সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি – সমাধান | বাংলা – ষষ্ঠ অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি – সমাধান | বাংলা – ষষ্ঠ অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর  বিষয় বাংলা এর ৬ষ্ট অধ্যায়, সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি সম্পর্কে।

আরো সহজে শিখতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে থাকা এই বিষয়ক ভিডিও থেকে।

১ম পরিচ্ছেদ 

কবিতা পড়ি ১

আমি সাগর পাড়ি দেবো

কাজী নজরুল ইসলাম 

বুঝে লিখি

‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।

‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ মাতৃপ্রেম ও দেশপ্রেমের কবিতা। কবিতায় মা ও স্বদেশ একাকার হয়ে আছে। কবি এখানে দুঃসাহসী সওদাগর হয়ে সপ্ত মধুকর সাগরে ভাসিয়ে দেশান্তরে যেতে ইচ্ছুক। পথের সকল বাধা অতিক্রম করে তিনি পৃথিবীর সমুদয় দেশ থেকে ধনরত্ন বোঝাই করে দেশে ফিরতে চান। এমনকি নিজ দেশের সম্পদ অন্য দেশে রপ্তানি করতেও চান। আর নিজের দেশে অভাবও মিটাতে চান অন্য দেশ থেকে সম্পদ আহরণ করে। কারণ কবির দেশমাতা বড়ো দুঃখী, বড়ো অভাবী। তাই মায়ের অভাব ও দুঃখ ঘুচিয়ে মাকে সুখী করাই কবির জীবনের একমাত্র ব্রত।

জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি

‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতায় জীবনের বা চারপাশের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়ঃ

কবিতার মতো আমরা অনেকেই দূর অজানায় হারিয়ে যেতে চাই। সাগরেই হারাতে হবে এমন নয়, কেউ পাহাড় দেখতে যায়, কেউ বনের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য উপভোগ। করতে চায়। এরকম ইচ্ছা চারপাশের অনেকেরই জাগে। ভাস্কো দা গামা, কলম্বাস কিংবা আমাদের মুসা ইব্রাহীমের মতো অনেকেই কঠিন সব অভিযানের মাধ্যমে পৃথিবীকে জয় করতে সচেষ্ট হয়েছে। আমই নিজে যদিও খুব একটি ঘুরতে সুযোগ পাইনি। স্কুল থেকে আমি শিক্ষা সফরে সিলেটের চা বাগান দেখতে গিয়েছিলাম একবার। তবে আমার বড় ভাই, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়ার সুবাদে মাঠকর্ম করতে পুরো বাংলাদেশ ঘুড়ে বেরাচ্ছে। তিন বইয়ের পড়াশুনা আর বাস্তবের পৃথিবীকে এক করে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।

মিল-শব্দ খুজিঁ

শব্দ মিল-শব্দ
১. ঘাটখাট, পাট, ছাট, হাট, আট, কাঠ, মাঠ, পাঠ।
২. কেনাদেনা, চেনা, সেনা।
৩. রতনযতন, পতন।
৪. দোলাভোলা, তোলা, গোলা, ছোলা, ফোলা।
৫. তারকার, হার, ভার, পার, চার, ধার।
৬. আশাভাষা, বাসা, নাসা, পাশা, কাশা, হাসা।
৭. দেশবেশ, কেশ, শেষ, রেশ।
৮. ভয়ক্ষয়, জয়, হয়, নয়, লয়।
৯. হাজারবাজার, মাজার।
১০. তোরমোর, ভোর, চোর, ঘোর।
১১. করবধরব, ভরব, লড়ব, পড়ব।
১২. দেয়ালখেয়াল, শেয়াল।

কবিতা পড়ি ২

আমার বাড়ি

জসীমউদ্দিন 

বুঝে লিখি

‘আমার বাড়ি” কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।

“আমার বাড়ি’ কবিতায় প্রিয়জনকে কবির নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। বন্ধু যদি কবির বাড়িতে বেড়াতে যায় তাহলে বন্ধুকে নানা যত্নআত্তি ও আদর সমাদর করবেন। কবি তাকে শালিধানের চিড়ে, বিন্নিধানের কই, বাড়ির গাছের কবরি কলা এবং গামছা বাঁধা দই দিয়ে আপ্যায়ন করাবেন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবেন তারও বর্ণনা দিয়েছেন কবি। এছাড়াও কবি বন্ধুকে নিজ বাড়িরা পথও বাতলে দিয়েছেন। কোন পথে তার বাড়ি যেতে হবে, কীভাবে বাড়ি চিনতে হবে। কবিতায় প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসার মনোভাব ও অতিথি সৎকারে বাঙালিজীবনের সৌজনাও ফুটে উঠেছে।

জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি

আমার বাড়ি’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।

উত্তর: 

কবিতার কবি তার বন্ধুকে বাসায় দাওয়াত দিয়েছেন। বন্ধুর জন্য নানা আয়োজন করেছেন। তেমনি আমার বন্ধু মিফতা যে, আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু সে আমাকে একদিন তার জন্মদিনে দাওয়াত দিয়েছিলেন। আমি মিফতার বাসায় গিয়ে অনেক অবাক হয়েছিলাম, সে আমার জন্য অনেক আয়োজন করেছিলো। সকালের নাস্তায় ভাপা পিঠা, দুধ চিতই খেতে দিয়েছিলো। এরপর আমরা মিফতার | বাসায় তার করা ছোট্ট বাগানে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম। বলতেই হয় মিফতা অনেক রুচিশীল। এরপর দুপুরে তাঁদের পুকুরের রুই মাছ, বেগুনী, খাসির মাংস ও ডাল দিয়ে পোলাও খেয়েছিলাম। মিফতা আমাকে বেগুনী দিয়ে বলেছিলো এটি তার বাগানের। এরপর বিকালে আমরা তাদের বাসার সামনের ছোট মাঠে খেলাধুলা করি ও পুকুরে মাছ ধরি। এভাবেই তার নিমন্ত্রণ আমার দিনটি সুন্দর করে দিয়েছিলো।

কবিতা পড়ি ৩

👉 বুঝে পড়ি লিখতে শিখি – সমাধান | বাংলা – পঞ্চম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

বাঁচতে দাও

শামসুর রাহমান 

বুঝে লিখি

“বাঁচতে দাও’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।

‘বাঁচতে দাও” কবিতাটি প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ স্বাভাবিক বিকাশের শুভকামনার ভাব নিয়ে রচিত। শিশুর সুস্থ বিকাশে চারপাশের সুস্থ পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। পৃথিবীতে যদি ফুল, প্রজাপতি, পাখি, জোনাকপোকা, গাছের সবুজ, আকাশের মেঘ না থাকে তাহলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। তাই উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের সকল কিছুকে যারা যার অবস্থানে ভালো থাকতে দিতে হবে। কারণ তাদের অস্তিত্বের সঙ্গেই আমাদের অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে। এটি একটি শুভবোধের কবিতা।

জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি

উত্তর:

কবিতায় কবি প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে তাদের নিজেদের মত উদ্ভাসিত হতে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু আমরা অনেকেই আমাদের মত বাঁচতে পারছিনা। আমাদের বাসায় একজন মহিলা আসেন যিনি আমার আম্মুর বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে থাকেন। তাঁর সাথে একজন ছোট বাচ্চা আসে, আমার সমানই বয়স। তবে আমই শুনেছি সে স্কুল যেতে পারেনা। পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, তাঁর গায়ে প্লেক সময় জামা কাপড়ও থাকেনা। আমই মাঝে মাঝে তার সাথে গল্প করি তাকে পড়ালেখা শেখাতে চেষ্টা করি। আমার কিছু খেলনাও তাকে দিয়েছি। আন্টিকে বলেছি তাকে যেন আমাদের পাড়ার সান্ধ্যকালীন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। বাবাকে বলে তার স্কুলের বেতনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

কবিতার বৈশিষ্ট্য খুঁজি

ক্রমপ্রশ্ন হ্যাঁ না
পর পর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে?
হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কি পড়া যায়?
লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের?
লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়?
এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা?
এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা?
এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে?
এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে?
এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে?
১০এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা?
১১এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে?
১২এটি কি অভিনয় করা যায়?

👉 জেনে বুঝে আলোচনা করি – সমাধান | বাংলা – সপ্তম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী

কবিতা

ঝর্ণা 

– সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

ঝর্ণা! ঝর্ণা! সুন্দরী ঝর্ণা! 

তরলিত চন্দ্রিকা! চন্দন-বর্ণা! 

অঞ্চল সিঞ্চিত গৈরিকে স্বর্ণে, 

গিরি-মল্লিকা দোলে কুন্তলে কৰ্ণে, 

তনু ভরি’ যৌবন, তাপসী অপর্ণা! 

