এই পোস্টে আমরা জানব ষষ্ঠ শ্রেনীর, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয় এর ২য় অধ্যায়, আমার কৈশোরের যত্ন সম্পর্কে।
কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে আমার ধারণা
প্রশ্ন: বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে আমি কী জানি?
উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালের সময় শরীর ও মনে অনেক পরিবর্তন আসে। কারো এ পরিবর্তন আগে শুরু হয় আবার কারোও বা পরে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের শরীরের এসব পরিবর্তন হরমোন নিঃসরণের কারণে হয়।
প্রশ্ন: আমার শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করছি?
উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন গুলো নিম্নরূপ:
১। উচ্চতা ওজন বৃদ্ধি পায়।
২। পেশি দৃঢ় হয়, বুক ও কাঁধ চওড়া হয়।
৩। দাড়ি, গোঁফ গজায়।
৪। গলায় স্বর ভাঙ্গে ও স্বর ভারী হয়।
৫। মুখমণ্ডলে ব্রণ হতে পারে।
প্রশ্ন: আমার মনে নতুন কী ভাবনা আসে?
উত্তরঃ ১। অজনা বিষয়ে জানার কৌতূহল বাড়ে।
২। শারীরিক পরিবর্তনের ফলে চলাফেরায় দ্বিধা-দ্বন্ধ ও লজ্জা কাজ করে।
৩। স্বাধীনভাবে চলতে ইচ্ছা করে।
৪। নিকটজনের মনোযোগ, যত্ন ও ভালোবাসা পাওয়ার ইচ্ছা তীব্র হয়।
প্রশ্ন: এসব পরিবর্তনের কারণে আমার দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাস বা আচরণের কী পরিবর্তন হয়েছে?
উত্তরঃ ১। প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো আচরণ করে।
২। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নিজেকে একজন আলাদা ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা।
৩। প্রত্যেক বিষয়ে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা।
৪। দুঃসাহসিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
👉 সুস্থ থাকি আনন্দে থাকি নিরাপদ থাকি – সমাধান | স্বাস্থ্য সুরক্ষা – ১ম অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী
কেস : ১
দীপার সমস্যাটি তো জানলাম। এবার নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিই।
(ক) দীপা বাড়িতে অবস্থান করার কারণ কী?
উত্তর: দীপা বাড়িতে অবস্থান করার কারণ বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন। এই সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সংগঠিত হয়।
(খ) ঐ সময় বাড়িতে থাকতে দীপার কেমন লাগত?
উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালে বাড়িতে থাকা দীপার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। নিজেকে তখন একা এবং সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। যার দরুন মানসিক দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়া ও পড়ালেখায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
(গ) দীপার মনের ভিতর কী চলছিল?
উত্তর: শারীরিক, মানসিক, আচরণিক ও পরিবর্তনের সাথে পরিচয় না থাকায় নিজেকে আতংকিত ও বিপর্যন্ত মনে হয়। তাছাড়া শারীরিক পরিবর্তনের কারণে কুণ্ঠিত ও দ্বিধাগ্রস্থ থাকে। পড়াশোনা ও নিজস্ব কাজ বিঘ্নিত হওয়ায় মানসিক চাপের সম্মুখীন হয়। যার ফলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়।
(ঘ) কী করলে দীপা নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে না বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: দীপার উচিত বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন নিয়ে মা-বাবা, বড়-ভাই বোন বা নির্ভরযোগ্য অভিভাবকের সাথে আলোচনা করে এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া। ফলে সংকোচ কেটে যাবে এবং একা থাকার প্রবণতা কমে যাবে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়ের শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে আবেগিক পরিবর্তন ও ঘটে। এ বয়সে যে মানসিক পরিবর্তন ঘটে তার সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য তার সাথে মা বাবা ও অভিভাবকদের বন্ধুসুলভ ও সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে। দীপাকে মানসিক দিকসহ অন্য সব ব্যাপারে সহযোগিতা প্রদান ও সাহস যোগাতে হবে। তাছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য দীপাকে সচেষ্ট থাকতে হবে। তার প্রথম কাজ হবে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলোর সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা। ভালো গল্পের বই পড়লে, সাথীদের সাথে খেলাধুলা করলে মনে প্রফুল্লতা আসবে এবং মানসিক চাপ সামলানো সম্ভব হবে।
👉 খেলাধুলায় গড়ি সুস্থ ও সুন্দর জীবন – সমাধান | স্বাস্থ্য সুরক্ষা – দ্বিতীয় অধ্যায় | সপ্তম শ্রেনী
কেস – ২
(ক) কেন সবাই রানাকে এতো পছন্দ করে?
উত্তর: নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবর্তিতা, সততা, বন্ধুসুলভ, স্নেহশীল ও শ্রদ্ধাশীল আচরণের জন্য সবাই রানাকে এতো পছন্দ করে।
(খ) কিছু দিন ধরে রানার মাঝে কী কী পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে?
উত্তরঃ ১। স্বাধীনভাবে চলতে ইচ্ছা করা।
২। চলাফেরায় বিধাযুদ্ধ ও লজ্জা কাজ করা।
৩। মেজাজ খিটখিটে হওয়া।
৪। অস্থিরতা অনুভব করা।
(গ) রানার কিছু একটা বলতে সংকোচ বোধ করার কারণ কী হতে পারে?
