রুদ্র প্রকৃতি – সমাধান | বিজ্ঞান (অনুশীলন বই)  – ১২ অধ্যায় | সপ্তম শ্রেণী

রুদ্র প্রকৃতি - সমাধান | বিজ্ঞান (অনুশীলন বই)  – ১২ অধ্যায় | সপ্তম শ্রেণী

এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর  বিষয় বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) এর দ্বাদশ অধ্যায়, রুদ্র প্রকৃতি সম্পর্কে।

প্রথম সেশন 

দলের সবাই নিজ নিজ এলাকায় কী কী প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হয় তা নিয়ে আলোচনা করি ও ছকে লিখি।

উত্তর: 

এলাকায় যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হয়দুর্যোগ সংঘটিত হওয়ার সময়দেশের অন্য যেসব এলাকায় এই দুর্যোগ দেখা যায়
ঘূর্ণিঝড়বর্ষাকালের শুরুতে এপ্রিল-মে মাসে এবং বর্ষার শেষে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে।উপকূলীয় অঞ্চলসমূহে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট,নোয়াখালী, ভোলা ইত্যাদি
বন্যাবর্ষাকালে সংঘটিত হয়। এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে।উত্তরাঞ্চলে বন্যার প্রকোপ বেশি দেখা যায়। উত্তরাঞ্চলের জেলা গুলোর মধ্যে রয়েছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা ইত্যাদি। এছাড়াও দেশের পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সিলেটে বন্যার প্রকোপ দেখা যায়।
ভূমিকম্পবছরের যে কোন সময় ভূমিকম্প সংঘটিত হতে পারে।ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কিছু কিছু স্থান যেমন; সিলেট, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার উল্লেখযোগ্য। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ।
জলোচ্ছ্বাসবর্ষাকালের শুরুতে মে-জুন এবং বর্ষার শেষে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে।উপকূলীয় অঞ্চলসমূহে জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ভোলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী ইত্যাদি।
খরাগ্রীষ্মকালে খরা সংঘটিত হয়। বাংলাদেশে খরা মার্চ থেকে জুন মাসে হয়।খরা বেশি দেখা যায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন: দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী ইত্যাদি অঞ্চলে।
নদীভাঙনবর্ষাকালে নদীভাঙন ঘটে।নদীপাড়ের জেলাগুলোতে নদীভাঙন হয়। যার মধ্যে রয়েছে মাওয়া, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ইত্যাদি।

দলের প্রত্যেকে একটি করে দুর্যোগের দায়িত্ব নিয়ে তা সংঘটিত হওয়ার কারণ এবং দুর্যোগটি সম্পর্কে লোককাহিনী অনুসন্ধান করি

উত্তর: 

দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিরোনামতথ্য প্রদানকারীর নাম ও সম্পর্ককেন এই দুর্যোগ সংঘটিত হয়দুর্যোগ সম্পর্কে এলাকার লোককাহিনী থাকলেদুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া নিয়ে এলাকার কোনো লোককাহিনী থাকলে
ভূমিকম্প সালেয়া বেগম সম্পর্ক: দাদীভূ-অভ্যন্তরে স্থিত গ্যাস যখন ভূ-পৃষ্ঠের ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসে তখন সেই গ্যাসের অবস্থানটি ফাঁকা হয়ে পড়ে এবং পৃথিবীর উপরের তলের চাপ ওই ফাঁকা স্থানে থেকে গিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে। তখনই ভূ-পৃষ্ঠে প্রবল কম্পনের অনুভূতি হয় যা ভূমিকম্প নামে পরিচিত।ভূমিকম্প সম্পর্কে এলাকার মানুষের মধ্যে প্রচলিত ছিল যে জীবন টিকে আছে এক দৈত্যের মাথার মধ্যে। গাছপালা সেই দৈত্যের চুল। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হচ্ছে পরজীবীর মতো, যারা দৈত্যের ত্বকজুড়ে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে দৈত্যটি মাথা এদিক-ওদিক ঘোরায় তখনই ভূমিকম্প হই।ভূমিকম্পের সময় অর্থাৎ দৈত্যটির যখন মাথা এদিক-ওদিক করে তখন যদি দৈত্যটি দেখে অর্থাৎ ফাঁকা স্থানে অবস্থান করা যায় তাহলে দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

প্রশ্ন-১. সবগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কি একই সময়ে ঘটে? 

উত্তর: না। প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হওয়ার সময় আলাদা।

প্রশ্ন-২, বন্যার প্রকোপ কোথায় দেখা যায়?

উত্তর: উত্তরাঞ্চলে।

প্রশ্ন-৩, কোন কোন অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা আছে?