ঝর্ণা! 

পাষাণের স্নেহধারা! তুষারের বিন্দু! 

ডাকে তোরে চিত-লোল উতরোল সিন্ধু

২য় পরিচ্ছেদ 

গান

আমরা সবাই রাজা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

বুঝে লিখি 

আমরা সবাই রাজা’ গানটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।

‘আমরা সবাই রাজা’ গানটির মূলভাব স্বাধীনতা, শক্তি ও ঐক্য। গানটি অধিকার চেতনার। মানুষে মানুষে সমতা ও গণতান্ত্রিক চেতনার গানও এটি। দাসত্বের শৃংখল থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের স্বাধীন ও স্বচ্ছন্দভাবে বাঁচতে পারার মনোভাব নিয়ে গানটি রচিত। শিশুমনে দেশ ও দশের প্রতি দায়বদ্ধতা ও সকলকে সম্মান করার মূল্যবোধের ভাব জাগ্রত করার চেষ্টা রয়েছে এতে। এছাড়া সবাইকে সঙ্গে নিয়ে, সমান গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য শাসন করলে রাজা যে ব্যর্থ হন না তাও গানটিতে আভাসিত হয়েছে।

গানের বৈশিষ্ট্য খুঁজি

ক্রমপ্রশ্ন হ্যাঁ না
পর পর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে?
হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কি পড়া যায়?
লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের?
লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়?
এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা?
এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা?
এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে?
এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে?
এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে?
১০এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা?
১১এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে?
১২এটি কি অভিনয় করা যায়?

৩য় পরিচ্ছেদ 

গল্প

গল্প পড়ি ১

ম্যাজিক

মানিক ববন্দ্যোপাধ্যায় 

বলি ও লিখি

‘ম্যাজিক’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।

পা পিছলে টুটু সোনার চুড়ি ভেঙে দু টুকরো করে ফেলে। বাবাকে দেখিয়ে মা টুকরো দুটো বিছানার বালিশের তলার কোথাও গুঁজে রেখেছিলেন। সেখানেই গোল বাঁধে, যত্ন করে রাখতে গিয়ে পরে মা বিছানা-বালিশের কোথাও আর খুঁজে পান না। ব্যাপারটায় সবাই তাজ্জব বনে যায়, তাহলে চুড়ির টুকরোগুলো হাওয়া হয়ে গেল নাকি? কিন্তু বাবার মনে হলো বালিশের তলায় রাখতে গিয়ে মা আসলে বালিশের ওয়াড়ের ভেতরেই রেখে দিয়েছেন। এই চিন্তা মাথায় আসতেই বাবার হাসি পেল এবং মা কে চমক দিয়ে বললেন, এই ঘরে বসেই চুড়ি খুঁজে দিচ্ছি: বালিশের ওয়াড়ের ভেতরটা খুঁজে দেখ। অবশেষে সেখানেই সোনার চুড়ির টুকরো পাওয়া গেল। অর্থাৎ বালিশের তলা মনে করে টুটুর মা বালিশের ওয়াড়ের ভেতরে চুড়ির টুকরো দুটো চালান করে দিয়েছিলেন। অথচ সারাবেলা তন্নতন্ন করে খুঁজতে হলো সমস্ত ঘর এবং সন্দেহ করতে হলো কতো কিছুতে। তাড়াহুড়া কিংবা অসচেতনভাবে কোনো কাজ করতে গিয়ে আমরা অস্থানে অনেক কিছু রেখে দিই। পরে তা আমাদের খুঁজে পেতে বেগ হয়, অথচ ঠান্ডা মাথায় ভেবে নিলে তা সহজেই পাওয়া সম্ভব। টুটুর বাবার সহজ ভাবনাটা এই গল্পে ম্যাজিকের মতো কাজ করে চুড়িগুলো খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।

জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুজি

‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।

উত্তর: আমাদের জীবনে হরহামেশাই ম্যাজিক গল্পের মতো এমন মজার বিষয়গুলো ঘটে থাকে। কোনো একটা জিনিস আমরা অসচেতনভাবে এক স্থানে রেখে সহজভাবে চিন্তা না করে খুঁজি। কী যে অসহ্য লাগে তখন! আবার মাঝে মাঝে আমরা হাতে কোনো জিনিস রেখেই খুঁজতে থাকি। পরে যখন দেখি জিনিসটা হাতেই আছে, তখন নিজে নিজেই আমরা আমাদের বোকামির জন্য হাসি।

