এই পোস্টে আমরা জানব ষষ্ঠ শ্রেনীর, বিষয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা এর পঞ্চম অধ্যায়, অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা বলি সম্পর্কে।
ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে দেখি
পরিস্থিতি ০১ :
আমি দেখলাম আমার বন্ধুরা বিরতির সময়ে খেলছে। আমার মনে হলো যে আমার সাথে খেলতে চায়নি বলে আমায় ডাকেনি ওরা।
প্রশ্ন ১। এমন পরিস্থিতিতে আমার কেমন অনুভূতি হতো?
উত্তর : আমার কষ্ট লাগত। আবার একটু রাগও অনুভূত হতো।
প্রশ্ন ২। এ অবস্থায় আমি কী করতাম এবং বন্ধুদের কী বলতাম?
উত্তর: তোমাদেরকে আমাকে ছাড়াই খেলতে দেখে আমার কষ্ট লাগছে, মনে হচ্ছে তোমরা আমাকে নিতে চাও না, তাই একটু রাগও লাগছে। আমি কি তোমাদের সাথে খেলতে পারি?
প্রশ্ন ৩। আমার অন্তত একজন বন্ধুর সাথে আলোচনা করি। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হতো এবং সে কী করত?
উত্তর : আমার নাম আদিল। ক্লাসের সোহান আমার খুব ভালো বন্ধু। আমি সোহানকে বললাম, তোমার বন্ধুরা যদি তোমাকে খেলায় না নিত তাহলে তোমার কেমন লাগত এবং তুমি কী করতো তখন সোহান বলল, বন্ধুদের সাথে খেলতে না পারার কারণে আমার অবশ্যই কষ্ট লাগত। তবে ওদেরকে আমি বুঝিয়ে বলতাম যে আমিও তোমাদের সাথে খেলতে চাই। তারপরও ওরা আমাকে খেলায় না নিলে আমি আমার অন্য ভালো বন্ধুদেরকে সাথে নিয়ে খেলতাম।
পরিস্থিতি ০২ :
সারাদিন ক্লাস করে এবং স্কুলে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনে অংশ নিয়ে আমি ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরেছি। গিয়ে দেখি বাসায় অনেক মেহমান। তারা যে আসবেন তা আমি আগে থেকে জানতাম না। সেই মুহূর্তে আমার একটু বিশ্রাম নেওয়ার অবস্থা নেই। এ সময় আমার চেয়ে বয়সে বেশ ছোট দুজন শিশু এস এবং কাগজ দিয়ে কিছু খেলনা বানিয়ে দেবার বায়না ধরল।
প্রশ্ন ১। এমন পরিস্থিতিতে আমার কেমন অনুভূতি হতো।
উত্তর : এমন পরিস্থিতিতে আমার খুব ভালো লাগত। কারণ আমাদের বাসায় মেহমান হিসেবে আমার মামা, মামী এবং মামাতো ভাই-বোনেরা এসেছেন। মামাতো ভাইবোনদের সাথে খেলতে এবং সময় দিতে আমার খুব ভালো লাগে।
প্রশ্ন ২। এ অবস্থায় আমি কী করতাম এবং শিশুদের কী বলতাম?
উত্তর: এ অবস্থায় আমি খুব খুশি হতাম। সেই সাথে ছোট দুইজন শিশুকে কাগজ দিয়ে সুন্দর করে খেলনা বানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতাম।
প্রশ্ন ৩। আমার অন্তত একজন বন্ধুর সাথে আলোচনা করি। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হতো এবং সে কী করত?
উত্তর: আমার বন্ধু আরমানের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। আরমান বলল, যদিও সারাদিন ক্লাস এবং অনুষ্ঠানের কাজের পর অনেক ক্লান্ত থাকতাম। তারপরও বাড়িতে মেহমান আসায় খুব খুশি হতাম। চেষ্টা করতাম মামাতো ভাই-বোনের সাথে খেলাধুলা করার।
পরিস্থিতি ০৩ :
অনেক দিন অপেক্ষা করার পরে আমার মা পছন্দের রং পেন্সিলের বক্স কিনে দিয়েছে। আমি বন্ধুদের দেখাতে ক্লাসে নিয়ে আসলাম। যেই কাছের বন্ধুদের দেখানোর জন্য এগুলো ব্যাগ থেকে বের করলাম, অমনি এক বন্ধু দুটি রং পিন্সিল হাত থেকে ছোঁ মেরে নিয়ে নিল।
প্রশ্ন ১। এমন পরিস্থিতিতে আমার কেমন অনুভূতি হতো।
উত্তর : এমন পরিস্থিতিতে আমার কষ্ট লাগত এবং কিছুটা রাগও অনুভূত হতো।
প্রশ্ন ২। এ অবস্থায় আমি কী করতাম এবং বন্ধুদের কী বলতাম?
