এই পোস্টে আমরা জানব ষষ্ঠ শ্রেনীর, বিষয় বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) এর নবম অধ্যায়, চাঁদ সূর্যের পালা সম্পর্কে।
প্রথম ও দ্বিতীয় সেশন:
প্রশ্ন: ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে নিজেরা আলোচনা করো। আলোচনার ভিত্তিতে চন্দ্রগ্রহণ কীভাবে ঘটে সে ব্যাপারে তোমার ব্যাখ্যা নিচে লিখে বা এঁকে রাখো-
উত্তর: সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদের অবস্থান পরিবর্তনের ফলে চন্দ্রগ্রহণ হয়। চন্দ্রগ্রহণের সময় পূর্ণিমার ভরা চাঁদ হঠাৎ গোলাকৃতি ছায়ায় ঢেকে যায়। প্রতি পূর্ণিমাতে চাঁদ পৃথিবীর পেছনে উপস্থিত হয়। যদি চাঁদ পৃথিবী ও সূর্য একই সরলরেখায় চলে আসে, তখন চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে। আর এই ছায়া পড়াকে আমরা চন্দ্রগ্রহণ বলি । যদি চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় পুরোপুরি ঢাকা পড়ে তবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ এবং যদি পৃথিবীর ছায়া চাঁদের অপর আংশিক পড়ে তখন আংশিক চন্দ্রগ্রহণ হয়।
প্রশ্ন: চন্দ্রগ্রহণের মডেল তৈরী।
উত্তর:
প্রয়োজনীয় উপকরন:
১। সুতা
২। প্লাস্টিকের শক্ত তারের তৈরি কক্ষপথ ( পৃথিবীর কক্ষপথ)
৩। মোমবাতি (সূর্য)
৪। একটি বড় পিংপং বল (পৃথিবী)
৫। একটি ছোট পিংপং বল (চাঁদের কক্ষপথ )
৬। একটি ছোট মারবেল (চাঁদ)
তৃতীয় সেশন:
প্রশ্ন: শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের চেয়ে বেশি নাকি কম?
উত্তর: শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের চেয়ে কম।
প্রশ্ন: গরমকালে দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের চেয়ে বেশি নাকি কম?
উত্তর: গরমকালে দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের চেয়ে বেশি।
কোন দেশে ঠান্ডা কোন দেশে গরম পড়বে তা নিচে নোট করা হলো-
দেশের নাম | বছরের নির্দিষ্ট সময়ে তাপমাত্রার অনুভূতি ( ঠান্ডা/গরম/ ঠান্ডা ও গরমের মাঝামাঝি | |||
২১ জুন | ২৩ সেপ্টেম্বর | ২২ ডিসেম্বর | ২১ মার্চ | |
বাংলাদেশ | গরম | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি | ঠান্ডা | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি |
অস্ট্রেলিয়া | ঠান্ডা | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি | গরম | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি |
আমেরিকা | গরম | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি | ঠান্ডা | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি |
ব্রাজিল | ঠান্ডা | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি | গরম | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি |
ইংল্যান্ড | গরম | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি | ঠান্ডা | ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি |
চতুর্থ ও পঞ্চম সেশন:
★ এবার তোমাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী পূর্ণিমা আর আমাবস্যা কীভাবে ঘটে তা নিচের ফাঁকা জায়গায় এঁকে দেখাও এখন তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ্য বই থেকে চন্দ্রকলা অংশটুকু পড়ে নিয়ে তোমাদের ধারণার সঙ্গে মিলিয়ে দেখ-
বাড়ির কাজ
প্রশ্ন: চন্দ্রকলা সম্পর্কে যেহেতু জেনেছ, আজ রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখো, চাঁদকে কেমন দেখায়। আজকের চাঁদের একটা ছবি পাশের ফাঁকা জায়গায় এঁকে রেখো।
উত্তর:
প্রশ্ন: চাঁদের আকার দেখে কি বুঝতে পারছ, এখন শুক্লপক্ষ নাকি কৃষ্ণপক্ষ? তোমার ধারণা নিচে লিখে রাখো, পরে মিলিয়ে দেখে-
উত্তর: আমাবস্যা থেকে পরের ১৫ দিন পর পূর্ণিমা। এই ১৫ দিন শুক্লপক্ষ। আবার পূর্ণিমা থেকে পরের ১৫ দিন পর অমাবস্যা। এই ১৫ দিন কৃষ্ণপক্ষ।
প্রশ্ন: চন্দ্রগ্রহণ কখন হয়?