কয়েকদিন আগের ঘটনা। দাদু তাঁর চশমাটা তুলে মাথায় রেখেছিলেন। এরপর চশমাটা খুঁজতে খুঁজতে আমাকে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, দাদুভাই, আমার চশমাটা দেখেছ? বললাম, দাদু চশমাতো আপনার মাথাতেই আছে। দাদু লজ্জা পেয়ে বললেন, বুড়ো হয়েছি তো, কিছুই মনে থাকে না। শুধু দাদু না, আমরা সবাই এমন করে থাকি।

আমার বইয়ের মধ্যে টাকা রাখার অভ্যাস আছে। কিছুদিন আগে বাবা আমাকে পরীক্ষার ফি দিলে আমি তা মায়ের কাছে দিয়েছিলাম। পরের দিন সমস্ত বই খুঁজেও পাচ্ছিলাম না টাকাগুলো। এরপর ঠান্ডা মাথায় ভাবতে ভাবতে মনে পড়ে টাকাগুলো মায়ের কাছে রেখেছিলাম। আসলে, আমাদের এমন পরিস্থিতিতে পড়লে আগেই গোলমাল না পাকিয়ে শান্তভাবে চিন্তা করে রহস্য ভেদ করা উচিত।

গল্প পড়ি ২

পুতুল

হুমায়ুন আহমেদ 

বলি ও লিখি

‘পুতুল’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।

‘পুতুল’ গল্পটি শিশুমনের বিচিত্র ভাব নিয়ে রচিত হয়েছে। গল্পের প্রধান চরিত্র এগারো বছর বয়সী পুতুল। তার একাকিত্ব, বাবা-মার সম্পর্ক, নিজের কল্পনার জগৎ এবং প্রকৃতির সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু গল্পটি গড়ে উঠেছে গাছকাটাকে কেন্দ্র করে। শীতকালে হঠাৎ ঘরের কাছের বাগানের দুটি কদম গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হলে পুতুলের মন খারাপ হয়ে যায়। এগাছগুলো শৈশব থেকেই তার সঙ্গী, বন্ধুর মতো। এদের কেটে ফেলাকে কেন্দ্র করে পুতুলের মনে যে চিন্তা ও অনুভূতি তা নিয়ে বলার মত আশপাশে কেউ নেই। শেষমেশ সে তার বাবা, রহমান সাহেবকে প্রশ্ন করে বসে, ‘গাছগুলো কাটবে কেন?” কারণ গাছ কাটা পুতুলের পছন্দ নয়। বাবা গাছকাটার পক্ষে যুক্তি দিলেও পুতুলের মন বিষাদে ছেয়ে থাকে।

জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি

‘পুতুল’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।

উত্তর: আমাদের জীবনে বা চারপাশে এমন অনেক কিছুই ঘটে, যা ‘পুতুল’ নামক গল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত। নগরায়ণের এই যুগে জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে বন উজাড় করে নতুন নতুন বসতি স্থাপন করা হচ্ছে। ফলে শিশুরা সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া শহরের ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থাও নেই। আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও আমাদের বাড়ির সামনে কী সুন্দর একটা পুকুর ছিল ছেলেমেয়েরা দলবেঁধে পুকুরে সাঁতার কাটত। পুকুরের পাড়ে বাঁশঝাড় ছিল। পাশেই ছিল সুপারি বাগান। বাগানটা পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকত। বাড়ির পাশে বড়ো একটা খাল ছিল। খালে দৈনিক জোয়ার-ভাটার পানি আসত। কিন্তু এখন আর এসবের তেমন কিছুই নেই। চোখের সামনেই পুকুরটা ভরাট করে সেখানে খামার করা হলো। বাগদ কেটে চাচা ঘর তৈরি করলেন। বাগানটা যখন কাটা হলো, পাখিদের সে কী আর্তনাদা মনটা ব্যথায় হুহু করে কেঁদে উঠেছিল। নীড় হারিয়ে পাখিগুলো উড়ে চলে গেল। এখন আর আগের মতো পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মনটা ভরে যায় না।

গল্পের বৈশিষ্ট্য খুঁজি।

গল্পের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।

ক্রমপ্রশ্ন হ্যাঁ না
পর পর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে?
হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কি পড়া যায়?
লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের?
লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়?
এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা?
এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা?
এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে?
এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে?
এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে?
১০এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা?
১১এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে?
১২এটি কি অভিনয় করা যায়?