উত্তর: এ অবস্থায় আমি নিজের কষ্ট এবং রাগকে আয়ত্তে রাখতে চেষ্টা করতাম। সেই সাথে বন্ধুকে বলতাম কারো অনুমতি ব্যতীত কোনো জিনিস ধরলে ওই মানুষটা কষ্ট পায়। তাই ভবিষ্যতে আর এমনটা করবে না।
প্রশ্ন ৩। আমার অন্তত একজন বন্ধুর সাথে আলোচনা করি। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হতো এবং সে কী করত?
উত্তর: শাহিন আমার বন্ধু। ওর সাথে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। শাহিনের সাথে এমনটি হলে সে কী করত জানতে চাইলে শাহিন বলল, আমি এই বন্ধুকে বাধা দিতাম। তারপরও যদি সে নিতে চাইতো তাহলে বুঝিয়ে বলতাম। প্রয়োজনে শ্রেণিশিক্ষকের সাহায্য নিতাম।
পরিস্থিতি ০৪ :
আমি আমার বন্ধুদের সাথে খেলছি। খেলায় খুবই টানটান উত্তেজনা অবস্থা। আরেকটু পরেই আমি জিতে যাব। এমন সময় আমার মা এসে খেলা বন্ধ করতে বলছেন। বলছেন এখুনি পড়তে বসতে। আমি যেতে না চাইলে বিরক্ত হয়েছেন।
প্রশ্ন ১। এমন পরিস্থিতিতে আমার কেমন অনুভূতি হতো?
উত্তর : এমন পরিস্থিতিতে আমার কষ্ট লাগত। মনটা খারাপ হয়ে যেত।
প্রশ্ন ২। এ অবস্থায় আমি কী করতাম এবং মাকে কী বলতাম?
উত্তর: এ অবস্থায় কষ্ট লাগলেও আমি মায়ের কথা শুনতাম। খেলা বন্ধ করে দিয়ে পড়তে বসতাম। পরে মাকে আমার কষ্টের কথাটা বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে বলতাম।
প্রশ্ন ৩। আমার অন্তত একজন বন্ধুর সাথে আলোচনা করি। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হত এবং সে কী করত?
উত্তর: আব্দুল্লাহ আমার খুব ভালো বন্ধু। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হতো এবং সে কী করত এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। আব্দুল্লাহ বলল, আমিও তোমার মতোই সামান্য কষ্ট পেলেও মায়ের কথাই মেনে নিতাম এবং পরে মাকে আমার কষ্ট লাগার বিষয়টি বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে বলতাম।
পরিস্থিতি ০৫:
আমি শ্রেণিকাজের অংশ হিসেবে সহপাঠীদের সাথে একটি নাটকে অংশগ্রহণ করেছি। নাটকে আমার অভিনয় নিয়ে শিক্ষক যে মতামত দিলেন, তার সাথে আমি একমত নই। আমার মনে হচ্ছে কোথাও কোনো ভুল হয়েছে বা শিক্ষক আমাকে অন্য কারো সাথে মিলিয়ে ফেলেছেন।
প্রশ্ন ১। এমন পরিস্থিতিতে আমার কেমন অনুভূতি হতো?
উত্তর : এমন পরিস্থিতিতে আমার কষ্ট লাগত।
প্রশ্ন ২। এ অবস্থায় আমি কী করতাম এবং উপরের ক্লাসের শিক্ষার্থীকে কী বলতাম?
উত্তর : এ অবস্থায় আমি বিনয়ের সাথে স্যারের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করতাম। সেই সাথে আমার বিষয়টি নিয়ে স্যারের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করার জন্য উপরের ক্লাসের শিক্ষার্থীকে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করতাম।
প্রশ্ন ৩। আমার অন্তত একজন বন্ধুর সাথে আলোচনা করি। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হতো এবং সে কী করত?
