এই পোস্টে আমরা জানব ষষ্ঠ শ্রেনীর, বিষয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা এর ষষ্ঠ অধ্যায়, সম্পর্কের যত্নে খুঁজে পাই রত্ন সম্পর্কে।
কাজ ১: নিচের ছবিটিতে আমার আন্তঃসম্পর্কগুলো দেখাব। প্রতিটি তীর চিহ্নের পাশে আমার আন্তঃসম্পর্কগুলো লিখি। যেমন- ‘পরিবার’ লেখা বৃত্তের সাথে তীরচিহ্নগুলোতে পরিবারের আন্তঃসম্পর্কগুলো লিখব।
বিদ্যালয় :
→ শিক্ষাগ্রহণ করি
→ পিঠি ক্লাসে অংশগ্রহণ করি
→ মাঠে সহপাঠীরা মিলে খেলা করি
→ পাঠাগারে বই পড়ি
পরিবার :
→ দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা দেয়
→ সমস্যাগুলো ভাগ করে নিই
→ মূল্যবোধ শেখায়
→ সবাই মিলে বেড়াতে যায়
বন্ধু :
→ একসাথে টিফিন করি
→ একসাথে খেলাধুলা করি
→ একে অপরকে সাহায্য করি
→ একসাথে বিদ্যালয়ে যায়
আত্মীয়-স্বজন :
→ পরস্পরের খোঁজ খবর নিই
→ পারিবারিক অনুষ্ঠানে সবাই মিলে আনন্দ করি।
→ ঈদ/পূজার উপহার দেওয়া-নেওয়া করি
→ আত্মীয়দের বাড়িতে যায়
প্রতিবেশী :
→ মাঝে মাঝে একসাথে ঘুরতে যায়
→ প্রতিবেশীদের সম্মান করি
→ ভালো খাবার প্রতিবেশীদের সাথে শেয়ার করি
→ প্রতিবেশীদের বিপদ-আপদে সহযোগিতা করি
কাজ ২ : আমার কাছে আন্তঃসম্পর্কের প্রধান গুরুত্বগুলো কী তা বৃত্ততে লিখি। সব বৃত্তে লেখার পর যদি আরও কিছু লিখতে চাই তাহলে ডায়াগ্রামটির নিচের খালি অংশেও লিখতে পারি।
উত্তর : আন্তঃসম্পর্ক কেন এত গুরুত্বপূর্ণ :
- আন্তঃসম্পর্কের ফলে আমাদের মূল্যবোধ বৃদ্ধি পায়
- অন্তঃসম্পর্ক থাকলে ঐক্য সহযোগিতার মনোভাব বৃদ্ধি পায়
- আন্তঃসম্পর্ক থাকলে উদ্ভাবনী শক্তি বৃদ্ধি পাই
- সামাজিক বন্ধন অটুট থাকে
- কোনো কাজে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা
- অনেক কঠিন কাজ সকলের সহযোগিতায় সহজ হয়ে যায়
আমরা জানব আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ ও বিশ্বস্ত সম্পর্ক বিষয়ে। শুরুতেই আমাদের বিশ্বস্ত সম্পর্কের কয়েকটি ছবি এঁকে নিই-
কাজ ৪ : আমরা একটু ভাবি, কোন গুণ বা বৈশিষ্ট্যের জন্য এঁদের সাথে আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সম্পর্ক। তাদের কোন আচরণের জন্য তাদের বিশ্বস্ত মনে করছি। কীভাবে আমরা এই সম্পর্ক আরও বিশ্বস্ত ও সুন্দর করে তুলতে পারি। শ্রেণিতেও আমাদের সাথে নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সেসবের আলোকে নিজে ভেবে ছকটি পুরণ করি
কেন এই সম্পর্কগুলোকে আমি বিশ্বস্ত মনে করছি। | এই সম্পর্কগুলোকে আরও সুন্দর করার জন্য আমি কী করতে পারি |
১ নং ছবি আমার বাবার আমার বাবা আমাকে খুব ভালোবাসেন। আমি কোনো ভুল করলে বাবা আমাকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলেন। আমার ইচ্ছেগুলো পূরণের চেষ্টা করেন। | বাবার উপদেশমতো চলব। বাবা কষ্ট পাবে এমন কোনো কাজ করব না। |
২নং ছবি আমার মায়ের মা আমার প্রতি খুব যত্নশীল। আমার সফলতায় যা খুব খুশি হয়। আমি কিছু বললে মা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। | মাকে কাজে সহযোগিতা করব। তার কাছে কখনো মিথ্যা বলব না। |
৩নং ছবি আমার বড় বোনের বোন আমার পছন্দগুলোকে প্রাধান্য দেন। আমি কোনো কারণে কষ্ট পেলে আমাকে সান্ত্বনা দেন। আমাকে স্কুলের কাজ শেষ করতে সাহায্য করেন। | বোনের সাথে ঝগড়া করব না। তার কথা শুনব। |
