে তা আমি একদমই সমর্থন করি না। কারণ তারা বাস ভাড়া প্রদান করেননি। এটি আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নৈতিকতার বিপরীত। তাদের উচিত ছিল বাস কন্ডাকটরকে ভাড়া দিয়ে তারপর বাস থেকে নামা। ভাড়া প্রদান না করে তারা কন্ডাকটরকে ঠকিয়েছে। ফলে আর্থিক লেনদেনের নীতি ভঙ্গ হয়েছে।
৩। লেনদেন করার সময় দোকানদার নৈতিকভাবে আর্থিক লেনদেন করার কোন কোন শর্ত ভঙ্কা করেছে?
ভূমিকাভিনয়ের জন্য সম্ভাব্য দৃশ্যপট ও সংলাপ
চরিত্র ৪টি (জামাল সাহেব, দোকানদার, আমাল সাহেবের ছেলে তানভীর ও জামাল সাহেবের শ্যালক)
দৃশ্যপট-১: জামাল সাষের দোকানে খেলনা কিনছেন।
দোকানদার: আসেন ভাই। ভালো বিদেশি খেলনা আছে। কী
জামাল সাহেব: লাগবে আপনার? রিমোট কন্ট্রোল খেলনা গাড়ি আছে?
দোকানদার: আছে অনেক ভালো মানের। এটা দেখেন বিদেশি, অরজিনাল।
জামাল সাহেব: আমার ছেলেটা একটু দুষ্টু, ভাই। জিনিস নষ্ট করে ফেলে। তাই একটু ভালো মানের নিতে চাচ্ছি।
দোকানদার: এটা ১০০% ভালো হবে। নিয়ে যান।
জামাল সাহেব: দাম কত?
দোকানদার: আপনার রুচি-পছন্দ অনেক ভালো। এটা একদম হাই কোয়ালিটির একটা গাড়ি। কোনো দামাদামি হবে না। ফিক্সড ৭৫০ টাকা। যদি বলেন এক টাকা কম দিবেন তাও দিতে পারব না।
জামাল সাহেব: আচ্ছা। প্যাকেট করে দেন।
দৃশ্যপট-২: জামাল সাহেব খেলনা গাড়ি নিয়ে বাসায় গেলেন। তার শ্যালক দরজা খুললেন।
জামাল সাহেব: আরে! শালা বাবু কখন এলে?
শ্যালক : এই তো কিছুক্ষণ আগে। এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম। ভাবলাম দেখা করে যাই।
জামাল সাহেব: খুব ভালো করেছো।
তানভীর : আব্বু! আমার জন্য গাড়ি এনেছো?
জামাল সাহেব: হ্যাঁ বাবা, এনেছি।
তানভীর : কী মজা! কী মজা! প্যাকেট খুলে দাও না।
শ্যালক : তানভীর, আমার কাছে আয় মামা, আমি খুলে দিচ্ছি। (প্যাকেট খুলে গাড়িটা হাতে নিয়ে জামাল সাহেবকে উদ্দেশ্য করে) গাড়িটা সুন্দর হইছে। কত নিল দুলাভাই?
জামাল সাহেব: বিদেশি গাড়িতো তাই দাম একটু বেশি নিল, ৭৫০ টাকা।
শ্যালক : ৭৫০ টাকা! আপনাকে তো ঠকিয়েছে দুলাভাই। এটা বিদেশি না, নকল। এই গাড়ির দাম সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা হলে ঠিক ছিল। এটাতো কয়দিন পরেই নষ্ট হয়ে যাবে।
জামাল সাহেব: দোকানদার যেভাবে বলল, আমি বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। পরবর্তীতে কিছু কেনার আগে যাচাই-বাছাই করে তবেই কিনব। আর ঐ মিথ্যাবাদী, অসৎ ও ধোঁকাবাজ দোকানদারের কাছে কখনোই যাব না।
উত্তর; দোকানদার নৈতিকভাবে আর্থিক লেনদেন করার শর্ত ভক্তা করেছে। যেমন:
১. ভুল তথ্য দিয়ে খারাপ পণ্য বিক্রয় করেছে।
২.প্রতারণা বা ঠকানোর উদ্দেশ্যে আর্থিক লেনদেন করেছে।
৩. মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে পণ্য বিক্রয় করেছে।
৪. বর্তমান আর্থিক লাভের আশায় ভবিষ্যৎ লাভের সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছে।
৪। রুবা ও রুমার জন্য কিছু পরামর্শ দাও।
ভূমিকাভিনয়ের জন্য সম্ভাব্য দৃশ্যপট ও সংলাপ
চরিত্র-৪টি (র্যবা, বুমা, মা ও দোকানদার)
দৃশ্যপট-১: রুবা,রুমা ও মা স্কুল ছুটির পর কথা বলছে।
রুমা :আম্মু, কাল তো স্কুল ছুটি। চলো না একটু খেলনার দোকানে যাই।
রুবা: হ্যাঁ আম্মু। আপু ঠিক বলেছে। চলো না খেলনা দেখতে যাই, প্লিজ।
মা: আচ্ছা চল।
দৃশ্যপট-২: রুবা, রুমা ও মা একটি বড় খেলনার দোকানে গেল
বুবা ও মা দোকানের এক পাশে খেলনা দেখছে। রুমা অন্য পাশে একটা সুন্দর সিরামিকের খেলনা দেখল। সেখানে কোনো সেলসম্যান ছিল না)
রুমা: বাহ! এই খেলনাটা তো খুব সুন্দর। একটু হাতে নিয়ে দেখিত্রে। (খেলনাটি হাত থেকে পড়ে একটি কোণা ভেঙে গেল। রুমা সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে খেলনাটি আগের জায়গায় রেখে দিল। তারপর মা আর রুবার কাছে গেল)
রুমা: এখন থেকে চলো আম্মু। একটা খেলনাও পছন্দ হচ্ছে না।
রুবা: এখানের খেলনাগুলো তো সুন্দর আপু। আরো দেখি না।
রুমা: পাশে আরো বড় একটা দোকান আছে। ওখানে সুন্দর সুন্দর খেলনা আছে। চল আমরা ঐ দোকানে যাই।
রুবা: ঠিক আছে চলো।
দৃশ্যপট-৩: রুবা, রুমা ও মা অন্য খেলনার দোকানে গেল।
রুবা: দেখো আপু, খেলনাটা কী সুন্দর! আমি এটা নেবো। প্লিজ! প্লিজ! প্লিজ!