উত্তর : জীবন আমার ক্লাসের ভালো বন্ধু। এমন পরিস্থিতিতে তার কেমন অনুভূতি হতো এবং সে কী করতো- এটা জিজ্ঞেস করেছি। জীবন বলল, আমারও খুব কষ্ট লাগত। তখন আমিও স্যারের কোথাও ভুল হচ্ছে কিনা সেটা অত্যন্ত বিনয় আর ভদ্রতার সাথে বলতাম। আমার অভিনয়ের বিষয়টি নিয়ে স্যারের সাথে বিস্তারিত কথা বলতাম।
👉 https://studyian.com/somporker-jotne-khuje-pai-rotno-class6/
কাজ ২: আমার জন্য নিরাপদ স্পর্শ কোনগুলো হতে পারে তা নিচে লিখি। আমার বন্ধুর সাথে উত্তরগুলো নিয়ে আলোচনা করি এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে করি।
উত্তর: আমার নাম সিমা। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। আমাকে আমার মা-বাবা, শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাই পছন্দ করে। তাদের নিরাপদ স্পর্শে আমি পুলকিত হই। এদের সকলের দ্বারাই আমি নিরাপদ বোধ করি। আমার জন্য নিরাপদ স্পর্শ কোনগুলো তা নিচে উল্লেখ করা হলো-
> ক্লাসে ভালো ফলাফল করার জন্য শ্রেণিশিক্ষক আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
> রাস্তায় চলার সময় হঠাৎ পড়ে যাই এবং এক বন্ধু আমার হাত ধরে টেনে তুলে।
> ভালো কিছু কাজ করলে মা আমায় জড়িয়ে ধরে।
> অনেকদিন পরে এক বন্ধুর সাথে দেখা এবং হ্যান্ড সেক করা।
> বড় ভাইয়ের হাত ধরে বাঁশের পুল পাড়ি দেওয়া।
> চাচার সাথে রিকশায় শপিংমলে যাওয়া এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আমার হাতটি ধরে রাখা।
> বহুদিন পর বাবার দেশে আগমন এবং আমায় দেখে জড়িয়ে ধরা এবং কপালে চুম্বন করা।
> বহুদিন পরে খালা/ফুফু এলে বুকে জড়িয়ে ধরা
কাজ ৩ : তোমার জন্য অনিরাপদ স্পর্শ কোনগুলো হতে পারে তা নিচে লিখ। তোমার বন্ধুর সাথে উত্তরগুলো নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে কর।
উত্তর : আমার জন্য অনিরাপদ স্পর্শগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
> শ্রেণিশিক্ষকের শাসনের স্থলে গায়ে হাত দেওয়া।
> বন্ধু আমায় কথায় কথায় ধরতে চায়।
> গৃহ শিক্ষকের পড়া বুঝিয়ে দেওয়ার ছলে গায়ে হাত দেওয়া।
> নিকট আত্মীয়-স্বজন যেকোনো উছিলায়া যখন তখন গায়ে হাত দেওয়ার অভ্যাস।
> রাস্তাঘাটে বখাটে ছেলেদের গায়ে হাত দেওয়ার প্রবণতা।
> বাসের হেলপার সহযোগিতার উছিলায় গারো হাত দিয়ো গাড়িতে তোলা।
কাজ ৪ : (গল্প ২: সহমর্মিতা) অনুযায়ী কোন চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ/না/প্রযোজ্য নয় লিখ। তোমার বন্দুর সাথে দকটি নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনার শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে কর।
উত্তর: গল্প-২ (সহমর্মিতা) অনুযায়ী যে চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ/না লেখা হলো–
চরিত্র | নিজের অনুভূতি ও প্রয়োজন চিহ্নিত করতে পেরেছে | অন্যের অনুভূতি ও প্রয়োজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল | প্রয়োজনে দৃঢ়ভাবে না বলতে পেরেছে | দৃঢ়ভাবে নিজের অনুভূতি প্রয়োজন ও মতামত প্রকাশ করতে পেরেছে |
কিংশুক | হ্যাঁ | না | না | না |
সীমান্ত | হ্যাঁ | না | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
রাজিন | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
নিচের প্রশ্নগুলো পড়ে উত্তর তৈরি কর। বন্ধুর সাথে প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে করি।