৪নং ছবি আমার দাদার দাদা আমাকে স্নেহ করেন। তার বহুদিনের বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতার গল্প শুনান। | দাদাকে শ্রদ্ধা করব। দাদার সাথে সময় কাটান। |
কাজ ৫ : (ঘটনা-১) : অনন্যা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন সে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে তার এলাকার একটি ছেলে তাকে উত্ত্যক্ত করে, অশোভন মন্তব্য করে। তার খুব ভয় কাজ করে, হাত-পা কাঁপে, সে একা চলাফেরা করতে পারে না, মনে হয় কেউ তাকে অনুসরণ করছে। সে খুব অনিরাপদবোধ করে এবং আতঙ্ক লাগে সে ছেলেটা যদি তার কোনো ক্ষতি করে। সে বুঝতে পারছে না যে এই পরিস্থিতিতে সে কী করবে বা কীভাবে তার বাবা-মাকে বিষয়গুলো জানাবে। সে এতটাই মানসিক চাপ বোধ করছে যে সে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না।
প্রশ্ন : এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী ?
উত্তর : এখানে সমস্যাটি হচ্ছে অনন্যাকে কোনো একটি ছেলে উত্তার ও অশোভন মন্তব্য করা। তাই যে কোনো সময় বখাটে ছেলেটির অনন্যার ক্ষতি করার ঝুঁকি রয়েছে।
প্রশ্ন : কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?
উত্তর : এলাকার বখাটে ছেলেটি অনন্যাকে উত্ত্যক্ত করা এবং অশোভন মন্তব্য করার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া অনন্যা সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করা ও পরিবারের কারো সাথে শেয়ার না করার কারণে ঝুঁকি বাড়ছে।
প্রশ্ন : সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?
উত্তর : অনন্যার খুব মন খারাপ লাগছে তার মধ্যে সবসময় ভয় কাজ করছে। তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ও চলাফেরা এতে বিঘ্নিত হচ্ছে। মানসিক চাপ থেকে এক সময় সে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
কাজ ৬ : (ঘটনা-২) : শোভন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। সে তার সহপাঠীদের তুলনায় দেখতে মোটা ও লম্বা। তার সহপাঠীরা সব সময় তাকে নিয়ে হাসাহাসি করে, তাকে বিদ্রূপ করে। তাকে বিভিন্ন প্রাণীর সাথে তুলনা করে ও ব্যঙ্গাত্মক নামে ডাকে। এমনকি তারা তাকে খেলায় নেয় না, তাদের সাথে মিশতে গেলে তারা তাকে গুরুত্ব দেয় না, এড়িয়ে চলে। শোভনের এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব মন খারাপ থাকে। তার নিজেকে খুব ছোট মনে হয়, খুব একা আর অসহায় লাগে। ধীরে ধীরে তার আত্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছে, সে সবকিছুতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ও হতাশ হয়ে পড়ছে। সে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। আজকাল তার কারও সাথে মিশতেও খুব ভয় হয়।
প্রশ্ন। এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী?
উত্তর : এখানে সমস্যাটি হচ্ছে শোষন তার সহপাঠীদের দ্বারা হাসাহাসি ও বিদ্রূপের শিকার। তারা তাকে প্রাণীর সাথে তুলনা করে ও ব্যাঙ্গাত্মকভাবে ডাকে। অর্থাৎ শোভন মূল বুলিং-এ শিকার। এর ফলে শোষন স্কুলে যেতে অনীহা প্রকাশের ঝুঁকি রয়েছে।
প্রশ্ন। কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?
