কাজের মাঝে আনন্দ – সমাধান | জীবন ও জীবিকা – প্রথম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

কাজের মাঝে আনন্দ | জীবন ও জীবিকা - প্রথম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর জীবন ও জীবিকা বিষয় এর ১ম অধ্যায়, কাজের মাঝে আনন্দ সম্পর্কে।

“কাজের মাঝে আনন্দ” হল এমন একটি অভিজ্ঞতা যার মাধমে একজন মানুষ কাজ করার সময় আনন্দ পাবে এবং নিজেকে সন্তুষ্ট বোধ করবে। কোন কাজের মাধ্যমে যখন একজন লোক সেই কাজটি সম্পন্ন করে তখন সে সুখী হয় এবং নিজের এই কর্তব্য বা কাজ পালন করা একটি অভিজ্ঞতা হিসাবে মনে রাখে।

ছক ১.১: প্রতিদিনের কাজের তালিকা

বিভিন্ন সময়ের কাজনিজের কাজপরিবারের কাজ
সকালে যা করিদাঁত ব্রাশ করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া, সকালের নাস্তা খাওয়া, পড়া-শোনা করা, বই-খাতা, কলম ইত্যাদি ব্যাগে গুছিয়ে রাখা ইত্যাদিসকালের নাস্তা তৈরিতে সাহায্য করা, কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাখা, বিছানা গোছানো, খাবারের প্লেট ধোঁয়া ইত্যাদি।
বিকেলে যা করিগোসল করা, পোশাক পরিধান করা, খাবার খাওয়া, খেলাধুলা করা, নিজের খাবারের প্লেট, মগ, চামচ ইত্যাদি ধোয়া এবং গুছিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, খাবারের সময় বিশেষ আদব-কায়দা ও রীতিনীতি  মেনে চলা ইত্যাদি।পরিবারকে রান্নায় সাহায্য করা, বিকেলের খাবার তৈরিতে মাকে সাহায্য করা, খাবার-দাবার বাটিতে গুছিয়ে খাওয়ার স্থানে এনে রাখা, রান্নাঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা ইত্যাদি।
রাতে যা করিপড়াশোনা করা, বই-খাতা, কলম ইত্যাদি ব্যাগে গুছিয়ে রাখা, রাতের খাবার খাওয়া, নিজের খাবারের প্লেট, মগ, চামচ ইত্যাদি ধোয়া এবং গুছিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, খাবারের সময় বিশেষ আদব- কায়দা ও রীতিনীতি মেনে চলা ইত্যাদি।রাতের খাবার তৈরিতে মাকে সাহায্য করা, খাবার-দাবার বাটিতে গুছিয়ে খাওয়ার স্থানে এনে রাখা, রান্নাঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা ইত্যাদি।
ছুটির দিনে যা করিঘুরতে যাওয়া, পোষা প্রাণীদের দেখাশোনা ও পরিচর্যা করা, বাগান করা, গাছ পরিচর্যা করা, ব্যবহার্য জিনিসত্র গুছিয়ে রাখা, নিজের খাবারের প্লেট, মগ, চামচ ইত্যাদি ধোয়া এবং গুছিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, খাবারের সময় বিশেষ আদব-কায়দা ও রীতিনীতি মেনে চলা ইত্যাদি।ছুটির দিনে মা-বাবাকে বেশি সময় ধরে কাজে সাহায্য করা, রান্নাঘরে বেশি সময় দেওয়া, পরিবারের বৃদ্ধদের বেশি সময় দেওয়া এবং যত্ন নেওয়া ইত্যাদি।

ছক-১.২: নিজের কাজের সাপ্তাহিক পরিকল্পনা ও অনুশীলন

ক্রমিক নংনিজ পরিকল্পিত কাজরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহস্পতিশুক্রশনিআত্মপ্রতিফলন
নিজের বিছানা গোছানো
সময়মতো পড়াশুনা করাবেড়াতেযাওয়ায় শুক্রবারে পড়াশুনা করতে পারেনি।
পড়ার টেবিল/ বই-খাতা-কলম গোছানো
নিজের প্লেট, মগ, চামচ ধোঁয়া এবং গোছানোঅন্য একটি  কাজের জন্য এই কাজটি করতে ভুলে গেছিলাম।
কাপড়, জুতা, মোজা ও জিনিসপত্র গোছানো
খাবারের সময় বিশেষ আদব-কায়দা মেনে চলা
নিজের পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো পালন করা
অভিভাবকের মতামত: সে প্রতিদিনকার কাজগুলো নিয়মিতই করে থাকে।
শিক্ষকের মন্তব্য: সবঠিক আছে তবে তোমাকে তোমার কাজে আরো দায়ত্ববান হতে হবে।