প্রশ্ন | উত্তর |
সীমান্ত নিজের অনুভূতি ও চাওয়া প্রকাশ করতে কিংশুক ও রাজিনের সাথে কীভাবে কথা বলতে পারত? | সীমান্ত নিজের অনুভূতি ও চাওয়া প্রকাশ করতে কিংশুক ও রাজিনের সাথে ভালোভাবে কথা বলতে পারত। সে বলতে পারত যে, আমিতো ভাই সাঁতার পারি না, তাই ভয় পাই। কিছু মনে করো না। তোমরা নামো আমি দাঁড়িয়ে থাকি। |
কিংশুক কীভাবে রাজিনের সাথে কথা বলতে পারত? | কিংশুক রাজিনকেও বোঝাতে পারত যে সীমান্ত যেহেতু পানিতে নামতে ভয় পাচ্ছে তা হলে থাক- আমরাই নামি। ও দাঁড়িয়ে থাকুক। যেহেতু ও সাঁতার জানে না, তাই ওর ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। |
রাজিনের জায়গায় আমি থাকলে আর কী কী করতে পারতাম | রাজিনের জায়গায় আমি থাকলে সীমান্তকে জোড় করতাম না। প্রথমেই এর দিক থেকে চিন্তা করতাম এবং তাকে বলতাম ভয় পেয়ো না, বন্ধু তোমার নামতে ইচ্ছে না করলে এখানে দাঁড়িয়ে থাক |
কাজ ৫ : গল্প-৩: নিজের পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ করি) অনুযায়ী কোন চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ বা না লিখ। তোমার বন্ধুর সাথে ছকটি নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে করি।
উত্তর: গল্প-৩: (নিজের পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ করি) অনুযায়ী যে চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ বা না দেখা হলো-
চরিত্র | নিজের অনুভূতি ও প্রয়োজন চিহ্নিত করতে পেরেছে | অন্যের অনুভূতি ও প্রয়োজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল | প্রয়োজনে দৃঢ়ভাবে না বলতে পেরেছে | দৃঢ়ভাবে নিজের অনুভূতি প্রয়োজন ও মতামত প্রকাশ করতে পেরেছে |
জিনিয়া | হ্যাঁ | না | না | হ্য |
রেহানা | হ্যাঁ | না | না | হ্যাঁ |
নিচের প্রশ্নগুলো পড়ে উত্তর তৈরি কর। বন্ধুর সাথে প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে করি।
প্রশ্ন | উত্তর |
জিনিয়ার জায়গায় আমি থাকলে আর কী কী উপায়ে আমার সিদ্ধান্তের কথা জানাতাম? | জিনিয়ার জায়গায় আমি থাকলে আমি তাদের মতামতকে সম্মান করে বলতাম এই কালো রঙের আমা আমার ভালো লেগেছে। আমাকে এটাই কিনে দাও। তবে তোমাদের যদি ভালো না লাগে। তাহলে প্রয়োজন নাই। |
আমার পছন্দ-অপছন্দ আমার পরিবারের মানুষকে কীভাবে বোঝাব? | আমি আমার পিতা-মাতার পছন্দকে সম্মান জানাবো। তবে বিশেষভাবে আমার যদি কিছু ভালো লাগে তাহলে আমি আমার ভালো লাগার কথাটা তাদের জানাবো এবং তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে সবই মেনে নেব। |
কাজ ৬: (গল্প-৪ : আত্মমর্যাদা রক্ষায় পদক্ষেপ নিই) অনুযায়ী কোন চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ/না / প্রযোজ্য নয় লিখ। তোমার বন্ধুর সাথে ছকটি নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে কর।
উত্তর : গর-৪ (আত্মমর্যাদা রক্ষার পদক্ষেপ নিই) অনুযায়ী যে চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ/না লেখা হলো-
চরিত্র | নিজের অনুভূতি ও প্রয়োজন চিহ্নিত করতে পেরেছে | অন্যের অনুভূতি ও প্রয়োজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল | প্রয়োজনে দৃঢ়ভাবে না বলতে পেরেছে | দৃঢ়ভাবে নিজের অনুভূতি প্রয়োজন ও মতামত প্রকাশ করতে পেরেছে |
শর্মীষ্ঠা | হ্যাঁ | না | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
সুজন | হ্যাঁ | হ্যাঁ | না | না |
মাহিন | হ্যাঁ | না | না | না |
সমারাহ | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
নিচের প্রশ্নগুলো পড়ে উত্তর তৈরি কর। বন্ধুর সাথে প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে করি।
প্রশ্ন | উত্তর |
সামারাহ শর্মিষ্ঠাকে কী বলতে পারত? | সামারাহ শর্মিষ্ঠাকে থামাতে পারত। শর্মিষ্ঠা যখন সুজনকে খেপাচ্ছিল তখন সামারাহ বলতে পারত যে সাইকেল কেনা/না কেনা ওর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ নিয়ে তোমার কথা না বলাই ভালো। |
আমাকে কেউ কোনো বিষয়ে জোরাজুরি করলে আমি কী করব? | আমাকে কোনো বিষয় নিয়ে জোরাজুরি করলে বলব, বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত। এ বিষয়টি নিয়ে কথা না বললেই খুশি হব। |
কাউকে উক্ত্যক্ত হতে দেখলে আমি কী করব? | কাউকে উত্ত্যক্ত করতে দেখলে আমি তাকে বোঝাব যে এসব করা অন্যায়। কিন্তু যদি না বুঝে তাহলে তার প্রতিবাদ করব। |
আমাকে কেউ উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করলে আমি কী করব? | আমাকে কেউ উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করলে আমি তার প্রতিবাদ করব। পরক্ষণে তাকে বিনয়ের সাথে বোঝাব এভাবে কাউকে উত্ত্যক্ত করা ঠিক নয়; এটা একটি অন্যায় কাজ। এতে সে কষ্ট এবং অসহায়বোধ করতে পারে। |
কাজ ৭ গল্প-৫: সম্পর্কের যত্নে কথা বলি) অনুযায়ী কোন চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ/না/প্রযোজ্য নয় লিখ। তোমার বন্ধুর সাথে ছকটি নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে করি।
উত্তর – গল্প ৫ (সম্পর্কের যত্নে কথা বলি) অনুযায়ী যে চরিত্রের সাথে নিচের কথাগুলো মিলে তা নিয়ে চিন্তা করে হ্যাঁ/না দেখা হলো–
চরিত্র | নিজের অনুভূতি ও প্রয়োজন চিহ্নিত করতে পেরেছে | অন্যের অনুভূতি ও প্রয়োজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল | দৃঢ়ভাবে নিজের অনুভূতি প্রয়োজন ও মতামত প্রকাশ করতে পেরেছে |
আমিন | হ্যাঁ | না | হ্যাঁ |
রাবেয়া | হ্যাঁ | না | হ্যাঁ |
রহমান | হ্যাঁ | না | হ্যাঁ |
নিচের প্রশ্নগুলো পড়ে উত্তর তৈরি কর। আমার বন্দুর সাথে প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা কর এবং আলোচনা শেষে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে কর।
প্রশ্ন | উত্তর |
আমিনের কি নিজের মতো সময় কাটানোর সুযোগ থাকা উচিত? কেন? বা কেন নয়? | না, আমিন বড় হলেও নিজের মতো করে সময় কাটানোর মতো বয়স ওর হয়নি। এই বয়সটাই খেয়াল করতে হবে যে ছেলে বিপথে যায় কিনা। একেবারে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। |
আমিনের কোন পদক্ষেপগুলো তার ব্যক্তিগত সীমানা ধরে রাখতে সাহায্য করেছে। | আমিন দৃঢ়ভাবে নিজের প্রয়োজন, অনুভূতি ও মতামত প্রকাশ করতে পেরেছে। এটাই তার ব্যক্তিগত সীমানা ধরে রাখতে পেরেছে। |
আমিনের মতো পরিস্থিতিতে পড়লে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের কী বলব? | আমিনের জায়গায় আমি হলে আমার পরিবারকে বোঝাতাম যে আমি এখন বড় হচ্ছি। মাঝে মাঝে আমার নিজস্ব সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে তারা যাতে কষ্ট না পায় এ ব্যাপারটি খেয়াল রাখতাম। |
👉 https://studyian.com/cholo-nijeke-abishkar-kori-class6/
ওপরের গল্পগুলোতে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের কৌশল
কাজ ৮ : এ অধ্যায়ের পর গুলোতে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের কোন কৌশলটি কার্যকর আর কোনটি অকার্যকর মনে হয়েছে, তা উল্লেখ কর।
উত্তর: এ অধ্যায়ের পর গল্প ২ সহমর্মিতা, গল্প :৩ নিজের পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ করি, গল্প: ৪ আত্মমর্যাদা রক্ষায় পদক্ষেপ নিই এবং গল্প: ৫ সম্পর্কের যত্নে কথা বলি প্রভৃতি গরগুলোতে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের যে কৌশলটি কার্যকর আর যে কৌশলটি অকার্যকর মনে হয়েছে, তা নিচে উল্লেখ করা হলো-
গল্প | অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের কৌশল | কার্যকর/ অকার্যকর |
গল্প ২: সহমর্মিতা | ১. সীমান্ত আমিতো সাঁতার জানি না। তাই আমি পানিতে নামব না। তোমরা নামো আমি দেখি। | কার্যকর |
২. কিংশুক তুমি ভিতুর ডিম। ঠিক আছে থাক তুমি, আমরা নামছি। | অকার্যকর | |
৩. রাজিন সাঁতার না জানলে পানিতে না পাওয়া স্বাভাবিক। ঠিক আছে, তুমি থাক। | কার্যকর | |
গল্প ৩: নিজের পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ করি | ১. মা: জিনিয়া সহজে পছন্দ করতে পারে না। আমিই কিনে দিব। | অকার্যকর |
২. জিনিয়া কালো রঙের জামা, আমার খুব পছন্দ। এটা দিলেই আমি খুশি। | কার্যকর | |
৩. বাবা তোমার যেটা খুশি তাড়াতাড়ি নাও। | কার্যকর | |
গল্প ৪: আত্মমর্যাদা রক্ষায় পদক্ষেপ নিই | ১. শর্মীরা কি সুজন আমাদের সবারই সাইকেল আছে, তোমারই শুধু নেই। বাবাকে বলে কিনে ফেল। নাকি সাহস পাও না। হ্যা…. | অকার্যকর |
২. মাহিন তোমার বাবাকে আবার বলো, বারবার বললে কিনে দিবে। | অকার্যকর | |
৩. সামারাহ: সুজনের যখন সময় হয় ও কিনবে। এ নিয়ে আমাদের কথা না বলাই ভালো। | কার্যকর | |
গল্প ৫: সম্পর্কের যত্নে কথা বলি | ১. রাবেয়া আমিন যাও পেঁয়াজ নিয়ে এসো। দেরি করো না এক্ষনি যাও, ধমকের সুরে বলল। | অকার্যকর |
২. আমিন বাবা আমি আমার মতো করে গল্পের বই পড়তে চাইছিলাম, হঠাৎ করে এলে আমার অস্তি লাগে। | কার্যকর | |
৩. বাবা তুমি তো ছোট নরতা দিয়ে পড়ার কী দরকার? | অকার্যকর |
কাজ ৯ : তোমার দৈনন্দিন জীবনে কোন কোন পরিস্থিতিতে আরও দৃঢ়ভাবে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশ করার সুযোগ আছে? নিচের ছকে এমন ৩টি পরিস্থিতির একটি তালিকা কর। যাদের সাথে মনের কথা দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে হবে সে মানুষদের শনাঙ্ক কর। তারা হতে পারেন তোমার বাবা-মা, ভাই-বোন, যেকোনো আত্মীয়, বন্ধু, শিক্ষক, ওপরের বা নিচের ক্লাসের শিক্ষার্থী: তোমার এলাকার পরিচিত কোনো ব্যক্তি বা অন্য যে কেউ।
উত্তর : আমার দৈনন্দিন জীবনে যেসব পরিস্থিভিতে আরও দৃঢ়ভাবে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশ করার সুযোগ রয়েছে এখন তিনজন হলো মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষক।
তালিকা : দৈনন্দিন জীবনে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চা
কোন ব্যক্তির সাথে | কোন পরিস্থিতিতে |
মা/বাবার সাথে: মা আমার নিল জামা খুব পছন্দ যদি কিনে দিতে খুব খুশি হতাম। | কেনাকাটার সময়। |
বন্ধুর সাথে: আমি আইসক্রিম খাব। কে কী খাবা বলতে পার। কফি, চা, আইসক্রিম ইত্যাদি। | কফি সঙ্গে বন্ধুরা মিলে যাওয়ার সময়। |
শিক্ষকের সাথে : স্যার আমি এই অঙ্কটি বুঝিনি। যদি আমায় আরেকবার বুঝিয়ে দিতেন, খুব ভালো হতো | শিক্ষকের সাথে ক্লাসে পড়ার সময়। |