উত্তর: উপকূলীয় অঞ্চলে অর্থাৎ সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ভোলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী ইত্যাদি অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রশ্ন-৪, দুর্যোগ সম্পর্কে লোককাহিনী সৃষ্টি হয়েছিল কীভাবে? 

উত্তর: ভৌগোলিক বিষয়াদির সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব এবং কুসংস্কারে বিশ্বাসের কারণে দুর্যোগ নিয়ে লোককাহিনীর সৃষ্টি হয়েছিল।

দ্বিতীয় সেশন

দলের প্রত্যেকের নির্ধারিত দুর্যোগসমূহ একত্র করে প্রাপ্ত দুর্যোগ সম্পর্কে লোককাহিনী ছকে লিখে রাখি।

উত্তর: 

বছরের কোন সময় এবং কেন দুর্যোগ সংঘটিত হয়দুর্যোগ সম্পর্কে স্থানীয় লোককাহিনী
বন্যা: বাংলাদেশে বন্যার প্রধান কারণ অতিবৃষ্টি। বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে পানি সরতে বেশ কয়েক দিন লেগে যায়। যার ফলে বন্যা হয়। আবার উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিও অনেক সময় বন্যার কারণ হয়ে দাড়ায়। বাংলাদেশে বর্ষাকালে বন্যা হয়।বন্যা নিয়ে যে লোককাহিনী প্রচলিত তা হলো পাহাড়ের উপরে থাকা গ্রামবাসীকে সতর্ক করে দেওয়ার পরেও তারা একটি ড্রাগনকে কেটে খেয়ে ফেলেছিল এবং তার শাস্তি হিসেবে গভীর রাতে মাটি ফেটে পানি বের হয়ে পুরো এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়।
খরা: খরা হওয়ার অন্যতম কারণ দীর্ঘদিন শুষ্ক আবহাওয়া থাকা এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া। অপর একটি কারণ গভীর নলকূপের সাহায্যে ভূগর্ভের পানির মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে পানির স্তর অস্বাভাবিক ভাবে নিচে নেমে যাওয়া।খরা মূলত শীতকালের শেষেও গ্রীষ্মকালে হতে দেখা যায়।খরা রাক্ষস ও দেবতাদের যুদ্ধ বাঁধলে খরা রাক্ষস পৃথিবীর সকল জলকে জড়ো করে পৃথিবীবাসীদের জল থেকে বঞ্চিত করেছিলেন। ফলে খরা দেখা গিয়েছিল।
ঘূর্ণিঝড়: সমুদ্রপৃষ্ঠের কোনো স্থানে বায়ুর তাপ বৃদ্ধি পেলে সেখানকার বায়ু উপরে উঠে যায়। যার ফলে বায়ুচাপ ব্যাপকভাবে কমে যায়। ফলে আশেপাশের অঞ্চল থেকে প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে বায়ু নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে এসে তৈরি করে ঘূর্ণিঝড়ের।বর্ষাকালের শুরুতে এপ্রিল-মে মাসে এবং বর্ষার শেষে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ দেখা যায়ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত যে লোককথাটি চালু আছে তা হলো যখন দাস ব্যবসা প্রচলিত ছিল তখন দাস ব্যবসায়ীরা জোর করে নিরীহ আফ্রিকান মানুষদেরকে দাস হিসাবে বন্দী করে নিয়ে যেত। ধারণা করা হয় এসব দাসদের অভিলাপ ঝড়ের দেবতা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি করেছিল দাস ব্যবসায়ীদের ধ্বংস করার জন্য।
ভূমিকম্প: ভূ-অভ্যন্তরের টেকটোনিক প্লেট স্থানান্তরিত হলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। বছরের যেকোনো সময় ভূমিকম্প হতে পারে।ভূমিকম্প সম্পর্কে লোককথাটি এমন যে জীবন টিকে আছে একটি দৈত্যের মাথার মধ্যে, গাছপালা সেই দৈত্যের চুল। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হচ্ছে পরজীবীর মতো। যারা দৈত্যের ত্বক, জুড়ে ঘুড়ে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে দৈত্যটি মাথা এদিক ওদিক ঘুরায় তখন ভূমিকম্প হয়।

প্রশ্ন-১. খরা হওয়ার প্রধান কারণ কী?

উত্তর: দীর্ঘদিন শুষ্ক আবহাওয়া থাকা এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া। 

প্রশ্ন-২, ভূ-অভ্যন্তরের টেকটোনিক প্লেট স্থানান্তরিত হলে কী সৃষ্টি হয়?

উত্তর: ভূমিকম্প।

প্রশ্ন-৩. ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ দেখা যায় কখন?

উত্তর: বর্ষার শুরুতে (এপ্রিল-মে মাসে) এবং বর্ষার শেষে (অক্টোবর-নভেম্বর মাসে)।

প্রশ্ন-৪. লোককাহিনী অনুযায়ী দাসদের অভিশাপে কোন দুর্যোগ সৃষ্টি হয়?