রুমা: আচ্ছা। আম্মু দাম ঠিক করুক তাহলে।
মা : এই খেলনাটা কত?
দোকানদার : ৭০ টাকা।
মা : ৪০ টাকায় দিবেন?
দোকানদার : একদাম ৫০ টাকা হলে নেন।
মা: আচ্ছা দেন।
রুমা: না, দাঁড়ান। খেলনার লাইট জ্বলে না। আমরা এটা নিব না।
দোকানদার: এখন নিব না বললে তো হবে না আপু। কম্পিউটারে বিল লেখা হয়ে গেছে। এখন খেলনা না নিলেও টাকা দিতে হবে। আপনাদের ইচ্ছা। খেলনা নিয়ে টাকা দিবেন নাকি না নিয়ে টাকা দিবেন।
(রুমা, রুবা ও মা খেলনার মূল্য পরিশোধ করল। তিনজনই মন খারাপ করে দোকান থেকে বেরিয়ে গেল।)
উত্তর: রুমার জন্য পরামর্শ:
১. দোকানে গিয়ে কোনো জিনিসে অযথা হাত দিবে না।
২. কিছু দেখতে চাইলে দোকানদার বা বড়দের জানাবে।
৩. কোনো অন্যায় হয়ে গেলে সেটা গোপন করবে না। বরং বড়দের পরামর্শ দিবে।
রুবার জন্য পরামর্শ:
১. কোনো কিছু কেনার আগে ভালোভাবে দেখে নিবে। তারপর দাম-দর ঠিক করবে।
২. অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে কিছু কিনবে না।
ছক ৪.৪ : পারিবারিক লেনদেনে নৈতিকতা
উত্তর:
ক্রমিক নং | লেনদেনের বিবরণ | লেনদেনটি নৈতিকভাবে সম্পন্ন হয়নি মনে হবার কারণ | কী করা উচিত ছিল তা লিখ |
১ | মা রাজুকে ২০ টাকা দিয়ে বলল ১০০ গ্রাম হলুদ কিনে আনতে। রাজু ১৮ টাকা দিয়ে হলুদ কিনে আনল। কিন্তু মাকে বলল হলুদের দাম ২০ টাকা নিয়েছে। | রাজু মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে লেনদেনটি সম্পন্ন করেছে। | রাজুর উচিত ছিল মাকে হলুদের সঠিক দাম বলা এবং ২ টাকা ফেরত দেওয়া। |
২ | আফজাল সাহেব বেহিসেবি লোক। প্রতিদিনের লেনদেনের হিসাব রাখেন না। তার ছেলে আফিফ বিষয়টি ভালো করেই জানেন। একদিন আফজাল সাহেব আফিফকে বলল পকেট থেকে ৩০০ টাকা নিয়ে পত্রিকার বিল দিতে। কিন্তু আফিফ ৫০০ টাকা নিল। ৩০০ টাকা পত্রিকাওয়ালাকে দিল। ২০০ টাকা নিজের কাছে রেখে দিল। | আফিফ তার বাবার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে লেনদেনটি করেছে। | আফিফের উচিত ছিল বাবার পকেট থেকে ৩০০ টাকাই নেওয়া। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া। মোটেই ঠিক হয়নি। |
৩ | আকাশ আর সাগর চাচাতো ভাই। তারা মেলায় ঘুরতে গেল। আকাশের কাছে ১০০ টাকা ছিল। টাকাটা সে জ্যামিতি বক্স কেনার জন্য সপ্তয় করেছে। কিন্তু সাগর তাকে মেলা থেকে খেলনা কেনার জন্য প্রভাবিত করল। আকাশও প্রভাবিত হয়ে টাকা খরচ করে ফেলল। | লেনদেনটি করার ক্ষেত্রে অন্যকে প্রভাবিত করা হয়েছে। | আকাশের উচিত ছিল সাগরের কথায় প্রভাবিত না হওয়া।। সাগরের উচিত ছিল আকাশকে প্রভাবিত না করা। কারণ তার জ্যামিতি বক্স কেনা জরুরি ছিল। |
৪ | অহনাদের যৌথ পরিবার। অহনার বড় চাচা একটি ল্যাপটপ কিনতে চায়। অহনার ছোট ফুপা অর্ধেক দামে তার বড় চাচাকে ল্যাপটপ কিনে দিল। পরে জানা গেল, এটা চোরাই মার্কেট থেকে কেনা। | এখানে চুরি করা জিনিস কেনা-বেচা হয়েছে। | অহনার চাচার উচিত ছিল ল্যাপটপ কেনার আগে যাচাই- বাছাই করা। অহনার ফুপার উচিত ছিল অহনার চাচাকে নিয়ে চোরাই মার্কেটে না যাওয়া। |