উত্তর : শোভনের সহপাঠীরা আন্তরিক নয়। তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। এছাড়া শোষন তার সমস্যাকে গোপন করছে। যার ফলে সমস্যার সমাধানে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাচ্ছে না।
প্রশ্ন। সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?
উত্তর : শোভন নিজেকে একা এবং অসহায় ভাবছে। তার আত্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছে। সে চুপচাপ ও মন খারাপ করে থাকে। ফলে তার মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
কাজ ৭ : (ঘটনা-৩) রাফির বয়স ১২। ওরা দুই ভাই বোন– রাফি আর মনিকা। মনিকা বড়। মনিকা কিছুদিন আগে বিদেশে চলে যায়। ওখানে পড়াশোনা করছে। রাফি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বোনের সাথে রয়েছে বয়সের ব্যবধান। বোন বিদেশে চলে যাওয়াতে কেমন চুপচাপ হয়ে যায়। বোন বিদেশ থেকে মোবাইল পাঠায়। লকডাউনে স্কুল বন্ধ হবার পর আরও একা হয়ে যায় রাফি। মা ঘরের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। বাবা ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকে বেশি। এই সব ভালো লাগে না রাফির। ইদানীং অনলাইনে কিছু বন্ধুর কাছ থেকে গেম খেলা শিখেছে। সারাদিন সারারাত মোবাইলে গেম খেলে। খাওয়া, ঘুম, সামাজিকতা কিছুই নেই। মোবাইলে যদি চার্জ না থাকে তাতে সে উদ্বিগ্ন হয়। রুম থেকে বের হয় না। একটা রুমেই বন্দি করে ফেলেছে সে নিজেকে। অসম্ভব মেজাজ হয়েছে তার। সব কিছু কেড়ে নিয়েছে এই মোবাইল যন্ত্রটি। রাফির বাবা-মায়ের মতে সব কিছুর মূলে এই মোবাইল এবং তার প্রতি আসত্তি।
প্রশ্ন। এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী ?
উত্তর : মনিকার পাঠানো মোবাইলটি এখানে সমস্যা বা ঝুঁকি। মোবাইলটি না পেলে রাফির মোবাইলের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হতো না।
প্রশ্ন। কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?
উত্তর : রাফির মা-বাবার অসচেতনতার কারণে এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি সৃষ্টি হচ্ছে। যদি রাফির মা-বাবা মোবাইল ব্যবহারে তাকে সচেতন করত এবং অন্যান্য কাজে সক্রিয় রাখত, তবে এ সমস্যা সৃষ্টি হতো না।
প্রশ্ন। সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?
উত্তর : মোবাইল আসক্তির ফলে রাফির খাওয়া, ঘুম, সামাজিকতা কিছুই নেই। রুম থেকে বের না হওয়ায় তার মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। এতে তার মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
কাজ ৮ : (ঘটনা-৪) : সেলিনার বয়স ১১। সামনে ওর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা। বাবা-মায়ের স্বপ্ন মেয়ে অনেক বড় হবে। তাই কড়া শাসনে রাখে। পড়ার জন্য অনেক চাপ দেয় ওকে। সবার চেয়ে ভালো করতে হবে ওর। ভুল আর কোচিং- এই নিয়েই এর জীবন। খেলাধূলার সুযোগ নেই। স্কুলের পরীক্ষায় সবার চেয়ে ভালো করতে না পারলে বাবা-মা শাসন করেন। অথচ ওর বন্ধুদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে ভালো লাগে না। সেলিনার এখন পড়ার কথা ভাবলেই বিরক্ত লাগে। পরীক্ষার কথা ভাবলেই টেনশন হয়। ঘাম হয়। হতাশ লাগে, ঘুম আসে না। ওর ইচ্ছে করে সব ছেড়ে দিয়ে দূরে কোথাও চলে যেতে।
প্রশ্ন। এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী?
উত্তর : এখানে সমস্যাটি হলো পরীক্ষায় ভালো করার জন্য সেলিনাকে শারীরিক ও মানসিক চাপ।
প্রশ্ন। কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?
