কল্পবিজ্ঞানের গল্প! – সমাধান | বিজ্ঞান (অনুশীলন বই)  – ৯ম অধ্যায় | সপ্তম শ্রেণী

কল্পবিজ্ঞানের গল্প! - সমাধান | বিজ্ঞান (অনুশীলন বই)  – ৯ম অধ্যায় | সপ্তম শ্রেণী

এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর  বিষয় বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) এর নবম অধ্যায়, কল্পবিজ্ঞানের গল্প! সম্পর্কে।

গল্পের বই পড়তে নিশ্চয়ই তোমাদের সবারই ভালো লাগে? রূপকথা, বাস্তবধর্মী সাহিত্য, সায়েন্স ফিকশন বা কল্পবিজ্ঞান, ইত্যাদি কতরকম বইই তো তোমরা পড়ো। কেমন হতো, যদি তোমাদের নিজেদের লেখা, আঁকা নিয়ে একটা বই প্রকাশিত হতো যার প্রকাশকও তোমরা নিজেরাই? বিজ্ঞান বিষয়ের অংশ হিসেবে যেহেতু এই কাজ, কাজেই বিষয় হিসেবে বেছে নেয়া যাক কল্পবিজ্ঞান।

চলো, শুরু করি তাহলে!

প্রথম সেশন 

শিক্ষক অথবা প্রকাশনার সাথে যুক্ত এমন কারোর সহায়তায় বই প্রকাশের বিভিন্ন ধাপের একটি তালিকা তৈরি করি।

উত্তর:

বই প্রকাশনার ক্রমিক ধাপ
১. পাণ্ডুলিপি তৈরি
২. পাণ্ডুলিপির জন্য প্রয়োজনীয় চিত্র অঙ্কন এবং সংযোজন
৩. পাণ্ডুলিপি কম্পোজ
৪. সম্পাদনা
৫. প্রুফ দেখা
৬. প্রচ্ছদ তৈরি
৭. ছাপা
৮. বাঁধাই
৯. মোড়ক উন্মোচন

সায়েন্স ফিকশনের বিষয়বস্তু কী?

উত্তর: সায়েন্স ফিকশন হচ্ছে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ভবিষ্যতের পৃথিবী, মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ, সময় পরিভ্রমণ, ভিনগ্রহের প্রাণী এগুলোই সায়েন্স ফিকশনের বিষয়বস্তু।

দ্বিতীয় সেশন 

ছক – ১

উত্তর:

দলের নামসদস্যের নামকাজ


এন্ড্রোমিডা
শাহীনূরচিত্রাঙ্কন
আরিফচিত্রাঙ্কন 
সুহৃদপাণ্ডুলিপি তৈরি
প্রনয়পাণ্ডুলিপি তৈরি
অন্তিঅলংকরণ

সম্পাদক ও প্রকাশক কমিটির সদস্যরা অন্যদের সাথে আলোচনা করে বই প্রকাশের বিভিন্ন ধাপের ডেডলাইন ঠিক করে নিই। তারিখগুলো নিচের ছকে লিখে নিই।

ছক – ২

উত্তর: 

ধাপশেষ তারিখমন্তব্য
রচিত পাণ্ডুলিপি জমা০২/০৮/২০২৩পাণ্ডুলিপি জমা হয়েছে।
পাণ্ডুলিপি কম্পোজ০৮/০৮/২০২৩পাণ্ডুলিপি কম্পোজ সম্পন্ন হয়েছে।
সম্পাদনা০৬/০৮/২০২৩সম্পাদনা সম্পন্ন হয়েছে।
প্রুফ দেখা০৪/০৮/২০২৩প্রুফ দেখা সম্পন্ন হয়নি। আরো ১ দিন সময় প্রয়োজন।
প্রচ্ছদ তৈরি১০/০৮/২০২৩প্রচ্ছদ তৈরি হয়েছে।
ছাপা১১/০৮/২০২৩ছাপা সম্পন্ন হয়নি। আরো ১ দিন সময় প্রয়োজন।
বাঁধাই১৩/০৮/২০২৩বাঁধাই সম্পন্ন হয়েছে।

তৃতীয় সেশন

১। মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে কোন তথ্যটি তোমার কাছে সবচেয়ে চমকপ্রদ মনে হয়েছে?