গল্প লিখি- 

নিচের ফাঁকা জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। সেখার সময়ে গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল রেখো। গল্পটিরও একটি নাম দাও।

নমুনা উত্তর:

মায়া

সৌরভ একদিন স্কুল থেকে আসার সময় পাখির ছানার কিচিরমিচির আওয়াজ শুনল। সে প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। একটু পর আবারও আওয়াজটা শুনল। রাতে ঝড় এসেছিল। আবারও ঝড়ের আশঙ্কায় দ্বিতীয় পিরিয়ডের সময় স্কুল ছুটি হয়ে। বাড়ি ফেরার তাড়া। তার কাছে মনে হলো আওয়াজটা কাছ থেকে আসছে। সে বাড়ির নিচে একটা ভাড়া বাসা দেখতে পেল। কৌতূহলী হয়ে সে পাখির বাচ্চাটা খুঁজতে লাগল।

পেয়েও গেল। এক সঙ্গে তিনটি পালিকের বাচ্চা। ঝড়ের কবলে পড়ে দুটি আগেই মারা গিয়েছে। বাকিটাও মারা যাওয়ার অবস্থায়। সৌরভের মায়া লেগে গেল। সে বাচ্চাটাকে হাতে নিয়ে দ্রুত বাড়ি চলে এলো। মাকে বলল, পাখির বাসাটা ভেঙে গিয়েছে। যত্ন না নিলে বাচ্চাটা মারা যাবে। সৌরভ ভয়ে ভয়ে ছিল। সে ভেবেছিল মা বাচ্চাটা দেখে খুব বকে দেবে। মা আসল ঘটনা বুঝতে পেরে কিছুই বলেনি। সৌরভ কাপড় পাল্টে দ্রুত দাদির ঘরে গেল। বাচ্চাটা শীতে কাঁপছিল। দাদির ঘরে মাটির হাড়িতে গরম ছাই থাকে। ওটার পাশে বাচ্চাটা রেখে দিল। সৌরভ যুঝতে পারল, বাচ্চাটা একটু আরাম পাচ্ছে। সে দ্রুত অল্প কয়টা ভাত খাওয়ালো আর রূপ দিয়ে পানি পান করাল। পর বাচ্চাটাকে গরম জায়গায় রেখে দিল। সে যাত্রায় বাচ্চাটা বেঁচে যায়। সৌরভ অনেক যত্নে বাচ্চাটা বড় করে তোলে। বাচ্চা দিন দিন বড় হতে থাকে। শরীর পশমে তরে যায়। মাঝে মাঝে একটু একটু উড়াল দিতে পারে। এখন আর ধরে খাইয়ে দিতে হয় না। খাবার সামনে রাখলে নিজে নিজেই খেতে পারে। এর কিছু দিন পর বাচ্চাটা উড়াল দিতে শেখে। নিজে নিজে খাবার খেতে শেখে। বাচ্চাটা এখন পূর্ণ শালিকে পরিণত হয়েছে। সৌরভ ভেবেছিল বড়ো হয়ে পাখিটা চলে যাবে। কিন্তু পাখিটা বড়ো হয়েও তাকে ছেড়ে যায়নি। সব সময় সৌরভের কাছেই থাকে।

৪র্থ পরিচ্ছেদ

আমাদের লোকশিল্প 

কামরুল হাসান

বলি ও লিখি

‘আমাদের লোকশিল্প’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।

নমুনা উত্তর: ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের মূলভাব

আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এ বর্ণনায় লোকশিল্পের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যায়। আমাদের নিত্য ব্যবহার্য অনেক জিনিসই কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা হয়। আগে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের প্রশ্ন তৈরি হতো তার অত্যন্ত উন্নতমানের ছিল। ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও ঢাকাই জামদানি শাড়ি সে স্থান অধিকার করেছে। বর্তমানে জামদানি শাড়ি ভুবন বিখ্যাত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশিকাথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ বিলুপ্ত প্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকে মেয়েরা নিজেদের মনের মতো করে কথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন। কাথার প্রতিটি সূচের কোডের মধ্যে লুকিয়ে আছে এককটি পরিবারের কাহিনি, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাথা। আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানাপ্রকার শৌখিনদ্রব্য তৈরি করে থাকেন। নানাপ্রকার পুতুল, মুর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, হাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে। খুলনার মানুষ ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প তা সংরক্ষণের দায়িত্ব সকলের। লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।

গল্পের বৈশিষ্ট্য খুঁজি।

গল্পের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।

ক্রমপ্রশ্ন হ্যাঁ না
পর পর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে?
হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কি পড়া যায়?
লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের?
লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়?
এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা?
এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা?
এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে?
এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে?
এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে?
১০এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা?
১১এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে?
১২এটি কি অভিনয় করা যায়?