উত্তর : বাবা-মায়ের ভুল ধারণা থেকেই এই সমস্যাটি সৃষ্টি হচ্ছে। তারা মনে করছে সেলিনা সবসময় পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেই সবার চেয়ে ভালো করতে পারবে।
প্রশ্ন। সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?
উত্তর : পড়ালেখার প্রতি বিরক্তভাব আসছে। পরীক্ষার কথা ভাবলেই টেনশন হয়। সেলিনার ইচ্ছে করে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে দূরে কোথাও চলে যেতে।
কাজ ৯ : আমার নিজের ভাবনা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে ৩টি ঝুঁকির কথা ভাবি। বাবা-মা বা কমিউনিটির বিশ্বস্ত কারো সাথেও এ নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এরপ নিচের ছকটি পুরণ করি।
আমি কী কী ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারি | ঝুঁকিগুলো আমি কীভাবে বুঝব | ঝুঁকিগুলো আসার আগেই সতর্ক হওয়া বা এলে মোকাবিলা করা কেন জরুরি |
১। ‘অনলাইন’ ঝুঁকি | ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমি ঘরে বসেই সাধারণ জ্ঞানের প্রসার, শুদ্ধভাবে পঠন ও সুন্দর লেখার চর্চা, ছবি আঁকা ইত্যাদি শিখতে পারি। যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে এগুলোর চেয়ে ভিডিও গেম খেলতে কিংবা ইউটিউবে কার্টুন দেখতে বেশি ইচ্ছে করবে। | অনলাইন’ ঝুঁকি স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। এর ফলে পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ কমে যায়। পরিবার ও বন্ধুদের সাথে দূরত্ব বাড়ায়। |
২। সাইবার বুলিং | কেউ যদি অনলাইনে আমাকে অহেতুক বিরক্ত করে এবং সম্মানহানির চেষ্টা করে। এছাড়া আমার ছবি ও আইডি ব্যবহার করে আমার নামে ভুয়া আইডি খুলে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করে। | এ ধরনের ঝুঁকি মানসিকভাবে খুব বিব্রত করে। আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটায়। এছাড়া এ ধরনের সমস্যা বন্ধুদের সাথে মেলামেশা ও সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলার মনোভাব সৃষ্টি করে। |
৩। শিশু পাচার | কেউ আমাকে প্রলোভন দেখিয়ে মা-বাবা থেকে আলাদা করতে চাইলে, আমাকে অপহরণের চেষ্টা করলে, দালাল চক্রের হাতে পড়লে কিংবা শোষণের উদ্দেশ্যে আমাকে আশ্রয় দিতে চাইলে। | দাসত্ব, জোরপূর্বক শ্রম শোষণ প্রভৃতি উদ্দেশ্যে শিশু পাচার করা হয়। মানবপাচার একটি দিক যার পরিণাম হয় ভয়াবহ। |
কাজ ১০ : খুব সুন্দরভাবে আমরা মানচিত্র এঁকে আমার এলাকার সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করেছি। এগুলোতে আমরা হয়তো সরাসরি গিয়ে সেবা নিতে পারি। এরকম ৫টি সেবা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ফোন নং এবং ই-মেইল এড্রেসের তালিকা নিচের ছকে পূরণ করি। প্রয়োজনে শিক্ষকের সাহায্য নিই, ইন্টারনেটে খোঁজ করি বা কমিউনিটির দু’একজন সেবাকর্মীর সাথে কথা বলি।
আমার নাম জিসান খান। আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। আমার বাড়ি চরণদ্বীপ , বোয়ালখালি, চট্টগ্রাম। আমার এলাকায় বেশকিছু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনে আমরা সেবা নিতে পারি। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হলো :
আমার এলাকার সেবা প্রতিষ্ঠানের নাম | ঠিকানা | ফোন | ই-মেইল (যদি থাকে) |
ইউনিয়ন পরিষদ | চরনদ্বীপ, বোয়ালখালি, চট্টগ্রাম | ০১৮১০-১২৩৪**** | |
পুলিশ স্টেশন | গোমদন্ডী, বোয়ালখালি, চট্টগ্রাম | ০১৮১০-১২৩৪**** | |
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স | গোমদন্ডী, বোয়ালখালি, চট্টগ্রাম | ০১৮১০-১২৩৪**** | |
তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান | চরণদ্বীপ, বোয়ালখালি,চট্টগ্রাম | ০১৮১০-১২৩৪**** | |
পশ্চিম চরণদ্বীপ একতা যুব সংঘ | চরণদ্বীপ, বোয়ালখালি,চট্টগ্রাম | ০১৮১০-১২৩৪**** |
কাজ ১১ : আমাদের যেই যেই আসল রত্নগুলো আছে, সেই রত্ন ব্যবহার করে কীভাবে নকল রত্ন থেকে দূরে থাকব সেটাই এবার আমরা জানব। শ্রেণিতে ইতিমধ্যে শিক্ষক আমাদের নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেই আলোচনার আলোকে নিচের পরিকল্পনা ছকটি পূরণ করি।
ঝুঁকিসমূহ | ইভটিজিং • সাইবার • বুলিং শিশু পাচার |
কোন বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নেব | প্রথমে বাবা-মার সাথে সমস্যা বা ঝুঁকিটি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করব। পাশাপাশি খুব বিশ্বস্ত বন্ধু ও আত্মীয়ের সাথে পরামর্শ করব। প্রয়োজনে স্কুলের শ্রেণি শিক্ষকের সাহায্য নেব। |
কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেব (যদি প্রয়োজন হয়) | ইউনিয়ন পরিষদের সাহায্য নেব। এর মাধ্যমে সমাধান না হলে পুলিশ স্টেশনে যাব। জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করে জরুরি সেবা নেব |
👉 https://studyian.com/onuvuti-o-proiujoner-kotha-boli-class6/
কাজ ১২ : আগের দুটি সেশনে আমরা ঝুঁকি নিরসনে ব্যক্তিগত পরিকল্পনা করেছি। সেই পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে দলে ভাগ হয়ে শ্রেণিতে ভূমিকাভিনয় করেছি। যেই ৪টি ঝুঁকি নিয়ে ঘটনা বিশ্লেষণ করেছিলাম, সেই ৪টি ঘটনার ওপর ভূমিকাভিনয় করেছি। ভূমিকাভিনয়ে আমরা বিশ্বস্ত সম্পর্ক ব্যবহার ও সেবা প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের (যদি প্রয়োজন হয়) অভিনয় করে দেখিয়েছি। এবার ভূমিকাভিনয়গুলোর আলোকে ঘটনা ৪টির জন্য নিচের অংশগুলো পূরণ করি।
ঘটনা-১- এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন :
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা / ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে
■ বাবা-মাকে আমার সমস্যাটি নিয়ে বিস্তারিত বলেছি। এছাড়া শ্রেণিশিক্ষককে সমস্যাটি সম্পর্কে অবগত করেছি।
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়) আমি, বাবা ও মা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান মহোদয়কে সমস্যাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই। পরবর্তীতে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে এলাকার উত্ত্যক্তকারী ছেলেটির ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলাম।
ঘটনা-২- এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন :
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে
■ আমার বাবা-মাকে সমস্যাটি সম্পর্কে জানিয়েছি। ভালো সহপাঠীদের নিয়ে যে সহপাঠীরা আমাকে মানসিক চাপে রাখছে তাদের বুঝিয়ে বলেছি।
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়) আমি সমস্যাটি নিরসনে বিদ্যালয়ের সাহায্য নিয়েছি। শ্রেণিশিক্ষক ও প্রধান শিক্ষককে আমার সমস্যাটি জানিয়েছি।
ঘটনা-৩-এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন :
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কে সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে
■ আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে বাবা-মা ও শ্রেণিশিক্ষকের সাহায্য নিয়েছিল। কী কারণে মোবাইল আসক্তিতে ভোগছে সে বিষয়টি তাদেরকে খোলাখুলিভাবে বলেছিল।
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা / ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়)
■ আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে কিশোর কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছিল। সেখানে ডারার মোবাইল আসত্তির ঝুঁকি নিরসনে কী কী করণীয় ও কীভাবে নিয়মিত সেগুলো চর্চা করবে সে ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা দিয়েছিল।
ঘটনা-৪-এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন :
■ আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কে সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে
■ এই সমস্যাটি নিরসনে আমি আমার দাদু ও প্রতিবেশী আন্টির সাহায্য নিয়েছি। তারা আমার বাবা-মার সাথে আমার সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়)
■ আমার ঝুঁকিটি নিরসনে বিদ্যালয় ও কোচিংয়ের সাহায্য নিয়েছি। স্কুলের শ্রেণিশিক্ষক ও কোচিংয়ের ম্যাডামের সাথে আমার সমস্যাটি শেয়ার করেছি।
কাজ ১৩ : সামনের এক মাস বিশ্বস্ত সম্পর্ক উন্নয়নের চর্চাসংক্রান্ত ঘটনাগুলোর বিবরণ ডায়েরি বা জার্নালে লিখে রাখব। এই সময়ে কোনো ঝুঁকির মুখোমুখি হলে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাথে কীভাবে শেয়ার করেছি, মতামত নিয়েছি সেগুলোও ডায়েরি বা জার্নালে লিপিবদ্ধ করব। এ ব্যাপারে শিক্ষক দরকার হলে আরও নির্দেশনা দেবেন। নিচের ছকের মতো করে বা আমার যেভাবে পছন্দ সেভাবে ডায়েরি বা জার্নালে লিপিবদ্ধ করে এক মাস পর শিক্ষকের কাছে জমা দেব।
তারিখ | বিশ্বস্ত সম্পর্ক উন্নয়নের চর্চাসংক্রান্ত ঘটনার বিবরণ (কোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়ে থাকলে সেটির বিবরণসহ) | এটি আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো কাজ/লক্ষ্যটি অর্জনে ভূমিকা রাখছে |
০১-০৩-২০২৩ | আমি প্রতিদিন সকালে স্কুলে যাই। স্কুলের পথে এক ব্যক্তি নিয়মিত আমার দিকে তাকিয়ে খারাপ মন্তব্য করে। তখন সেটি আমি প্রথমে আমার বাবা মাকে জানাই। তারা এই সমস্যার সমাধান করে দেয়। | আমি চাই সকল সমস্যা সকলের পরামর্শের মাধ্যমে সমাধান হোক। এখানে আমি পরামর্শ করার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছি। |
০৫-০৩-২০২৩ | আমার ছোট বোন জয়িতা। তার বয়স ১০ বছর। আমরা দু’জন খেতে বসলে সে আমাকে খেতে দিতে চায় না। আমি ব্যাপারটা আমার দাদিকে বলি। দাদি এই সমস্যার সমাধান করে দেন এবং বলেন কখনো হিংসা করবে না। | এই ঘটনার মাধ্যমে আমি অহিংসার গুণ অর্জন করতে পেরেছি। |
১১-০৩-২০২৩ | আমার বন্ধু ফাহিম। সে আমার খেলার সাথি। আমরা একসাথে খেলাধুলা করি। খেলার মাঝে সে আমাকে গালি। দেয়। আমি তখন তাকে বলি গালি দেওয়া ঠিক নয়। | ধৈর্যধারণ একটি মহৎগুণ এই গুণটি আমরা অর্জন করতে পেরেছি। |
১৫-০৩-২০২৩ | আমরা চার বন্ধু একসাথে স্কুলে যাই। হঠাৎ রবিন নামের এক বন্ধু পা পিছলে পড়ে যায়। তখন তাকে আমরা সবাই। মিলে পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়ে যাই। | এই ঘটনার মাধ্যমে সহযোগিতার মনোভাব অর্জন করতে পেরেছি। |
২০-০৩-২০২৩ | আমার বন্ধু আবদুস সালাম দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় লেখাপড়া করতে পারেনি। আমরা আমাদের শ্রেণি শিক্ষকের সাথে পরামর্শ করে তাকে সহায়তা করি। | এ ঘটনার মাধ্যমে বিপদে পরামর্শ দান ও সহায়তা করার গুণটি অর্জন করতে পেরেছি। |
২৫-০৩-২০২৩ | আমার প্রতিবেশী সায়মা। তার বয়স ১৫ বছর। তার মা- বাবা তার বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমি সে কথা জানতে পেরে ১০৯৮ এ ফোন দিয়ে বাল্যবিবাহ। রোধ করতে সহায়তা করি। | বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এক বলিষ্ঠ উদাহরণ এই ঘটনাটি। আমরা এভাবে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারি। |