উত্তর: মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে বিগ ব্যাং তত্ত্বটি আমার সবচেয়ে চমকপ্রদ মনে হয়েছে। মহাবিশ্ব যেহেতু সম্প্রসারিত হচ্ছে, তাই সুদূর অতীতে সমস্ত কিছু আরও কাছাকাছি ছিল অর্থাৎ তা এক বিন্দুতে পুঞ্জীভূত ছিল। বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুযায়ী, মহাবিশ্ব শুরুতে প্রচণ্ড উত্তপ্ত এবং অসীম ঘনত্বের একটি বিন্দু ছিল। প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে বিন্দুটি প্রচন্ডভাবে বিস্ফোরিত হয়। এই বিস্ফোরণকে বিগ ব্যাং বলা হয়ে থাকে। এই বিস্ফোরণই সমস্ত পদার্থ, শক্তি, স্থান এবং সময়ের উৎস। অসীম ঘনত্বের প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটি ক্ষুদ্র বিন্দুর বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই প্রকাণ্ড বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির ঘটনা প্রকৃতপক্ষেই বিস্ময়কর।

২। এই অধ্যায়ে নতুন কোন কোন শব্দ জানলে যেগুলোর অর্থ আগে জানতে না?

উত্তর: এই অধ্যায়ে শেখা নতুন শব্দগুলো হলো- টেলিস্কোপ, গ্যালাক্সি, এনড্রোমিডা, আলোকবর্ষ, বিগ ব্যাং, নিউক্লিয়ার ফিউশান, সুপারনোভা, ব্ল‍্যাক হোল।

৩। মহাবিশ্বের ধারণা নিয়ে মানুষের ধ্যান ধারণা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে কীসের ভিত্তিতে?

উত্তর: প্রাচীনকালে মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করার জন্য বিভিন্ন তত্ত্বের আশ্রয় নেয়া হতো। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ মনে করত যে সে সবকিছুর কেন্দ্রে অবস্থিত। বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণা প্রবর্তিত হয়। ধীরে ধীরে জ্যোতির্বিদরা আবিষ্কার করেন, সূর্যের মত কোটি কোটি নক্ষত্র দিয়ে আমাদের এই গ্যালাক্সি গঠিত। কয়েকশ বছর পর্যন্ত জ্যোতির্বিদদের কাছে মহাবিশ্ব বলতে আমাদের এই গ্যালাক্সিটিই ছিল। তারপর ১৯২০ এর দশকে উন্নত টেলিস্কোপের কল্যাণে জ্যোতিবিদরা আমাদের গ্যালাক্সির বাইরেও অন্যান্য গ্যালাক্সি দেখতে পান; যা আমাদের গ্যালাক্সির মতই কোটি কোটি নক্ষত্র দিয়ে তৈরি। তাই মহাবিশ্বের ধারণা নিয়ে মানুষের ধ্যান ধারণা বৈজ্ঞানিক,তথ্য, তত্ত্ব, গবেষণার ভিত্তিতে সময়ের সাথে ক্রমশ পরিবর্তিত হয়েছে।

৪। তুমি নিজে কি কখনও রাতের আকাশ ভালোভাবে লক্ষ করেছ? তোমার নিজের কোনো পর্যবেক্ষণের সাথে সূর্যকে ঘিরে পৃথিবীর ঘূর্ণন, সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহ, নক্ষত্রমণ্ডলী ও গ্যালাক্সি- ইত্যাদির কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও?

উত্তর: আমি রাতের আকাশ ভালোভাবে লক্ষ করেছি। পৃথিবীর নিজ অক্ষের চারদিকে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে ঘুরতে থাকে। তাই রাতের আকাশের দিকে খুব ভালোড়াবে লক্ষ করলে দেখা যায় নক্ষত্ররা পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে সরে যায়। 

৫। গল্পটার প্রেক্ষাপট এবং মূল বিষয়বস্তু কী।

উত্তর: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা অন্য একটি গ্রহের সাথে পৃথিবীর সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। হাতে সময় আছে মাত্র এক বছর। এ সংঘর্ষের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষার জন্য একদল বিজ্ঞানীর প্রাণান্তকর চেষ্টাই এ গল্পের প্রেক্ষাপট।

৬। কল্পবিজ্ঞানের এই গল্পে কী কী বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহূত হয়েছে অথবা কোন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্যের প্রসফা এসেছে?

উত্তর: এ গল্পে মহাকাশ ভ্রমণ, সময় পরিভ্রমণ, স্পেসশিপ এর বৈজ্ঞানিক তথ্যের প্রসঙ্গ এসেছে।

৭। এই গল্পে বৈজ্ঞানিক কোন তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তোমার মনে হয়েছে? হলে সেটা কী এবং কেন তোমার এমনটা মনে হলো?

উত্তর: এই গল্পে একটি বৈজ্ঞানিক তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ গল্পে মহাকাশচারীদের একটি দল এনড্রোমিডা গ্যালাক্সিতে গিয়ে ধেয়ে আসা গ্রহ ধ্বংসের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে গ্রহ ধাংসের জন্য ফিরে আসে। কিন্তু এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি পৃথিবী থেকে ২০ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে। তাই এক বছরের মধ্যে সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়।

চতুর্থ সেশন

তোমার নিজের নোট হিসেবে গল্পটার সারসংক্ষেপ নিচে টুকে রাখো-

উত্তর: নমুনা সারসংক্ষেপ:-

মহাকাশ বিজ্ঞানী আবু সাঈদ তার গবেষণাগারে কাজের ফাঁকে খানিকটা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মহাকাশ থেকে আগত বিভিন্ন মহাজাগতিক রশ্মি নিয়েই তার গবেষণা। হঠাৎ তিনি তার সুপার কম্পিউটারে কিছু অস্বাভাবিক সংকেতের আনাগোনা দেখতে পান। তিনি অবাক হয়ে লক্ষ করলেন, সংকেতগুলো অনিয়মিত কোনো নয়েজ নয়। বরং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নে সংকেতগুলো আসছে। ঘটনাটি তিনি তার গবেষণা দলের সাথে আলোচনা করলেন এবং তখনি তারা প্যাটার্ন গুলো বিশ্লেষেণে নেমে গেল। গবেষণা শেষে তারা দেখতে পেলেন, এটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে অবস্থিত P-3356X নক্ষত্রের XX-224LP গ্রহ থেকে আগত বার্তা। প্রখটর প্রাণীরা পৃথিবীর মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে। আগত বার্তাটি ভয়ানক। ১০ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে সুপারনোভা বিস্ফোরণের মাধ্যমে তৈরি হবে সূর্যের চেয়ে ৩০০ গুণ বড় ব্ল‍্যাকহোল। এ ব্ল‍্যাকহোলের তীব্র মহাকর্ষ টান পৃথিবী ও XX-224LPগ্রহ দুটিকে গ্রাস করে ফেলবে। এর হাত থেকে বাঁচতে হলে প্রয়োজন পৃথিবীর মানুষ ও XX-224LP গ্রহের প্রাণীদের যৌথ প্রচেষ্টা।

পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এ প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেন। দুই গ্রহের বিজ্ঞানীদের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ব্ল‍্যাকহোল নিষ্ক্রিয় করার উপায় বের হয় এবং তারা সেটি করতে সক্ষম হন। এ অভিযানের সাফল্যে পৃথিবীর মানুষ ও XX-224LP গ্রহের প্রাণীদের মধ্যে সৌহার্দ্যের সৃষ্টি হয়। তারা একসাথে মহাকাশ অভিযান চালানোয় সম্মত হয় এবং আরো অনেক মহাকাশ অভিযান চালনা করে।