প্রবন্ধ লিখি

নমুনা উত্তর :

ধান

ভূমিকা: বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। বাংলাদেশের কৃষিজ ফসলের মধ্যে প্রধান হচ্ছে ধান। ধান থেকে চাল হয় আর চাল থেকে ভাত। বাংলাদেশের মানুষ ভাত খেয়ে জীবনধারণ করে। বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর অনেক দেশে ভাতই প্রধান খাদ্য। বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান।

পরিচয়: বাংলাদেশের মাটি প্রায় সর্বত্রই ধান চাষের উপযোগী। জমি উত্তমরূপে চাষ করে ধান বোনা হয়। ধান গাছ এক রকম তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছ দেড় থেকে দুহাত উঁচু হলেই গাছের মাথায় শিষ বের হয়। শিষ থেকে জন্মে ধানের ছড়া। ধান পাকা পর্যন্ত গাছগুলো সবুজ থাকে। ধান পাকলে ধানের মতো গাছগুলোও সোনালি রং ধারণ করে।

প্রকারভেদ: আমাদের দেশে প্রধানত তিন রকম ধানের চাষ হয়। আউশ ধান বোনা হয় ফাল্গুন-চৈত্র মাসে; তা পাকে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে। আমন ধান বোনা হয় চৈত্র-বৈশাখ মাসে অথবা এ ধানের চারা করা হয় জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে। আমনের চারা রোপণ করা হয় ভাদ্র-আশ্বিন মাসে, আমন ধান পাকে হেমন্তকালে। বোরো ধান বোনা হয় পৌষ মাসে, পাকে চৈত্র-বৈশাখ মাসে। সম্প্রতি আমাদের দেশে ‘ইরি’ নামে এক রকম উচ্চ ফলনশীল ধান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ধান বছরের প্রায় সব সময় চাষ করা চলে। ‘ইরি’ সাধারণত নব্বই দিনের মধ্যে ফসল দেয়।

উৎপাদানস্থল: বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর অনেক দেশে ধান জন্মে। ভারত, চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশে প্রচুর ধান জন্মে।

ধানের জমি নির্বাচন: আউশ ধানের জন্য উঁচু জমি দরকার। নিচু জমিতে ভালো ফলে আমন ধান। জলাভূমিতে ভালো ফলন হয় বোরোর। ইরি ধানের চাষের জন্য প্রচুর পানি দিয়ে ধানগাছের গোড়া সব সময় ডুবিয়ে রাখতে হয়। আবার এক শ্রেণির ইরি বেশি পানি ছাড়াও চাষ করা চলে।

চাষের প্রণালি: ধান চাষ দু রকমের হয়। বৃষ্টিতে মাটি যখন নরম হয়, তখন উত্তমরূপে চাষ করে সেই জমিতে ধানের বীজ বপন করতে হয়। এ ধান বোনাধান নামে পরিচিত। রোপাধান জন্মানোর প্রণালি অন্য রকম। কোনো ভিজা জমি কর্দমাক্ত করে বীজতলা তৈরি করা হয়। সেই বীজতলায় বোনা হয় খুব ঘন করে ধানের বীজ। চারাগুলো বড় হয়ে উঠলে সেগুলো তুলে নিয়ে রোপণ করতে হয় উত্তমরূপে কর্ষিত নিচু জমিতে। আমন, বোরো আর ইরি ধান বোনাও চলে; আবার অবস্থা বিশেষে রোপণও করতে হয়।

ধান মাড়াই: ধান পাকলে চাষিরা ধান গাছ কেটে আঁটি বেঁধে সেই ধান বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর সেই ধানের গাছ স্বল্পপরিসর জায়গায় ছড়িয়ে গরু বা মহিষ দিয়ে মাড়ায়। দরিদ্র চাষিরা পশুর অভাবে নিজেরাই আছড়ে আছড়ে ধানগুলো গাছ থেকে আলাদা করে নেয়। আজকাল কোনো কোনো চাষি মাড়াই করার যন্ত্রও ব্যবহার করে।