উপরের তালিকা অনুযায়ী ৩টি পরিস্থিতিতে কীভাবে তাদের সাথে কথা বলবে তার পরিকল্পনা কর এবং নিচের ছক ব্যবহার করে লিখ।
পরিকল্পনা ছক ০১: অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চা (গল্প ০২ অবলম্বনে)
কার সাথে যোগাযোগ: বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ
ঘটনা : (যা ঘটেছে) | আমি সাঁতার জানি না বলে দুই বন্ধু হাসি ঠাট্টা করে। |
অনুভূতি: (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি খুব বিব্রতবোধ করছি। |
কারণ : (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি সাতার জানি না, এই কারণে পুকুরে নামতে চাইনি। এটা ভীতার কিছু না। |
চাওয়া : (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি চাই আমার বন্ধুরা আমার প্রয়োজন অনুভব করুক এবং আমাকে আমার মতো থাকতে দিক। |
পরিকল্পনা ছক ০২: অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চা (গল্প ০৩ অবলম্বনে)
কার সাথে যোগাযোগ: মা-বাবার সাথে যোগাযোগ
ঘটনা : (যা ঘটেছে) | আমার পছন্দ না হওয়ার পরেও নিল জামা কিনতে বলা। |
অনুভূতি: (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি অনেক বিব্রতবোধ করি। |
কারণ : (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমার কালো জামা পছন্দ নিল আমা পছন্দ হয় নি। |
চাওয়া : (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি চাই আমাকে তোমরা কালো জামাটাই কিনে দাও। |
পরিকল্পনা ছক ০৩: অনুভূতি ও প্রভোজনের কথা প্রকাশের চর্চা (গল্প ০৪ অবলম্বনে)
কার সাথে যোগাযোগ: বন্ধুদের সাথে যোগােযোগ
ঘটনা : (যা ঘটেছে) | সাইকেল কিনি না বলে বন্ধুদের পক্ষ থেকে হাসি টাট্টার শিকার। |
অনুভূতি: (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি অনেক বিব্রতবোধ করি। |
কারণ : (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে হাসি টাট্টার শিকার |
চাওয়া : (আমি/আমার শব্দ ব্যবহার করে বলি) | আমি চাই আমার বন্ধুরা আমাকে বুঝুক। আমি যেটা পছন্দ করি না সে বিষয় নিয়ে কথা না বলুক। |
কাজ ১০ : কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চা করবে তা নিয়ে কয়েকটি পরিকল্পনা করেছ। এখন ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চার একটি রেকর্ড রাখ। সামনের এক মাস বিশ্বস্ত সম্পর্ক উন্নয়নের চর্চাসংক্রান্ত ঘটনাগুলোর বিবরণ ডায়েরি বা জার্নালে লিখে রাখ। নিচের ছকের মতো করে অথবা তোমার যেভাবে পছন্দ সেভাবে ডায়েরি বা জার্নালে লিপিবন্ধ করে এক মাস পর শিক্ষকের কাছে জমা দাও ।
উত্তর: মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষকের সাথে আমার দৈনন্দিন জীবনে যেসব পরিস্থিতিতে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চা করব তা নিচের ছকে লিপিবদ্ধ করে এক মাস পর শিক্ষকের কাছে জমা দেওয়া হলো-
দৈনন্দিন জীবনে অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা প্রকাশের চর্চার রেকর্ড
তারিখ | কোন ব্যক্তির সাথে | কোন পরিস্থিতিতে | চর্চা করতে পেরেছি?(হ্যাঁ/না) | চর্চা করে আমার কেমন লেগেছে? |
০৬/০৩/২০২৩ | বাবা-মার সাথে | কেনাকাটার সময় | হ্যাঁ | বিব্রত কিন্তু ভালো লাগছে |
১০/০৩/২০২৩ | বন্ধুর সাথে | বন্ধুরা মিলে খাওয়ার সময় | হ্যাঁ | ভালো লেগেছে |
১৫/০৩/২০২৩ | শিক্ষকের সাথে | শিক্ষকের সাথে ক্লাসে পড়ার সময় | হ্যাঁ | বিব্রত/লজ্জা পেয়েছি এবং ভালোও লাগছে |