৫ | ফাইলার ফুপির অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসায় আছে। ফাইজার মা ওর ফুপি থেকে ১,০০০ টাকা দিয়ে একটা শাড়ি কিনল। পরে দেখলো অন্য দোকানে শাড়িটি ৮০০ টাকা। এরপর থেকে ফাইজার মা আর ফাইজার ফুপি থেকে কিছু কিনতো না। | ফাইজার ফুপি বর্তমানে অধিক লাভের আশা করেছে। ফলে ভবিষ্যতে তার লাভের সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে। | ফাইজার ফুপির উচিত ছিল সঠিক দামে শাড়িটি ফাইজার মায়ের কাছে বিক্রি করা |
অভিভাবকের মতামত: | |||
শিক্ষকের মতামত: |
স্বমূল্যায়ন
কেনাকাটা বা লেনদেন কার্যক্রমে কোন কোন বিষয়গুলো মেনে চলব?
উত্তর:
যৌক্তিকভাবে লেনদেন করার ক্ষেত্রে যা যা মেনে চলব | লেনদেন করার ক্ষেত্রে যেসব নৈতিকতা মেনে চলব |
✓ যাচাই না করে লেনদেন করব না। ✓ মূল্য বেশি, তাই জিনিসও ভালো। এমন ভাবনা থেকে লেনদেন করব না। ✓ দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুণ ও মান যাচাই করব। ✓ ন্যায্য দামে পণ্য বা সেবা কিনব। ✓ ন্যায্য দামে কিনতে বাজার দর যাচাই করব। ✓ তাড়াহুড়ো করে আর্থিক লেনদেন করব না। ✓ অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিছু কিনব না। ✓ কমদামে কেনার ক্ষেত্রে ভালোমন্দ যাচাই করব। ✓ অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনব না। | ✓ আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতারণা করব না। ✓ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বেচা-কেনা করব না। ✓ অন্যের ক্ষতি হয় এমন লেনদেন করব না। ✓ ভেজাল জিনিস ক্রয়-বিক্রয় করব না। ✓ মেয়াদবিহীন পণ্য বেচা-কেনা করব না। ✓ চুরির জিনিস কিনব না। ✔ জাটকা নিধন করব না। ✓ বেআইনি পণ্য লেনদেন করব না। ✓ বন্যপ্রাণী বিক্রি করব না। ✓ তথ্য গোপন করে খারাপ পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করব না। ✓ লোক ঠকানোর উদ্দেশ্যে লেনদেন করব না। ✓ লেনদেনের ক্ষেত্রে অন্যকে প্রভাবিত করব না। ✓ বর্তমানে আর্থিক লাভের আশায় ভবিষ্যৎ লাভের সম্ভাবনাকে নষ্ট করব না। ✓ লেনদেনের ক্ষেত্রে কারো দূর্বলতার সুযোগ নেব না। |
যে বিষয়গুলো আমাকে আরও ভালোভাবে জানতে হবে-
উত্তর:
১. বিভিন্ন ঘটনা ভালোভাবে যাচাই করার উপায় জানতে হবে।
২. ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করা শিখতে হবে।
৩.সঠিকভাবে লেনদেনের যৌক্তিকতা ও নৈতিকতা যাচাই করা শিখতে হবে।
৪. লেনদেনের যৌক্তিকতা ও নৈতিকতা ব্যাখ্যা করা জানতে হবে।
যে কাজগুলোর নিয়মিত চর্চা আমাকে চালিয়ে যেতে হবে-
উত্তর:
১. নিয়মিত লেনদেনের হিসাব রাখতে হবে।
২. আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে যৌক্তিকতার নীতি মেনে চলতে হবে।
৩.নৈতিকতার নিয়ম-কানুন মেনে আর্থিক লেনদেন করতে হবে।
৪. আর্থিক লেনদেন করার সময় লেনদেনের নৈতিকতা ও যৌক্তিকতা যাচাই করতে হবে।