ছক-১.৩: পরিবারের কাজের সাপ্তাহিক পরিকল্পনা ও অনুশীলন

ক্রমিক নংপরিবারের জন্য পরিকল্পিত কাজ (যে সব কাজ করবে তার তালিকা)রবিসোমমঙ্গলবুধবৃহস্পতিশুক্রশনিআত্মপ্রতিফ-লনঅভিভাব-কের মতামত
নিজের বিছানা গোছানো






সে প্রতিদিনের কাজগুলো নিয়মিতই করে থাকে।
সময়মতো পড়াশুনা করাবেড়াতেযাওয়ায় শুক্রবারে পড়াশুনা করতে পারেনি।
পড়ার টেবিল/ বই-খাতা-কলম গোছানো
নিজের প্লেট, মগ, চামচ ধোঁয়া এবং গোছানোঅন্য একটি কাজের জন্য এই কাজটি করতে ভুলে গেছিলাম।
কাপড়, জুতা, মোজা ও জিনিসপত্র গোছানো
খাবারের সময় বিশেষ আদব-কায়দা মেনে চলা
নিজের পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো পালন করা
সকালের নারতৈরিতে সাহায্য করা
বিকেলের খাবার তৈরিতে মাকেসাহায্য করা
১০রাতের খাবারতৈরিতে মাকে সাহায্য করা

👉 কাজের মাঝে আনন্দ – সমাধান | জীবন ও জীবিকা – প্রথম অধ্যায় | সপ্তম শ্রেণী 

ছক ১.৪: সাপ্তাহিক কাজের অনুশীলন ও প্রতিফলন

ক্রমকাজের বিবৃতিসাত দিন (৭)ছয় দিন (৬)পাঁচ দিন(৫)চার দিন (৪)তিন দিন (৩)দুই দিন (২)এক দিন (১)মোট স্কোর 
নিজের বিছানা গুছিয়েছি
সময়মতো পড়াশুনা করা
পড়ার টেবিল/ বই-খাতা-কলম গোছানো
নিজের প্লেট, মগ, চামচ ধোঁয়া এবং গোছানো
কাপড়, জুতা, মোজা ও জিনিসপত্র গোছানো
খাবারের সময় বিশেষ আদব-কায়দা মেনে চলা৭০
নিজের পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো পালন করা
রান্নার কাজে সহায়তা করেছি
ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে সহায়তা করেছি।
১০ছোট/বড় ভাই-বোনের কাজে সহায়তা করেছি
১১কাপড় ধোয়ার কাজে সহায়তা করেছি
১২ঘর গোছানোর কাজে সাহায্য করেছি।
১৩বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের(শিশু অসুস্থ / বৃদ্ধ) সেবাযত্ন করেছি।
প্রাপ্ত খেতাব: গোল্ড সদস্য
অভিভাবকের স্বাক্ষর: অভিভাবক হিসেবে বলতে পারি তার পারিবারিক কাজগুলো মোটামোটি ভালো হয়েছে।
আমার কথা: আমি চেষ্টা করেছি পারিবারিক কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করার।
শিক্ষকের মন্তব্য: তুমি মোটামোটি ভালো করেছে। পরবর্তীতে তোমাকে আরো ভালো করতে হবে। তুমি গোল্ড খেতাব অর্জন করেছ এখন তোমার লক্ষ্য থাকবে প্লাটিনাম খেতাব অর্জন করার।

আমাদের বিদ্যালয়কে কেমন দেখতে চাই তা নিয়ে একটি গল্প :

একটি শিশুর প্রথম ভালোলাগা শুরু হয় তার বিদ্যালয় থেকে। পরিবারের বাহিরে শিশুটি শিখবে তার পরিবেশ থেকে শিখবে তার শিক্ষকদের থেকে শিখবে তার সহপাঠীদের থেকে। বিদ্যালয় স্বপ্ন তৈরির স্থান যা স্বপ্ন দেখাতে শেখায় শিক্ষার্থীদের। কীভাবে তারা জাতীয় জীবনে অবদান রাখবে, কীভাবে মানবতার সেবা করবে। বিদ্যালয়ে থাকবে খেলার মাঠ, গাছপালা, পাখি। বিদ্যালয়ের পরিবেশ হতে হবে স্থায়ীভাবে পরিপাটি, পরিচালন হবে সুশৃঙ্খল, হতে হবে শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষা উপকরণের সমাবেশ। শিক্ষার্থী অনুপাতে অবশ্যই শিক্ষক থাকতে হবে, শিক্ষকদের হতে হবে স্বপ্নদর্শী, সৃজনশীল, আত্মবিশ্বাসী, তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন। একজন আদর্শ শিক্ষক ব্যতিরকে আদর্শ বিদ্যালয় কল্পনাও করা যায় না।

👉 পেশার রূপ বদল – সমাধান | জীবন ও জীবিকা – ২য় অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী 