উত্তর: পৃথিবী, চাঁদ আর সূর্যের মধ্যে একমাত্র সূর্যের নিজস্ব আলো আছে এবং সেই আলো চাঁদের পিঠে পড়ে প্রতিফলিত হয় বলেই আমরা পূর্ণিমার আলো দেখতে পাই। কাজেই যখনই পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে সূর্য আর চাঁদের মধ্যখানে চলে আসে, চাঁদের গায়ে পৃথিবীর ছায়া পড়ে, পৃথিবী থেকে আমরা দেখতে পাই চাঁদকে যেন একটা ঘন অন্ধকার গিলে নিচ্ছে, এই ঘটনাকে আমরা বলি চন্দ্রগ্রহণ। একইভাবে চাঁদ ঘুরতে ঘুরতে যদি কখনো পৃথিবী আর সূর্যের মধ্যরানে এসে পড়ে তখন তা সূর্যের আলোকে ঢেকে যায়। পৃথিবী থেকে সূর্যের ওপর আমরা এই ছায়ায় দেখি, আর এই ঘটনাকে বলি সূর্যগ্রহণ। চন্দ্রগ্রহণ হয় যখান চাঁদ আর সূর্যের মাঝখানে থাকে পৃথিবীর অবস্থা। পৃথিবী তার আলোর উৎস বন্ধ করে দেয়। এ পূর্ণিমা হয় পৃথিবীর যে পাশে সূর্য ঠিক তার উল্টো পাশে যখন চাঁদের অবস্থান থাকে। পূর্ণিমা চন্দ্রগ্রহণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। চাঁদ প্রতি পূর্ণিমাতে পৃথিবীর পেছনে চলে আসে। আর তখন যদি চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে তখন চন্দ্রগ্রহণ হয়।
👉 সবার ইশকুল – সমাধান | বিজ্ঞান – অনুশীলন বই | ৮ম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী
প্রশ্নঃ জোয়ার-ভাটা কেন হয়?
উত্তর: জোয়ার ভাটার মূল কারণ পৃথিবীর প্রতি চাঁদের আকর্ষণ। সূর্য পৃথিবী থেকে অনেক দূরে থাকার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সূর্যের আকর্ষণের পার্থক্য কম। কিন্তু চাঁদ তুলনামূলকভাবে পৃথিবীর অনেক কাছে, তাই পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে চাঁদের আকর্ষণের পার্থক্য অনেক বেশি। সে জন্য চাঁদ পৃথিবীর যে অংশের ঠিক উপরে থাকে, সেই জায়গার পানিকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে স্ফীত করে তোলে এবং আমরা সেটাকে বলি জোয়ার। আবার একই সময়ে চাঁদের অবস্থানের একেবারে বিপরীত দিকে পানির ওপর বল সবচেয়ে কম, সেখানে বিপরীত দিকে বল কাজ করছে কল্পনা করা যায়, তাই সেখানেও উল্টো দিকে পানি স্ফীত হয়ে জোয়ার হয়। একই সময়ে দুই পাশে পানির স্তর স্ফীত করার জন্য যে অংশের পানির স্তর নেমে যায় তাকে ভাটা বলে। জোয়ারের মতো সেই স্থানের একেবারে উল্টোদিকেও একই সঙ্গে ভাটা হয়।
প্রশ্নঃ চন্দ্রগ্রহণ ঘটলেই কি পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে তা দেখা যাবে?
উত্তর: চন্দ্রগ্রহণ ঘটলেই পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে দেখা যাবে না। কারণ চন্দ্রগ্রহণ কেবল পূর্ণিমায় হয় কিন্তু সব পূর্ণিমায় হয় না। আবার, পৃথিবীর সব জায়গায় একই সময় পূর্ণিমা হয় না।
পরবর্তী অধ্যায়ের লিংক 👉 রান্না ঘরেই ল্যাবরেটরি – সমাধান | বিজ্ঞান – অনুশীলন বই | ১০ম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী