এই পোস্টে আমরা জানবো ৭ম শ্রেনীর বিষয় বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) এর একাদশ অধ্যায়, হজমের কারখানা সম্পর্কে।
বিভিন্ন কারখানায় কীভাবে কাজ হয় কখনো দেখেছ? কারখানায় বিভিন্ন কর্মী বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে ধাপে ধাপে গোটা কাজটা সম্পন্ন করে। আমাদের শরীরের খাবার হজম করার জন্য যে পরিপাকতন্ত্র, সেখানেও একইভাবে খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে হজম শেষে বর্জ্য বের করে দেয়ার পুরো প্রক্রিয়াটা পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে, ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়। এই শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সেই হজমের কারখানাটাই ঘুরে ঘুরে দেখা যাক, চলো!
প্রথম সেশন
জুস কারখানায় কীভাবে জুস তৈরি হয় তা সম্পর্কে জেনে নেই।
উত্তর:
- গাছ থেকে পাকা আম সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয় কারখানায়, সেখানে সেগুলোকে ধুয়ে বাছাই করা হয়।
- এই দুই কাজ শেষে সেগুলো পেষণ মেশিনে দিয়ে পাল্প তৈরি করা হয়।
- পাল্লের মধ্যে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় জুস। এরপর বোতলজাত করে, লেবেলিং করার পর প্যাকেজিং করে আরেক দল মানুষ।
- সবশেষে আরেকদল মানুষ প্যাকেজিং করে জুসগুলোকে কারখানা থেকে বের করে পাঠিয়ে দেয় দোকানে দোকানে।
মনের কল্পনাশক্তি কাজে লাগিয়ে পরিপাকতন্ত্রের অঙ্গগুলোর ছবি ব্যবহার করে একটা কারখানার আদলে ছবি এঁকে ফেলো তো।
উত্তর: ছবি –
প্রশ্ন-১. আমাদের খাবার কি সরাসরি আমাদের দেহের কোষ কাজে লাগাতে পারে?
উত্তর: আমরা যে সকল খাবার গ্রহণ করি সেগুলো কোনোটিই আমাদের কোনো কোষই সরাসরি কাজে লাগাতে পারে না। আমাদের গ্রহণ করা খাবারগুলোকে আমাদের কোষের গ্রহণ উপযোগী করতে হলে পরিপাক প্রক্রিয়া দরকার হয়।
প্রশ্ন-২, আমরা মলত্যাগ করি কেন?
উত্তর: আমাদের গ্রহণ করা খাবারের যে অপাচ্য অংশ হজম হয় না বা দেহের কাজে লাগে না তা অপ্রয়োজনীয় মল হিসেবে সঞ্চিত হয়, তাই আমরা মলত্যাগ করি।
দ্বিতীয় সেশন
প্রতি দলের সবাই পরিপাক অক্টা ও তন্ত্রগুলোর অভিনয়ের মাধ্যমে দেখানোর প্রস্তুতি নেব।
লটারির মাধ্যমে কে কোন চরিত্রে অভিনয় করবে তা ঠিক করে ছকে লেখি।
উত্তর:
পরিপাকতন্ত্রের সাতটা অংশ বা অঙ্গের নাম | আমার দলের যে অভিনয় করবে |
মুখছিদ্র | অয়ন |
মুখগহ্বর | অর্নব |
গলবিল | সুমাইয়া |
অন্ননালি | নোমান |
পাকস্থলী | মারিয়া |
ক্ষুদ্রান্ত্র | সুনান |
বৃহদন্ত্র | সাদিক |
কোন অঙ্গটির নাম বাদ পড়ল? যে অঙ্গটির চরিত্রে অভিনয়ের পরিবর্তে ডাস্টবিন ব্যবহার করা হবে তার নাম লেখি-
উত্তর: মলদ্বার বা পায়ু।
প্রশ্ন-১, খাবার খাওয়ার সময় আমাদের মুখে লালা আসে কেন?
উত্তর: লালা আমাদের মুখগহ্বরে খাদ্য গ্রহণ, গলাধঃকরণ ও পরিপাকে সাহায্য করে, তাই খাওয়ার সময় আমাদের মুখে লালা আসে।
প্রশ্ন-২, ভাত ও মাছের মধ্যে মুখগহ্বরে কোনটির আংশিক পরিপাক হয়?
উত্তর: মুখগহ্বরে ভাতের আংশিক পরিপাক হয়, কারণ ভাত শর্করাজাতীয় খাদ্য কিন্তু মাহু আমিষজাতীয় খাদ্য।
তৃতীয় সেশন
প্রশ্ন-১. বেশি খাবার খেলে কিছু সময়ের জন্য আমাদের পেট ফুলে থাকে কেন?
উত্তর: আমাদের পেট বরাবর পাকস্থলী অবস্থিত। পাকস্থলীতে খাবার পরিপাকের পাশপাশি সাময়িকভাবে খাদ্য জমা থাকে। এজন্য বেশি খাবার খেলে পাকস্থলীতে জমা হওয়া খাবারের জন্য পেট ফুলে থাকে।
প্রশ্ন-২, আমাদের অন্তের ঝিল্লিতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে কী রোগ হবে?
উত্তর: আমাদের অন্ত্রের ঝিল্লিতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে ব্যাসিলারি আমাশয় হবে।
চতুর্থ সেশন
প্রশ্ন-১. ঘরবাড়িকে সোজাভাবে ধরে রাখতে শক্ত খুঁটি বা পিলার দিয়ে তৈরি কাঠামোর দরকার হয়, আমাদের দেহে কি এমন কোনো কাঠামো রয়েছে।
উত্তর: আমাদের দেহকেও সোলাভাবে ধরে রেখে একটি নির্দিষ্ট আকৃতি দিতে দেছে একটি মজবুত কাঠামো রয়েছে, সেটি হলো ককাল।
প্রশ্ন-২, কোন তৈলাক্ত পদার্থের উপস্থিতির জন্য আমরা আমাদের হাঁটু, কনুই খুব সহজে নড়াচড়া করতে পারি?
উত্তর: সাইনোভিয়াল রস নামক এক প্রকার তৈলাক্ত পদার্থের উপস্থিতির জন্য আমরা আমাদের হাঁটু, কনুই খুব সহজে নড়াচড়া করতে পারি।
ফিরে দেখা
তোমাদের এলাকায় কোন কারখানা দেখার অভিজ্ঞতা কি আছে? পরিপাকতন্ত্রের অকাগুলোর সাথে এই কারখানার বিভিন্ন কাজের কোন মিল কি খুঁজে পাও? তোমার ভাবনা নিচে লিখে রাখো।
উত্তর:
হ্যাঁ, আমাদের এলাকায় জুস তৈরির কারখানা দেখার অভিজ্ঞতা আছে। পরিপাকতন্ত্রের অঙ্গগুলোর সাথে এই কারখানার বিভিন্ন কাজের মিল রয়েছে।
পরিপাকতন্ত্রের অঙ্গ | কারখানার বিভিন্ন কাজ। |
মুখগহ্বর | ট্রাকে আম পরিবহন |
অন্ননালি | আমভর্তি ট্রাক কারখানায় নিয়ে আসা |
পাকস্থলী | জুস বানানোর প্রক্রিয়া শুরু |
ক্ষুদ্রান্ত্র | প্রয়োজনীয় উপাদান যোগ করা |
বৃহদন্ত্র | অপ্রয়োজনীয় বা অযাচিত অংশ আলাদা করা এবং জুস প্রক্রিয়াজাতকরণ |
পায়ু | জুস বানানোর সময় অপ্রয়োজনীয় বা অযাচিত অংশের নিঃসরণ |
পুষ্টি বা শক্তি কোষে পরিবহন | উৎপাদিত জুস ট্রাকের মাধ্যমে সর্বত্র পৌঁছে দেয়া |
কোন কোন অভ্যাসের কারণে, বা কোন অসচেতনতার জন্য পরিপাকতন্ত্রের কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে তুমি মনে করো?
উত্তর: সুস্থ পরিপাকতন্ত্র সুস্থ জীবনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কিছু অভ্যাস বা অসচেতনতা যেমন- খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ না করা, আঙ্গুলের নখ বড় রাখা, নির্দিষ্ট সময়ে না খাওয়া, বাসি বা পচা খাবার খাওয়া, পরিমিত নিরাপদ পান পানি না করা, অতিরিক্ত মসলা বা তেলযুক্ত এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ ইত্যাদির জন্য পরিপাকতন্ত্রের কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে আমি মনে করি।