উপসংহার: স্বয়ংসম্পূর্ণতার জন্য ধানের ফলন বাড়ানো দরকার। তাহলে আমাদের আর বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে না। জমির উর্বরতা সার দিয়ে বাড়ানো যায়। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষ করলে ধানের উৎপাদন বাড়বে। এদিকে আমাদের যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।

৫ম পরিচ্ছেদ

নাটক

বলি ও লিখি :

নমুনা উত্তর: “সুখী মানুষ’ নাটকের মূলভাব

‘সুখী মানুষ’ নাটকের কাহিনিতে মানুষকে ঠকিয়ে তাদের মনে কষ্ট দিয়ে ধনী হওয়া মোড়লের জীবনে শান্তি নেই। চিকিৎসক বলেছেন, কোনো সুখী মানুষের জামা গায়ে দিলে মোড়লের অসুস্থতা কেটে যাবে। কিন্তু গ্রামের পর গ্রাম খুঁজেও একজন সুখী মানুষ পাওয়া গেল না। শেষে একজনকে পাওয়া গেল যে নিজের শ্রমে উপার্জিত আয়ে কোনোভাবে জীবন নির্বাহ করে সুখে দিন কাটাচ্ছে। তার কোনো সম্পদ নেই, ফলে চোরের ভয় নেই। সুতরাং শান্তিতে ঘুমোনোর ব্যাপারে তার কোনো দুশ্চিন্তাও নেই। শেষপর্যন্ত সুখী মানুষ একজন পাওয়া গেলেও দেখা গেল তার কোনো জামা নাই। সুতরাং মোড়লের সমস্যার সমাধান হলো না। নাটকের কাহিনিতে লেখকের বক্তব্য খুব স্পষ্ট যে অন্যের সাথে অন্যায় করলে যতই সম্পদই থাকুক না কেন তা নিজেকেও এক পর্যায়ে কষ্ট পেতে হয়। আর সুখ একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। একজনের অনেক সম্পদ থেকেও অসুখী হতে পারে। আবার আরেকজনের কিছু না থাকলেও সে সুখী থাকতে পারে।

নাটকের বৈশিষ্ট্য খুঁজি।

ক্রমপ্রশ্ন হ্যাঁ না
পর পর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে?
হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কি পড়া যায়?
লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের?
লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়?
এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা?
এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা?
এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে?
এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে?
এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে?
১০এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা?
১১এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে?
১২এটি কি অভিনয় করা যায়?

৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ 

সাহিত্যের নানা রূপ

নমুনা উত্তর: সাহিত্যের নানা রূপের বৈশিষ্ট্য 

ক্রমবৈশিষ্ট্য কবিতেগানগল্পপ্রবন্ধনাটক
মিল শব্দ
তাল
নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের লাইন
সুর
পদ্য-ভাষা
গদ্য-ভাষা
কাহিনী 
চরিত্র 
বিষয় 
১০অনুচ্ছেদ 
১১সংলাপ 
১২অভিনয় 

সাহিত্যের রূপ বুঝি

উপরের ছকটি পূরণের মাধ্যমে কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধ, নাটক এগুলোর যেসব বৈশিষ্ট্য পেয়েছ, তার ওপর ভিত্তি করে নিচে এগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লেখো।

নমুনা উত্তর :

কবিতা: মনের ভাব সুন্দর ভাষায় ছোটো ছোটো বাক্যে যখন প্রকাশিত হয়, তখন তাকে কবিতা বলে। কবিতায় সাধারণত পর পর দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকে। কবিতা তালে তালে পড়া যায়। কবিতার লাইনগুলো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের হয়। কবিতার ভাষা গদ্যের ভাষার চেয়ে আলাদা। অনেক সময়ে শব্দের চেহারায়ও কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে।

গান: কোনো একটা ভাব বা বিষয় নিয়ে গান রচিত হয়। কবিতা আবৃত্তি করা হয়, গান গাওয়া হয়। কবিতার মতো গানও তাল দিয়ে পড়া যায়। গানেও এক লাইনের শেষ শব্দের সঙ্গে পরের লাইনের শেষ শব্দে মিল থাকে। গানে কোনো একটা মিল বারেবারে ফিরে আসে। গানের সুর ঠিক রাখার জন্য হারমোনিয়াম, পিয়ানো ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। গানের তাল ঠিক রাখার জন্য তবলা, ঢোল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়

গল্প: গল্প এক ধরনের গদ্য রচনা, যেখানে কাহিনী ও চরিত্র থাকে। গল্প সাধারণত আয়তনে ছোট হয়। গল্পের ঘটনা আমাদের জীবন থেকে নেওয়া হয়। গল্পের চরিত্র মানুষ হতে পারে, আবার জীবজন্তু বা অন্য কিছু হতে পারে। সব চরিত্রের মধ্যে আবার একটা বা দুটি চরিত্রের গুরুত্ব বেশি থাকে।

প্রবন্ধ: গদ্যভাষায় কোনো বিষয়ের সুবিন্যস্ত আলোচনাকে প্রবন্ধ বলে। প্রবন্ধে মূলত কোনো বিষয় তুলে ধরে তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু ও লেখকের চিন্তা মতামতের মধ্যে একটি ধারাবাহিক কখন দেখানো হয়। প্রবন্ধ অনেকগুলো অনুচ্ছেদে বিভক্ত থাকে। অনুচ্ছেদগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত থাকে। কী বিষয়ে আলোচনা হবে শুরুর অনুচ্ছেদে তার ইঙ্গিত থাকে। শেষ অনুচ্ছেদে লেখকের মতামত ও সিদ্ধান্ত থাকে।

নাটক: অভিনয়ের উপযোগী করে দেখা সংলাপ-নির্ভর রচনাকে নাটক বলে। নাটকে একজন অন্যজনের সাথে যেসব কথা বলে সেগুলোকে সংলাপ বলে। সংলাপ যাদের মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়, তাদের বলে চরিত্র। সংলাপের মাধ্যমে নাটকের কাহিনি এগিয়ে যায়। নাটকের বিভিন্ন ভাগ থাকে, এগুলোকে বলে দৃশ্য।

দেয়াল-পত্রিকা বানাই

আগের পরিচ্ছেদগুলোতে তোমরা গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতে শিখেছিলে। তখন তোমরা যেসব গল্প-কবিতা- প্রবন্ধ বানিয়ে বানিয়ে লিখেছিলে, সেগুলো নিয়ে দেয়াল-পত্রিকা তৈরি করো। এ কাজের জন্য শিক্ষক তোমাদের কয়েকটি দলে ভাগ করে দেবেন। প্রতি দল থেকে একটি করে দেয়াল-পত্রিকা তৈরি হবে।

নমুনা উত্তর :

দেয়াল-পত্রিকা

১।

  বিজয়
জুয়েল
রোল নম্বর: ৬ শ্রেণি ষষ্ঠ

মুক্তি আসে 
মুক্তি আসে, 
বিজয় দিনে 
পতাকা ওড়ে।
ঘরের ছেলে 
ঘরে ফেরে, 
মুক্তি নিয়ে 
বিজয় দিনে।

২।

  চিঠি
জুয়েল, রোল নম্বর: ৬ শ্রেণি ষষ্ঠ
রুবা,
আমাকে ক্ষমা করো। আসার আগে তোমাকে ও শান্তকে দেখে আসতে পারলাম না। বাবাকে সব বলে এসেছি। তিনি তোমাদের নিমতলি দিয়ে আসবেন। শান্তকে নিয়ে সাবধানে থেকো। আমার জন্য ভেবো না। শান্তর জন্য স্বাধীন দেশ নিয়ে বাড়ি ফিরব।
ইতি
হামিদ

৩।

  মুক্তিযোদ্ধা বাবা
জুয়েল, রোল নম্বর: ৬ শ্রেণি ষষ্ঠ
আমার বাবা আনিস আহম্মেদ ২ নম্বর সেক্টরের একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি অবসর সময়ে আমাদের যুদ্ধের দিনের সেই সব গল্প শোনান। তার এবং তাঁর সাথি মুক্তিযোদ্ধারা অনেক সাহসের সাথে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেন। আমরা তাঁর কাছে নেই সব গল্প শুনে রোমাঞ্চিত হই। আমি আমার বাবার জন্য গর্বিত।

৪। 

  আমাদের গর্ব
জুয়েল,
দিনলিপি
রোল নম্বর: ৬ শ্রেণি ষষ্ঠ
মাতৃভাষা বাংলা আমাদের গর্ব। আমি ভাষা- শহিদদের মন থেকে শ্রদ্ধা করি। তাঁদের জন্যই আজ আমরা মন খুলে কথা বলতে পারি। আজ ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে খালি পায়ে বাবার সাথে শহিদ মিনারে গিয়েছি। ফুল দিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের গর্ব।