উত্তর: ঘূর্ণিঝড়।

তৃতীয় সেশন 

দলীয় কাজ পোস্টার পেপারে লিখে উপস্থাপন করি এবং অন্যদের মতামত নেই।

উত্তর:

চতুর্থ সেশন 

ভূমির গঠন, সমুদ্রের অবস্থান, সূর্যের অবস্থান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ অনুসন্ধান করে ছকে লিখে রাখি।

উত্তর: 

প্রাকৃতিক দুর্যোগপৃথিবীর যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয়যে কারণে দুর্যোগ সংঘটিত হয় বলে তোমাদের মনে হয়েছে
বন্যানদী পাড়ের অঞ্চল, ও সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে বন্যা হয়। যেমন: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চীন ইত্যাদি।নদীর নাব্যতা নষ্ট হয়ে যাওয়া, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো না থাকা এবং অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা হয়ে থাকে।
ঘূর্ণিঝড় মধ্যসাগর বা সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে উপকূলে আঘাত হানে। তাই সমুদ্রতীরবর্তী সকল দেশেই ঘূর্ণিঝড় হয়।সমুদ্রপৃষ্ঠের কোনো স্থানে বায়ুর তাপ বৃদ্ধি পেলে সেখানকার বায়ু উপরে উঠে নিম্নচাপ সৃষ্টি করে। ফলে আশেপাশের অঞ্চল থেকে প্রবলবেগে ঘুরতে ঘুরতে বায়ু নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে এসে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি করে।
জলোচ্ছ্বাসউপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস।ঘূর্ণিঝড় ও সুনামির কারণে সমুদ্রের পানি ফুলে উঁচু হয়ে উপকূলে আঘাত হানলে তাকে জলোচ্ছ্বাস বলে।
টর্নেডোএন্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া প্রায় সর্বত্রই টর্নেডো দেখা গেলেও সবচেয়ে টর্নেডো সংঘটিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া কানাডা, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকার দক্ষিণাংশ, উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে টর্নেডো হতে দেখা যায়।কোনো স্থানে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে ওই স্থানের উচ্ছ বাতাস উপরের দিকে উঠে যায় এবং তখনই ওই শূন্য জায়গা পুরণের জন্য চারিদিকের শীতল বাতাস দ্রুত বেগে ধাবিত হয়। এভাবে টর্নেডো সৃষ্টি হয়।
খরাশুষ্ক আবহাওয়া যুক্ত এলাকায় খরা দেখা যায়। তাই আফ্রিকা মহাদেশ সবথেকে বেশি খরা প্রবণ। এছাড়াও আফগানিস্তান, চীন, পাকিস্তান, ইরান, নেপাল, বাংলাদেশ, ভারত সহ আরো অনেক দেশ।দীর্ঘদিন শুষ্ক আবহাওয়া থাকা এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া খরার প্রধান কারণ। অপর একটি কারণ গভীর নলকূপের সাহায্যে ভূগর্ভের পানির মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়া
ভূমিকম্পপ্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, ভূমধ্যসাগরীয়-হিমালয় অংশ ও মধ্য আটলান্টিক অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পপ্রবণ শীর্ষ দেশগুলির মধ্যে রয়েছে- চীন, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, তুরস্ক, জাপান ইত্যাদিভূ-অভ্যন্তরের টেকটোনিক প্লেট স্থানান্তরিত হলে ভূমিকম্প হয়।
অগ্ন্যুৎপাতআমেরিকা, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, চিলি, মেক্সিকো, আইসল্যান্ড, কানাডা, কেনিয়া ইত্যাদি দেশে দেখা যায়।ভূ-অভ্যন্তরের টেকটোনিক প্লেট যখন ভাসতে ভাসতে ধাক্কা খেয়ে একটি অপরটির ওপরে উঠে যায়, তখন খুব জোরে চাপ পড়ায় ফলে ও তাপ সৃষ্টি হওয়ায় ভূ- অভ্যন্তরের তরল পদার্থ বের হয়ে আসে তখন তার নাম হয় লাভা, তারপর অনেক লাভা-উদগীরণ হওয়ার ফলে তৈরি হয় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের।
সুনামিবিভিন্ন মহাসাগরে যেখানে ভূমিক হয় সেসব মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুনামি হয়। যেমন: জাপান, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, ভারত ইত্যাদি।সমুদ্র তলদেশে প্রবল ভূমিকম্পের ফলে সুনামি হয়।

পঞ্চম ও ষষ্ঠ সেশন

দুর্যোগের মোকাবিলায় করণীয়:

১. দুর্যোগের সময় কোন এলাকার লোক কোন আশ্রয়কেন্দ্রে যাবে, গরু মহিষাদি কোথায় থাকবে আগে ঠিক করে এবং জায়গা চিনে রাখতে হবে।