ছক ১.৫: আত্মজিজ্ঞাসা

ক্রমকাজের বিবৃতিসবসময় (৫)বেশিরভাগ সময় (৪)মাঝে মাঝে (৩)কদাচিৎ (২)কখনো না (১)
টেবিল, বেঞ্চ পরিচ্ছন্ন করি
শ্রেণির সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করি
ওয়াশরুম পরিচ্ছন্নভাবে ব্যবহার করি
ক্লাসে অন্যান্যদেরকে লেখাপড়ায় সহায়তা করি
বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন রাখার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখি
ক্লাব কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করি
শ্রেণির কাজে শিক্ষককে সহায়তা করি
অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কথা বলি
যেকোনো সমস্যা / বিষয় যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি
১০ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরির কাজে সহায়তা করি
১১যেকোনো স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অগ্রণী থাকি
১২বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীদের সহায়তা করি
১৩সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলি
১৪নির্ধারিত সময়ে অর্পিত কাজ জমা দিই
প্রাপ্ত স্কোর: ০২
 খেতাব: টাইটানিয়াম সদস্য
দলনেতার মতামত/ স্বাক্ষর: ভালো করেছে
শিক্ষকের মন্তব্য: মোটামুটি ভালো তবে আরো ভালো করতে হবে।

আমার বিদ্যালয়, আমার ভালোবাসা দেয়ালিকার জন্য নিজের কথা লেখিঃ 

১। একজন আদর্শ শিক্ষক ব্যতিরেকে আদর্শ বিদ্যালয় কল্পনা করা যায় না।

২। আমরা সবাই বিদ্যালয়ের কাছে চির ঋনী, চির কৃতজ্ঞ।

৩। শিক্ষাই ঐক্য শিক্ষাই মুক্তি।

৪। একজন ব্যক্তির শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হলো বিদ্যালয়ের প্রথম দিন।

৫। মানুষকে সভ্য করে তুলার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বিদ্যালয়।

সূর্য রশ্মি পূরণ করিঃ

১. সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা

২. ট্রাফিক আইন মেনে চলা

৩. সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করা

৪. গরিব দুঃখীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করা

৫. অন্যের মতামতকে সম্মান জানানো

৬. বয়োজোষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখান

৭. আনোর বিপদে সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করা

৮. বায়োকনিষ্ঠদের আদর করা

সমাজের জন্য তুমি করেছ এমন একটি স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের অভিজ্ঞতার গল্প লেখঃ 

কোভিড-১৯ এর সময়, বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার সময় দেখি অসহায় মানুষের দুর্দশা। আয়রোজগার না থাকা পরিবহন শ্রমিক, রিকশাওয়ালা,চা-দোকানি, বাদাম-বিক্রেতা কিংবা পথশিশুদের হাহাকার। তখন বাড়িতে এসে ভাবলাম, তাদের জন্য কিছু একটা করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে বাসায় খাবার রান্না করে প্যাকেট করে ফুটপাতের মানুষদেরকে বিতরণ করি যেন তারা অনাহারে না থাকে। যখন খাবারগুলো তাদের হাতে দিতাম এক অদ্ভুত ভালোবাসা তাদের চোখে খুঁজে পেতাম যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করেছি তোমার পছন্দের ঘরে টিক (√) চিহ্ন দাও]

কাজসমূহকরতে পারিনি (১)আংশিক করেছি (২)ভালোভাবে করেছি (৩)
নিজ কাজ শনাক্তকরণ
পারিবারিক কাজ শনাক্তকরণ
নিজ কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা প্রণয়ন
পারিবারিক কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা প্রণয়ন
পরিকল্পনা অনুযা কাজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন
বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য শনাক্তকরণ 
বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শনাক্তকৃত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে পরিকল্পনা প্রণয়ন
পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন
সামাজিক ক্ষেত্রে শনাক্তকরণ
পরিকল্পনা অনুযায়ী সামাজিক ক্ষেত্রে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন
মোট স্কোর: ৩০তোমার প্রাপ্ত ক্ষোর: ২৫শিক্ষকের মন্তব্য: মোটামুটি ভালো হয়েছে। আরো ভালো করতে হবে।

সুতরাং এভাবে হাসতে হলে এই অধ্যায়ের যেসব বিষয়গুলো আমাকে আরো ভালোভাবে জানতে হবে তা লিখি:

উত্তর: ক্লাব কার্যক্রম পরিচালনা করা, বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য শনাক্তকরণ, পারিবারিক কাজ শনাক্তকরণ।

যে কাজগুলোর নিয়মিত চর্চা আমাকে চালিয়ে যেতে হবে সেগুলো লিখিঃ

উত্তর: ট্রাফিক আইন মেনে চলা, অন্যের বিপদে সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করা, সবসময় পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা, বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানো, পারিবারিক কাজে সাহায্য কর।

এই অধ্যায় শেষে আমার অর্জন নিয়ে শিক্ষকের মন্তব্য:

প্রতিদিনকার নিজের কাজগুলো করতে শিখেছ, পরিবারের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত হয়েছ, সমাজের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবগত হয়েছ।

Leave a Comment