প্রশ্ন-১। বই বাঁধাইয়ের ধাপগুলো কী কী

উত্তর: প্রথমে যে বই বাঁধানো হবে তার পৃষ্ঠাগুলোকে নম্বর অনুযায়ী পর পর সাজাতে হবে। তারপর পৃষ্ঠাগুলোকে সমান করে এক জায়গায় রেখে একধারে ভোমর বসিয়ে হাতুড়ির সাহায্যে তিনটা ছিদ্র করে নিতে হবে। এবার ভোমর ও সুতার সাহায্যে সেলাই করতে হবে। অনেক সময় সেলাইয়ের পাশাপাশি আঠাও ব্যবহার করা হয়। তাতে বইয়ের পৃষ্ঠা সহজে খোলে না। বইটির যে মলাট দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে হবে। সাধারণত বিভিন্ন রঙের আটপেপার দিয়ে বইয়ে মলাট দেওয়া হয়। বইয়ের মাপে আর্টপেপার কেটে বইয়ের ওপর ও নিচে আঠা দিয়ে দুপাশে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। মাপমতো র‍্যাক্সিন কেটে নিতে হবে। বইয়ের যে পাশে সেলাই দেওয়া হয়েছে, সেই পাশে র্যাক্সিন আঠা দিয়ে লাগাতে হবে। তাহলে বইটা দেখতে সুন্দর হবে। আঠা লাগানো হলে বইটা ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।

পঞ্চম সেশন

তোমার নিজের নোট হিসেবে গল্পটার সারসংক্ষেপ নিচে টুকে রাখো-

নমুনা সারসংক্ষেপ:

২২৪০ সাল। পৃথিবী ক্রমশ মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই জীবনধারনের জন্য অন্য গ্রহে স্থানান্তর আবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ডাটা বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর কাছাকাছি একটা গ্রহ খুঁজে পেলেন যেখানে আবহাওয়া মানুষের বসবাসের উপযোগী। সে গ্রহে মানুষ স্থানান্তরের কাজ শুরু হল। সেখানে নতুন নতুন শহর গড়ে উঠল। মানুষ স্বাচ্ছন্দে সেখানে বসবাস করতে লাগল। কিন্তু ঐ গ্রহের নিকটেই মানুষ থেকে প্রযুক্তিতে উন্নত এলিয়েন বসবাস করত। এই স্থানান্তরের পুরো সময় মানুষ এলিয়েনদের নজরদারিতে ছিল। এলিয়েনরা নিজেদের খুব কাছেই মানুষের স্থানান্তর ভালোভাবে নিতে পারে নি। তাই এলিয়েনদের সাথে মানুষের এক অসম লড়াই হয়। মানুষের দৃঢ় সংকল্প ও সাহসের বলে প্রতিকূল পরিবেশে অসম যুদ্ধে মানুষ জয়লাভ করে।

১। কল্পবিজ্ঞানের এই গল্পে কী কী বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহৃত হয়েছে অথবা কোন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্যের প্রসঙ্গ এসেছে?

উত্তর: কল্পবিজ্ঞানের এ গল্পে মহাকাশ ভ্রমণ, স্যাটেলাইট, ভিনগ্রহের প্রাণী, স্পেসশীপের বৈজ্ঞানিক তথ্যের প্রসঙ্গ এসেছে।

২। এই গল্পের কোন বিষয়টা তোমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে? কেন?

উত্তর: এ গল্পে ভবিষ্যতে আমাদের পৃথিবী যে ধরনের হুমকির মুখোমুখি হবে তার এক সচিত্র উপস্থাপন হয়েছে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্যের দ্বারা এ সমস্যার সমাধান ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এ গল্পে সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে দিকটি, তা হলো এ গল্পে মানুষের সাহস, সংকল্প, প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই করে বেঁচে থাকার তীব্র ইচ্ছা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।