উত্তর: রানার কিছু একটা বলতে সংকোচ বোধ করার কারণ বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন। এই সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সংগঠিত হয়।
(ঘ) কী করলে রানা নিজের অবস্থা নিয়ে শংঙ্কিত হবে না বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: রানার উচিত বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন নিয়ে মা-বাবা, বড় ভাই বোন বা নির্ভরযোগ্য অভিভাবকের সাথে আলোচনা করে এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া। ফলে সংকোচ কেটে যাবে এবং একা থাকার প্রবণতা কমে যাবে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়ের শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে আবেগিক পরিবর্তন ও ঘটে। এ বয়সে যে মানসিক পরিবর্তন ঘটে তার সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য তার সাথে মা বাবা ও অভিভাবকদের বন্ধুসুলভ ও সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে। রানাকে মানসিক দিকসহ অন্য সব ব্যাপারে সহযোগিতা প্রদান ও সাহস যোগাতে হবে। তাছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য রানাকে সচেষ্ট থাকতে হবে। তার প্রথম কাজ হবে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলোর সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা। ভালো গল্পের বই পড়লে, সাথীদের সাথে খেলাধুলা করলে মনে প্রফুল্লতা আসবে এবং মানসিক চাপ সামলানো সম্ভব হবে।
👉 চলো বন্ধু হই – সমাধান | স্বাস্থ্য সুরক্ষা – ৩য় অধ্যায় | ষষ্ঠ শ্রেণী
কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে আমার ধারণা: ফিরে দেখি
প্রশ্ন: বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে আমি কী জানি?
উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালের সময় শরীর ও মনে অনেক পরিবর্তন আসে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল আগে শুরু হয়। মেয়েদের আট থেকে তেরো বছর বয়সের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয়। ছেলেদের দশ থেকে পনেরো বছর বয়েছে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয়। কারো এ পরিবর্তন আগে শুরু হয় আবার কারোও বা পরে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের শরীরের এসব পরিবর্তন হরমোন নিঃসরণের কারণে হয়।
প্রশ্ন: আমার শরীরের পরিবর্তন সম্পর্কে এখন যা জানি?
উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক পরিবর্তনঃ
কিশোরদের ক্ষেত্রে যে সব পরিবর্তন লক্ষ করা যায় তা হচ্ছে-
১। উচ্চতা ও ওজন বাড়ে।
২। শরীরে দৃঢ়তা আসে, বুক ও কাঁধ চওড়া হয়।
৩। এ বয়সে দাড়ি গোঁফ উঠে।
৪। স্বরভঙ্গ হয় ও গলার স্বর মোটা হয়।
কিশোরীদের ক্ষেত্রে যে সব পরিবর্তন লক্ষ করা যায় তা হচ্ছে-
১। উচ্চতা ও ওজন বাড়ে।
২। শরীর ভারী হয়।
৩। শরীরের বিভিন্ন হাড় মোটা ও দৃঢ় হয়।
প্রশ্ন: আমার মনের নতুন ভাবনাগুলো সম্পর্কে এখন যা জানি?
উত্তরঃ ১। অজনা বিষয়ে জানার কৌতূহল বাড়ে।
২। শারীরিক পরিবর্তনের ফলে চলাফেরায় দ্বিধা-দ্বন্ধ ও লজ্জা কাজ করে।
৩। স্বাধীনভাবে চলতে ইচ্ছা করে।
৪। নিকটজনের মনোযোগ, যত্ন ও ভালোবাসা পাওয়ার ইচ্ছা তীব্র হয়।
৫। আবেগ দ্বারা পরিচালিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
৬। ছেলে ও মেয়েদের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে।
৭। মানসিক পরিপক্ষতার পর্যায় শুরু হয়।
৮। প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো আচরণ করে।
৯। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নিজেকে একজন আলাদা ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা।
১০। প্রত্যেক বিষয়ে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা।
১১। দুঃসাহসিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
কৈশোরের যত্নে আমার পরিকল্পনা
প্রিয় বন্ধু,
কেমন আছো? আশা করি ভালো আছো। তুমি আমার কাছে জানতে চেয়েছিলে “কৈশোরের যত্নে পরিকল্পনা কিরকম হওয়া উচিত” আমাদের দেশে সাধারণত দশ থেকে উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে বা মেয়েকে কিশোর বা কিশোরী হিসেবে অভিহিত করা হয়। আমরা এখন কৈশোরে পদার্পণ করছি। একজন মানুষের জন্য এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নানা রকমের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যাগুলোর সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিজেদেরকেই সচেষ্ট থাকতে হবে। নিম্নলিখিত বিষয়গুলো একজন কিশোর বা কিশোরীর মেনে চলা আবশ্যক:
১। সুষম খাবার গ্রহণ করা
২। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা
৩। নিয়মিত গোসল করা
৪। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
৫। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।
৬। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
৯। বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করা
১০। ঘুরতে যাওয়া।
১১। বিভিন্ন ধরনের গল্প, উপন্যাসের বই পড়া। সুতরাং আমরাও উল্লিখিত নিয়মগুলো মেনে চলার মাধ্যমে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলোর সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করবো। আজ এখানেই রাখছি, অন্যকোন দিন কথা হবে।
তোমার প্রিয় বন্ধু
সুমন
(বাকি ছকগুলো শিক্ষক পূরন করবেন)
Khub valo..Asha kori aro valo hobe..🥰🥰
Thank you, please stay with us. You can share the website to help others as well.