২. বাড়িতে, গ্রামে, রাস্তায় ও বাঁধের উপর গাছ লাগাতে হবে।

৩. যথাসম্ভব উঁচু স্থানে শক্ত করে ঘর তৈরি করতে হবে।

৪. উঁচু জায়গার টিউবওয়েল স্থাপন করতে হবে।

৬. বাড়িতে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম (ব্যান্ডেজ, ডেটল প্রভৃতি) রাখতে হবে।

৭. আশ্রয়কেন্দ্রে বা অন্য আশ্রয়ে যাবার সময় কী কী জরুরি জিনিস সাথে নেওয়া যাবে এবং কী কী জিনিস মাটিতে পুঁতে রাখা হবে তা ঠিক করে সে অনুসারে প্রস্তুতি নিতে হবে।

সপ্তম সেশন

দুর্যোগের নাম এবং সজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাব সমূহ ছকে লিখি।

উত্তর:

প্রাকৃতিক দুর্যোগসজীব ও অজীব উপাদানের উপর প্রভাব
অগ্ন্যুৎপাত১. অনেক ক্ষেত্রে মাটির উর্বরতাশক্তি পরিবর্তিত হয়ে যায়, যার ফলে সেখানে নতুন ধরনের উদ্ভিদ কিংবা ফসল জন্মায়।
২. লাভার গতিপথে নদী থাকলে তার গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে।
৩. আগ্নেয়গিরির সঙ্কো যেসব বিষান্ত গ্যাস বের হয়ে আসে, তা মানুষ এবং অন্যান্য জীব-জন্তুর জন্য ক্ষতিকর।
৪. প্রচণ্ড উত্তাপে আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বন থাকলে তাতে আগুন লেগে যেতে পারে।
ভূমিকম্প ১. ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধস হয়, এমনকি নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
২. অনেক ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের সময় কোনো স্থানের মাটি উঁচু হয়ে পাহাড়-টিলা গঠন করতে পারে। 
৩. অনেক স্থানে মাটি ফেটে গিয়ে অথবা নিচের দিকে দেবে গিয়ে জলাভূমিও তৈরি করতে পারে।
৪. প্রবল মাত্রার ভূমিকম্পে মানুষসহ বিভিন্ন পশুপাখির প্রাণহানি ঘটে এবং সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
সুনামি১. সুনামির ফলে ভবন, সেতু এবং অন্যান্য অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষতিসাধন হয়। এর ফলে মানুষ
২. বাস্তুচ্যুত হয় এবং সম্পত্তির ক্ষতিসাধন হয়।
৩. নোনা পানির সাথে মিঠা পানির উৎসগুলোকে দূষিত করে
৪. সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন ঘটায়।
ঘূর্ণিঝড় ১. প্রবল বাতাস, ঝড়বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
২. ভবন, রাস্তা এবং অন্যান্য অবকাঠামো ধসে পড়ার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি যয়। 
৩. বন্যার কারণে পানির উৎস দূষিত হয়, যা রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে।
৪. ভারী বৃষ্টিপাত এবং শক্তিশালী বাতাসের কারণে ভূমিধস এবং মাটি ক্ষয় হয়
খরা১. মানুষ এবং প্রাণী উভয়ের জন্য ফসলের ফলন কমে যায় যা খাদ্য ঘাটতি ঘটায়।
২. জল এবং খাদ্যের সন্ধানে প্রাণীরা স্থানান্তরিত হয়, যা বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করে এবং প্রজাতির মধ্যে স্বতন্ম সৃষ্টি করে।
৩. শুষ্ক অবস্থার কারণে বনের মধ্যে আগুনের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা বনাজীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। 
৪. ভূগর্ভস্থ পানির ক্ষয়, যা ভূমির অবনমন এবং অন্যান্য ভূতাত্ত্বিক বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ফিরে দেখা

১। অভিজ্ঞতার কাজগুলো করতে তোমাদের কেমন লেগেছে?

উত্তর: অভিজ্ঞতার কাজগুলো করতে আমাদের ভালো লেগেছে।

২। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং কমিউনিটির লোকজনকে সচেতনতা কার্যক্রম প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্রাস করতে কীভাবে ভূমিকা রাখবে বলে তুমি মনে করো?

উত্তর: প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সকলে অবগত হবে। দুর্যোগ প্রতিরোধে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে যা জানমালের ক্ষতি কমাবে। এছাড়া দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ সহজ হয়ে যাবে। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হবে।

৩। কোন কাজটি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে? চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবেলা করেছ?

উত্তর: দূর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা কাজটি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়-

i. দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ সহায়তা সকলকে পৌঁছে দেয়া।

ii. নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা করা।

iii. প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা।